Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

ছাড়ল মেয়ের জ্বর, ফিরলেন না বাবা

বনগাঁর শিমুলতলা খ্রিস্টানপাড়ার বাসিন্দা সত্য মণ্ডলকে (৪১) সোমবার বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল থেকে কলকাতার আরজিকরে পাঠানো হয়। পথেই তিনি মারা যান।

বিয়োগ: দেগঙ্গার বাসিন্দা ডেজি দে-র মৃত্যু হয়েছে জ্বরে ভুগে। শোকার্ত মেয়ে। নিজস্ব চিত্র।

বিয়োগ: দেগঙ্গার বাসিন্দা ডেজি দে-র মৃত্যু হয়েছে জ্বরে ভুগে। শোকার্ত মেয়ে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
বনগাঁ শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২১
Share: Save:

মেয়ে ফিরল, বাবা ফিরল না।

দু’জনেরই একই দিনে জ্বর এসেছিল। একই সঙ্গে ভর্তি হন হাসপাতালে। মঙ্গলবার মেয়ে ফিরেছেন সুস্থ অবস্থায়। আর ফিরেছে বাবার দেহ। বনগাঁ শহরের ট বাজারের বাসিন্দা স্বপনকুমার কুণ্ডু (৫৩) ও তাঁর মেয়ে মিঠু পালের জ্বর এসেছিল বৃহস্পতিবার। দু’জনকেই ভর্তি করা হয় বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে। স্বপনবাবুকে সোমবার রাতে পাঠানো হয় রাজাবাজারের একটি নার্সিংহোমে। মঙ্গলবার সকালে মারা যান তিনি।

পরিবার সূত্রের খবর, সোমবার চিকিৎসকেরা স্বপনবাবুকে ‘রেফার’ করলেও এনআরএসে-র আইসিসিইউতে জায়গা মেলেনি। তিনটি নার্সিংহোম, একটি সরকারি হাসপাতালে ঘুরে রাজাবাজারের ওই নার্সিংহোমে ঠাঁই হয় স্বপনবাবুর। তাঁর ভাই কানাইবাবু বলেন, ‘‘দাদার মৃত্যুর শংসাপত্রে মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর লেখা হয়েছে। চিকিৎসককে আমরা বলি, দাদার তো ডেঙ্গি ছিল। চিকিৎসক লিখতে রাজি হননি।’’ মঙ্গলবার দুপুরে স্বপনবাবুর মেয়ে মিঠু হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। বাবার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন হাবরার বাসিন্দা ওই তরুণী। জানালেন, দাদুর মৃত্যুর পরে মাসখানেক আগে বাপের বাড়িতে এসেছিলেন। সেখানেই জ্বরে পড়েন।

বনগাঁর শিমুলতলা খ্রিস্টানপাড়ার বাসিন্দা সত্য মণ্ডলকে (৪১) সোমবার বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল থেকে কলকাতার আরজিকরে পাঠানো হয়। পথেই তিনি মারা যান। গাইঘাটার রামনগর পঞ্চায়েতের সুবিদপুরের বাসিন্দা গোপাল সরকারও (৪১) রবিবার সকালে মারা গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন। রবিবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মারা যান।

মঙ্গলবার সকালে জ্বরে ভুগে মারা গিয়েছে দত্তপুকুরের কদম্বগাছির বামুনমুড়ার বাসিন্দা বছর সাতেকের আশিকা পারভিনও। আরজিকরে চিকিৎসা চলছিল তার। দেগঙ্গা ১ পঞ্চায়েতের বিবেকানন্দপল্লির বাসিন্দা ডেজি দে-র (৪০) রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল। বৃহস্পতিবার বারাসতের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সোমবার ভিআইপি রোড-সংলগ্ন একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে রাতে সেখানেই মারা যান। মৃত্যুর কারণ ‘ডেঙ্গি’ লেখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার।

কামারহাটি পুর এলাকার বংশী হাজরাও মঙ্গলবার সকালে সাগরদত্ত হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। মৃত্যুর কারণ লেখা হয়েছে ‘শক উইথ ডেঙ্গি এনএস-১’। উত্তর ২৪ পরগনায় জ্বর-পরিস্থিতি সামলানো যে মুশকিল হচ্ছে, তা আঁচ করে সোমবার স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে নিয়ে দেগঙ্গার গ্রামে ঘোরেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। চিকিৎসকের অভাব, রক্তের রিপোর্ট দেরিতে আসায় ক্ষোভ জানান মানুষ।

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Bongaon ডেঙ্গি ICCU
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE