টিউটোপিয়া - বাংলায় শিক্ষার আধুনিক অ্যাপ
কোভিড পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনা নিয়ে সবাই দুশ্চিন্তা করছেন। কিন্তু, একটু তলিয়ে দেখুন, ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা নিয়ে সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। ভালবেসে, নিজের আগ্রহে পড়াশুনা করে কজন ছাত্রছাত্রী? চারপাশে তেমন ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। বরং বেশিরভাগ ছেলেমেয়েই পড়াশুনা করতে একেবারেই ভালোবাসে না। দিনের পর দিন তাদের অনিহা বেড়েই চলেছে। এরসাথে প্রতিনিয়ত বিনোদনের ক্রমবর্ধমান হাতছানি, গতানুগতিক পড়াশুনার ধরনটাকে আরও জৌলুশহীন করে তুলছে তাদের সামনে। ফলে পড়াশুনার সাথে তাদের দুরত্ব বেড়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। অভিভাবকদেরও দুশ্চিন্তা বাড়ছে। তারা দিশেহারা। এদিকে ব্যারথতার চাপ ক্রমশ ভারী করে তুলছে কৈশোরের মনগুলোকে। সেখানে থাবা বসাচ্ছে অদৃশ্য সেই ব্যাধি – ডিপ্রেশন। এর থেকে বেরনোর কি কোন উপায় নেই? পড়াশুনা কি তাহলে হাতে গোনা কিছু ছেলেমেয়ের জন্যই থেকে যাবে? নাকি, আমরা খুঁজব অন্য কোনো রাস্তা?
টিউটোপিয়া সেই পথের দিশারী। বাংলায় শিক্ষার আধুনিক অ্যাপ। বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশুনাকে সহজ করে দেওয়ার চেষ্টায় সহযোগী – টিউটোপিয়া অ্যাপ।
দেশের সংসদ থেকে স্কুল-কলেজের ক্যাম্পাস যখন সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতির সংস্কার নিয়ে তোলপাড়, অন্যদিকে কোভিডের থাবায় স্কুল-কলেজ যখন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল, সেই অস্থির সময়ে টিউটোপিয়ার যাত্রা শুরু।
টিউটোপিয়ার ডিরেক্টর সুব্রত রায় বলছেন – “পেশাগতভাবে আমি ভারতের বিভিন্ন কিডস চ্যানেল যেমন নিকলোডিওন, পোগো, সোনি – র জন্য অ্যানিমেশন তৈরি করি। অর্থাৎ, বাচ্চাদের আনন্দ দেওয়াই আমার পেশা। টিউটোপিয়া শুরু করার সময় ভাবলাম – পড়াশুনাকে গল্পের ছলে, অ্যানিমেশনের সাহায্য নিয়ে, সিনেমার মত করে ছেলেমেয়েদের কাছে পৌঁছে দেবো। যেমন কথা, তেমন কাজ। সঙ্গে পেলাম বেশ কিছু গ্যানিগুনি বিদগ্ধ মানুষদের।আজ, আমি ছাড়াও প্রায় ছশোরও বেশি মানুষ টিউটোপিয়ার জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দিনরাত কাজ করে চলেছেন”।
সাধারনত দেখা যায়, এই ধরণের ই-লার্নিং অ্যাপের সাবস্ক্রিপশন ফি যথেষ্ট বেশি হয়। টিউটোপিয়ার ক্ষেত্রেও কি তাই ঘটবে? টিউটোপিয়া জানাচ্ছে, শুধুমাত্র বাংলা মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে তৈরি হওয়া এই অ্যাপে খরচ খুবই কম। অষ্টম থেকে দশম, প্রত্যেকটি ক্লাসের সব বিষয়ের পড়াশুনা করতে একজনের বাৎসরিক খরচ তিনহাজার টাকা, অর্থাৎ মাসে আড়াইশো টাকা। আর, একাদশ থেকে দ্বাদশের প্রত্যেকটি ক্লাসের সব বিষয়ের পড়াশুনা করতে একজনের বাৎসরিক খরচ ছহাজার টাকা, অর্থাৎ, মাসে পাঁচশো টাকা।
পশ্চিমবঙ্গে, ইংরাজি মাধ্যমের স্কুলগুলি থেকে প্রতি বছর সত্তর থেকে আশি হাজার ছেলেমেয়ে ক্লাস টেন পাশ করে। অন্যদিকে, বাংলা মাধ্যম থেকে প্রতিবছর মাধ্যমিক দেয় দশ থেকে তেরো লাখ ছেলেমেয়ে। বরাবরই দেখা গেছে, ইংরাজি মাধ্যমের ছেলেমেয়েদের নিয়ে সকলে মাতামাতি করে। কিন্তু বাংলা মাধ্যমের ছেলেমেয়েদের নিয়ে বিশেষ কোনো উৎসাহ দেখা যায় না। কেন? এর কারন কি শুধুই দারিদ্র?
সুব্রতবাবু বলছেন, “ইতিহাস সাক্ষী, দারিদ্র কখনোই বাধা হয়ে উঠতে পারেনি কারোর জীবনে। বরং তা হয়ে উঠেছে সাফল্যকে ছিনিয়ে নেওয়ার জেদ। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের মত শিক্ষাও একটি অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজন। বাংলা মাধ্যমের বিপুল সংখ্যক ছেলেমেয়েদের কাছে, পড়াশুনা ডিপ্রেশনের কারন না হয়ে মন খারাপের ওষুধ হয়ে উঠবে যেদিন, সেদিন বুঝবো কিছু করতে পারলাম। আমরা কোনো লাইনের পিছনে লাইন দিইনি। আমাদের বিশ্বাস, বাংলা মাধ্যমের ছেলেমেয়েদের মাবাবারা তাদের সন্তানের হাতে তুলে দেবেন tutopia learning app, যা কয়েকটা ক্লিকেই বদলে দেবে ছাত্রছাত্রীদের জীবন। কোনো বকাবাকির ছাড়াই ছেলেমেয়েরা নিজে থেকেই যেমন ইউটিউব দেখে, ফেসবুক করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা; সুব্রত রায়ের লক্ষ্য, টিউটোপিয়াও তারা দেখবে নিজেদের আকর্ষণেই। তারা টেরই পাবে না, কখন তাদের পড়াশুনাটা হয়ে গেলো।
ইতিমধ্যে আটলক্ষেরও বেশি মোবাইলে টিউটোপিয়া জায়গা করে নিয়েছে। ১৬ হাজার রিভিউয়ের মধ্যে টিউটোপিয়ার রেটিং ৫-এর মধ্যে ৪.৮। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, সুব্রত রায় বললেন – “নিশ্চয়ই আনন্দ হচ্ছে। তবে সন্তুষ্টির কোনো জায়গা নেই। আমি সমস্যার সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেছি সমস্যার শিকড়ে গিয়ে। পড়ানো বা শেখানোর মুল জায়গাটা হল ছেলেমেয়েদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করা। ভালো না লাগলে, ছেলেমেয়েরা পড়াশুনায় সময় দেবে কেন? আমরা বড়রা কি দিনের পর দিন অপছহন্দের কোন কাজ করতে চাই? না। তাহলে ওদেরকে এই যন্ত্রণা দেওয়া কেন? ফার্স্টবয়েরও পছহন্দ-অপছন্দের সাবজেক্ট আছে।আমদের চেষ্টা একজন ছাত্র বা ছাত্রীর কাছে যেন সব বিষয়ই জলের মত পরিষ্কার হয়ে যায়। চ্যালেঞ্জ একটাই, পড়াশুনাকে প্রতিদিন আরও আরও সহজ করে তোলা। ছাত্রছাত্রীরা যেদিন বলবে, তাদের পড়াশুনার সিনেমাহলের নাম টিউটোপিয়া, সেদিন মনে করবো – টিউটোপিয়াকে নিয়ে স্বপ্নের যে উড়ান দিয়েছি, তা বাস্তবের মাটি ছুঁলো”।
এই প্রতিবেদনটি টিউটোপিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্য়োগে প্রকাশিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy