—ফাইল চিত্র।
মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারের পর রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলার তদন্তে ক্রমশ জাল বিছোচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। তদন্তে উঠে আসা মেরুন রঙের ডায়েরি ঘিরে রহস্য ঘনিয়েছে। সেই ডায়েরিতে লেখা রয়েছে ‘বালুদা’। জ্যোতিপ্রিয়ের ডাকনাম বালু। তিনি এই নামেই বেশি পরিচিত। সেই ডায়েরির পাশাপাশি আরও একটি ডায়েরি হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেই সঙ্গে ইডির আধিকারিকদের হাতে এসেছে একটি রেজিস্টারও। রেশন বণ্টন মামলায় নিচু স্তরে কী ভাবে লেনদেন হয়েছে, সেই তথ্য যেমন রয়েছে, পাশাপাশি রয়েছে কেনাবেচার হিসাব। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রভাবশালী যোগও। এই জোড়া ডায়েরি এবং রেজিস্টারই এখন এই দুর্নীতির তদন্তে ‘হাতিয়ার’ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
ইডি সূত্রে খবর, গত ১১ অক্টোবর এই দুর্নীতির তদন্তে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছিল। সেই দিন এক ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। ওই অভিযানে একটি ডায়েরি উদ্ধার করা হয়। সেই ডায়েরিতে পরতে পরতে দুর্নীতির যোগ রয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। ইডির দাবি, ওই ব্যক্তি বেআইনি ভাবে রেশন কেনাবেচায় যুক্ত ছিলেন। তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। ডায়েরিতে বেআইনি ভাবে রেশন কেনাবেচার হিসাব রয়েছে। সরকারি নথিভুক্ত রেশন ডিলারদের থেকে বিভিন্ন সামগ্রী কিনতেন ওই ব্যক্তি। কার থেকে কিনেছেন এবং লেনদেনের হিসাব ওই ডায়েরিতে নথিভুক্ত করা রয়েছে বলে দাবি ইডির। রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় এই ডায়েরিও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে পারে বলে ধারণা তদন্তকারীদের। তবে ওই ব্যক্তি কে, তদন্তের স্বার্থে তা এখনও স্পষ্ট করেনি ইডি।
১১ অক্টোবরের তল্লাশি চলাকালীন একটি রেজিস্টারও হাতে পেয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। কাদের কত টাকা দেওয়া হয়েছে, কারা বেআইনি কাজে যুক্ত— এই সংক্রান্ত তথ্য ওই রেজিস্টারে উল্লেখ করা রয়েছে বলে দাবি। গত ২৬ অক্টোবর সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তল্লাশি অভিযানের পর গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে। তার পরই প্রকাশ্যে আসে মেরুন ডায়েরির কথা। ২৬ তারিখই হাওড়ায় জ্যোতিপ্রিয়-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অভিজিৎ দাসের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়েছিল। অভিজিতের বাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয় রহস্যে মোড়া ওই মেরুন ডায়েরি। ইডির দাবি, ওই ডায়েরির উপরে ‘বালুদা’ লেখা রয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আরও দাবি, ডায়েরিতে বিভিন্ন তারিখের পাশে প্রচুর টাকা লেনদেনের তথ্য রয়েছে। সেই ডায়েরিতে কাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে এবং কাদের টাকা দেওয়া রয়েছে, তার উল্লেখও রয়েছে। ওই ডায়েরিতে পুরনো লেনদেনের হিসাব রয়েছে বলে দাবি। কোটি কোটি টাকার লেনদেনের হিসাব রয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, জ্যোতিপ্রিয়কে ঘিরেই এই লেনদেন হয়েছে। এই ডায়েরির সূত্র ধরে তদন্তের গভীরে যেতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
রেশন বণ্টন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি। গত ১৪ অক্টোবর ওই দুর্নীতিতে জড়িত অভিযোগে ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতারের পরে উঠে আসে জ্যোতিপ্রিয়ের নাম। বাকিবুর জ্যোতিপ্রিয়-ঘনিষ্ঠ বলে দাবি। তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, হেফাজতে নিয়ে বাকিবুরকে জেরা করতেই আরও তথ্য হাতে পায় ইডি। যার ভিত্তিতে জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়।
ইডি সূত্রে খবর, রেশন বণ্টন দুর্নীতির তদন্তের কিনারায় এই জোড়া ডায়েরি এবং রেজিস্টার হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। পাশাপাশি, জ্যোতিপ্রিয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও তথ্যপ্রমাণ হিসাবে ‘বড়’ ভূমিকা নিতে পারে এই জোড়া ডায়েরি এবং রেজিস্টার। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জ্যোতিপ্রিয়কে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেই থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জ্যোতিপ্রিয় সুস্থ হয়ে ফিরলেই তাঁকে জেরা করতে পারেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy