ছবি: সংগৃহীত।
দু’টিই কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা। কিন্তু বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুকে নিয়ে জোর টানাপড়েন শুরু হয়েছে সিবিআই এবং ইডি-র মধ্যে।
রোজ ভ্যালির আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে সিবিআইয়ের মূল মামলাটি রয়েছে ভুবনেশ্বরে। কিন্তু প্রধান অভিযুক্ত গৌতম কলকাতার জেলে থাকায় তদন্তে এগোচ্ছে না বলে ওই তদন্ত সংস্থার একাংশের অনুযোগ। তদন্তের স্বার্থেই গৌতমকে ভুবনেশ্বর নিয়ে গিয়ে সেখানে বেশ কয়েক দিন রাখতে চাইছে সিবিআই।
কিন্তু সিবিআই-কর্তারা মনে করছেন, গৌতমকে ভুবনেশ্বর নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) প্রধান বাধা। এখানে ইডি-র দায়ের করা রোজ ভ্যালি মামলায় গৌতমকে অযথা আটকে রাখা হয়েছে বলে সিবিআইয়ের একাংশের অভিযোগ। এর আগে তদন্তের স্বার্থে বেশ কয়েক বার গৌতমকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে গিয়েছে সিবিআই। কিন্তু কলকাতার মামলার সূত্রেই কয়েক দিনের মধ্যে তাঁকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে এই শহরে।
আরও পড়ুন: এত দিচ্ছি তবু কেন ক্ষোভ, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
২০১৫ সালের মার্চে ইডি-র হাতে ধরা পড়েন গৌতম। তার অনেক আগে, ২০১৪-র জুনে সিকিয়োরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) কলকাতার বিচার ভবনে রোজ ভ্যালির নামে প্রথম অভিযোগ দায়ের করে। ইডি-র প্রথম মামলাটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই। সেই মামলায় ১২ কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ছিল। তার সমপরিমাণ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ইডি ২০১৫ সালে চূড়ান্ত চার্জশিট দিয়ে দিয়েছে। তার শুনানিও শুরু হয়ে গিয়েছে।
সমস্যা দ্বিতীয় মামলা নিয়ে। গৌতমের গ্রেফতারির পরে, ২০১৫-র মে মাসে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় পুলিশের অভিযোগের ভিত্তিতে এই মামলাটি রুজু হয়। এ ক্ষেত্রে নয়ছয়ের পরিমাণ ৪০০০ কোটি টাকা! তার মধ্যে ইডি এ-পর্যন্ত নগদ ও সম্পত্তি মিলিয়ে ১৪০০ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করতে পেরেছে। ইডি-র একটি সূত্র জানিয়েছে, এই মামলাতেও ২০১৮-র জুলাইয়ে চূড়ান্ত চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। তবে সেই সময় ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৭৩ ধারায় ইডি আদালতে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে রেখেছে। ফলে এক দিকে শুনানি চলছে, তেমনই চলছে তদন্তও।
ইডি-কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এখনও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কাজ চলছে। যে-‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট’ (পিএমএলএ)-এ গৌতমকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিন অন্তর গৌতমকে আদালতে হাজির করতে হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ইডি। এখনও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের আদালতে গৌতমের বিরুদ্ধে পুলিশের বেশ কিছু মামলার শুনানি চলছে। সেখানেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গৌতমকে।
এখানেই আপত্তি সিবিআইয়ের। তাদের বক্তব্য, ইডি-র তরফে চার্জশিট দেওয়ার পরে শুনানির প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার কোনও প্রয়াস দেখা যাচ্ছে না। যদি শুনানিই শুরু হয়ে থাকে, তা হলে গৌতমের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়েছে কি? চার্জ গঠন না-হলে কিসের শুনানি? এই অবস্থায় গৌতমও কলকাতার জেলে থেকে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ইতিমধ্যে গৌতমের ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের সঙ্গে ইডি-কর্তাদের একাংশের যোগাযোগের অভিযোগও উঠেছে। কলকাতার জেলে গৌতমও ‘নানা চাপের’ শিকার বলে জেনেছে সিবিআই। ইডি দ্রুত তদন্ত শেষ করলে তাঁকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া সহজ হত বলে মনে করছেন সিবিআইয়ের একাংশ। এখন কাঠখড় পুড়িয়ে তাঁকে কলকাতার জেল থেকে বার করতে হবে।
গ্রেফতারের পাঁচ বছর পরে এখন গৌতমকে ভুবনেশ্বর নিয়ে গিয়ে সিবিআই তদন্তের কী এমন অগ্রগতি হবে, তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে ইডি। চার্জ গঠনের জন্য বড়জোর দু’-তিন দিনের জন্য সিবিআই গৌতমকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন ইডি-কর্তারা। তবে এই অবস্থায় গৌতমকে আদৌ ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া যাবে কি না, তা আদালতই ঠিক করবে বলে মনে করছেন ইডি-র একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy