কাটা পড়েছে গাছ, দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। —নিজস্ব চিত্র।
পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে টুরগা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য গাছ কাটা যাবে না বলে দাবি তুলে আন্দোলনে নেমেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দেড় দশক আগে পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ প্রকল্পের (পিপিএসপি) জন্য কয়েক হাজার গাছ কাটায় এলাকার মানুষের জীবিকা বিপন্ন হয়।
সেই অভিজ্ঞতা থেকে এ বার টুরগার প্রকল্পে গাছ কাটার বিরোধিতায় নেমেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। আদালত গাছ কাটার উপরে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেয়। ফলে থমকে গিয়েছে প্রকল্পের কাজ।
জেলার মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর বক্তব্য, ‘‘বনভূমিতে কাজ হলে নিয়ম অনুযায়ী সমপরিমাণ জমিতে গাছ লাগানো হয়। এ বারও হবে।’’ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখেই টুরগার প্রকল্প হবে। পিপিএসপি-র মতো টুরগাতেও স্থানীয় লোকজনও কাজ পাবেন। ’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, টুরগা নালাকে ঘিরে প্রায় ২৩৪ হেক্টর জমিতে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ মেগাওয়াট করে চারটি ইউনিটে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জলাধারের পাশে রয়েছে বাড়েলহর, তেলিয়াভাসা, হাতিনাদা, টাঁড়পানিয়া, ভুঁইঘড়া, শালডি প্রভৃতি গ্রাম।
স্থানীয় বাসিন্দা সুশীল মুর্মু, অচিন্ত্য সোরেনদের দাবি, ‘‘নতুন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কথা জানতামই না। জানুয়ারি মাসের গোড়ায় গাছ কাটতে আসা লোকজনের কাছেই জানতে পারি, জঙ্গল কেটে বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে।’’
তাঁদের বক্তব্য, জঙ্গল থেকে পাতা, জ্বালানি সংগ্রহ করে সংসার চলে। গাছকাটা গেলে পেটে টান পড়বে। ওই প্রকল্পে গাছ কাটা যাবে না বলে ১৬৫ জন বাসিন্দা গণস্বাক্ষর করে জেলাশাসক, বিদ্যুৎ দফতরে চিঠি দেন।
পরিবেশকর্মী রাকেশ মুদলীর দাবি, ‘‘অরণ্যের অধিকারের আইন, ২০০৬-তে উল্লেখ করা হয়েছে, এই ধরনের প্রকল্পের জন্য গণশুনানি করে এলাকার ৫০ শতাংশ মানুষের সম্মতি প্রয়োজন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এক্ষেত্রে কি তা হয়েছে?’’
বাসিন্দাদের দাবি, গণশুনানি হয়নি। বিডিও (বাঘমুণ্ডি) উৎপল দাস মুহুরির পাল্টা দাবি, ‘‘অযোধ্যা ও বাঘমুণ্ডি পঞ্চায়েতে জনশুনানি হয়েছিল।’’ পরিবেশকর্মী সৌরভের অভিযোগ, ‘‘সমীক্ষার নামে জানুয়ারিতেই কয়েকশো গাছ কাটা হয়। তাই হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছে।’’ ডিএফও (পুরুলিয়া) রামপ্রসাদ বাদানার দাবি, ‘‘অল্প কিছু গাছ কাটা হয়েছে। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞায় গাছকাটা বন্ধ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy