Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Akanksha Sharma

‘আমার কোনও আফসোস নেই’, আকাঙ্ক্ষা খুনে যাবজ্জীবনের সাজা শুনে নির্লিপ্ত উদয়ন

২০১৭ সালে ভোপালের সাকেত নগরে প্রেমিকের বাড়িতে একটি সিমেন্টের বেদির নীচে আকাঙ্ক্ষার দেহ উদ্ধার হয়।

বাঁ দিকে, আকাঙ্ক্ষা শর্মা। ডান দিকে, উদয়ন দাস। —ফাইল চিত্র

বাঁ দিকে, আকাঙ্ক্ষা শর্মা। ডান দিকে, উদয়ন দাস। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২০ ১৫:০২
Share: Save:

ভোপালের আকাঙ্ক্ষা শর্মা খুনে আগেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল প্রেমিক উদয়ন দাস। আজ, বুধবার সেই খুনের ঘটনায় উদয়নের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল বাঁকুড়ার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। আদালতের রায় শুনে উদয়ন অবশ্য নির্লিপ্ত। পুলিশ ভ্যান করে যাওয়ার সময় বলে, “আমার কোনও আফসোস নেই। এ বার হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে যাব।”

২০১৭ সালে বাঁকুড়ার বাসিন্দা আকাঙ্ক্ষা শর্মা (২৮)-এর দেহ পাওয়া যায় ভোপালের সাকেত নগরে প্রেমিকের বাড়িতে একটি সিমেন্টের বেদির নীচে। এই ঘটনায় পরে গ্রেফতার হয় উয়দন দাস। খুন, অপহরণ, দেহ ও তথ্য লোপাটের মামলার দোষী সাব্যস্ত হয় সে। সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, খুনের ঘটনায় উদয়ন দাসকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন বিচারক। সেই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও ২ বছরের জেল। তথ্য লোপাটের ঘটনায় ২ বছরের জেল। ২ হাজার টাকা জরিমানাও ধার্য করা হয়েছে। উদয়নের আইনজীবী জানান, তাঁরা উচ্চ আদালতে যাবেন। আকাঙ্ক্ষার পরিবার জানিয়েছে, তাঁরা ফাঁসির সাজা চাইছিলেন। কিন্তু আদালতের রায়কে সম্মান জানাতে হবে।

কী ঘটেছিল?

বাঁকুড়ার রবীন্দ্রসরণির বাসিন্দা আকাঙ্ক্ষা শর্মা। সোশ্যাল মিডিয়ায় উদয়নের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। ২০১৬ সালের ২৩ জুন আমেরিকায় ইউনিসেফের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরোন আকাঙ্ক্ষা। সেই ভুয়ো নিয়োগপত্রটি ছিল প্রেমিক উদয়নের দেওয়া। কিন্তু তা টের পাননি আকাঙ্ক্ষা।

আরও পড়ুন: ‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে ঢাল বানানোর চেষ্টা হচ্ছে’, লকডাউন নিয়ে কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা সুপ্রিম কোর্টের

ভোপালের সাকেতনগরে উদয়নের বাড়িতে পৌঁছনোর পর তাঁকে ১৫ জুলাই শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। তাঁর দেহ একটি টিনের বাক্সে ভরে সিমেন্টের বেদি করে গেঁথে দেয় উদয়ন।

বিভ্রান্ত করার জন্য আকাঙ্ক্ষার ফোন থেকেই, তাঁর বাড়ির সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠাতে থাকে উদয়ন। আমেরিকায় পৌঁছে গিয়েছে বলেও মেসেজ পাঠিয়ে দেয় সে। এ ভাবেই আকাঙ্ক্ষার পরিবারকে বিভ্রান্ত করতে থাকে উদয়ন।

পরিবার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে, শেষ পর্যন্ত ৫ ডিসেম্বর বাঁকুড়া সদর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে। মোবাইল লোকেশন থেকে জানা যায়, ভোপালের সাকেতনগর থেকে মেসেজ করা হচ্ছে। ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি উদয়নের বিরুদ্ধে আকাঙ্ক্ষাকে অপহরণের মামলা করেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: ‘আমি তো আগেই বলেছিলাম’, আরবিআই-এর রিপোর্ট তুলে কেন্দ্রকে নিশানা রাহুলের

ওই বছরই ১ ফেব্রুয়ারি ভোপালে গিয়ে বাঁকুড়া পুলিশ উদয়নকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার হয় আকাঙ্ক্ষার দেহাবশেষ। তার পর জেরায় পুলিশ জানতে পারে, উদয়ন তার বাবা বীরেন্দ্রকুমার দাস ও মা ইন্দ্রাণী দাসকেও ২০১০ সালে খুন করে ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরের বাড়ির বাগানে পুঁতে দিয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁদের কঙ্কাল উদ্ধার হয়। আকঙ্ক্ষা খুনের ঘটনায় তিন মাসের মধ্যে চার্জশিট দেয় বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Akanksha Sharma Murder Crime Life term
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE