Advertisement
E-Paper

Sand Mining: বাড়তি বালি তুলে পাচার, সরব ট্রাক সংগঠনই

বিধি ভেঙে বালি তুলে ট্রাকে বাড়তি পরিমাণে সেই বালি পাচারের ফলে বিভিন্ন জেলায় গ্রামীণ, রাজ্য ও জাতীয় সড়কের প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ ট্রাকমালিকদের।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৫৮
Share
Save

খাদান থেকে যথেচ্ছ বালি তোলা বেআইনি। ট্রাকে ওভারলোডিং বা অতিরিক্ত পণ্য বহনও অবৈধ এবং জরিমানাযোগ্য। অথচ সরকারি বিধিনিষেধ, হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও দক্ষিণবঙ্গের বহু খাদান থেকে নিয়ম ভেঙে বালি তুলে ট্রাকে ওভারলোড করে পাচার চলছে বলে অভিযোগ ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের।

পরিবহণমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরে ওভারলোডিং বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম (ববি)। এই প্রবণতা বন্ধে জেলাশাসকদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে। নজরদারি বাড়াতে ট্রাকমালিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকের পরে ভিজিল্যান্স টিম তৈরির কথাও জানিয়েছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু খাতায়-কলমে কড়াকড়ির কথা বললেও নজরদারির ফাঁস আলগাই রয়েছে বলে ট্রাক সংগঠনের অভিযোগ।

বিধি ভেঙে বালি তুলে ট্রাকে বাড়তি পরিমাণে সেই বালি পাচারের ফলে বিভিন্ন জেলায় গ্রামীণ, রাজ্য ও জাতীয় সড়কের প্রভূত ক্ষতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ ট্রাকমালিকদের। এতে সরকারের বিপুল রাজস্ব-ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে সম্প্রতি ফিরহাদ এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছে তাঁদের সংগঠন।চিঠিতে পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম ও হুগলির ১৯টি বালিঘাটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ট্রাকমালিক সংগঠনের অভিযোগ, ওই সব ঘাটের লাগোয়া খাদান থেকে যথেচ্ছ বালি পাচার হচ্ছে। ফলে শুধু রাস্তা বা সংলগ্ন সেতু নয়, সরকারি রাজস্বেরও বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনাও।

রাজ্য সরকার বৈধ উপায়ে খনি থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে বালি তোলার অনুমতি দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারি নিয়মকে উপেক্ষা করা হচ্ছে বলে ট্রাকমালিক সংগঠনের অভিযোগ। নির্দিষ্ট পরিমাণ বালি উত্তোলন এবং পরিবহণের জন্য ভুমিরাজস্ব দফতরের সাইট থেকে ই-চালান নেওয়ার নিয়ম চালু হয়েছে। সেই চালানের ভিত্তিতেই রাজস্ব পায় সরকার।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সজল ঘোষের অভিযোগ, কোনও ট্রাকে ২৫০ ঘনফুট বালি পরিবহণের অনুমতি নেওয়া হলে কার্যক্ষেত্রে তার আড়াই থেকে তিন গুণ বালি বোঝাই করা হচ্ছে। ফলে সরকারের প্রাপ্য রাজস্বের বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। ট্রাক-পিছু যত টাকা প্রশাসনের পাওয়ার কথা, তা সরকারি তহবিলে ঢুকছে না। স্থানীয় স্তরে পুলিশ এবং রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের একাংশের মদতে বাড়তি বালি ভর্তি ট্রাক রাজ্য ও জাতীয় সড়কে চলাচল করছে। সেই সব সড়কেও এক শ্রেণির আধিকারিকের মদতে সেই সব ট্রাক রাতের অন্ধকারে টোল প্লাজ়া পেরিয়ে কলকাতার কাছাকাছি চলে আসছে। চিঠিতে ট্রাকমালিক সংগঠনের নেতার অভিযোগ, ডানকুনির কাছে ওই সব বালি ট্রাক থেকে নামিয়ে বেআইনি ভাবে মজুত করে বিক্রি করা হচ্ছে। অভিযোগ, জাতীয় সড়কের টোল প্লাজ়ায় ট্রাকের ওজন পরীক্ষা করে তা খালি করার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু আধিকারিকদের একাংশের মদতে তা প্রশাসনের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে। বেআইনি ভাবে ট্রাকে অতিরিক্ত পণ্য (এ ক্ষেত্রে) বহনের ঘটনায় এক শ্রেণির ট্রাকমালিকও যুক্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। সজলবাবু বলেন, "বিভিন্ন সময়ে নিয়মবিধি মেনে চলা এবং তা অমান্য করলে ব্যবস্থাগ্রহণের হুঙ্কার-হুঁশিয়ারি দেওয়া হলেও সরকার ওভারলোডিং বন্ধ করতে পারেনি। এই নিয়ে দুর্নীতি চলতে থাকায় রাজ্যে সাড়ে ছ’লক্ষ ট্রাকের বড় অংশের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।" যে-সব বালি খাদানের কথা সজলবাবু চিঠিতে জানিয়েছেন, তার মধ্যে বাঁকুড়ার কোতলপুর, গাছবাগান, বীরভূমের জয়দেব, ইলামবাজার, গৌরবাজার, পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ, শিল্লাঘাট, গোহগ্রামের বালিঘাটের মতো ১৯টি ঘাটের উল্লেখ আছে।

রাজ্যের পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বিভিন্ন জেলায় নন-টেকনিক্যাল মোটর ভেহিক্‌ল ইনস্পেক্টরেরা পুলিশের সাহায্য নিয়ে অভিযান চালাচ্ছেন। কয়েক মাস আগে এমন ওভারলোডিং ঠেকানোর সময় মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের এআরটিও সৌম্যদ্যুতি সাহার পায়ের উপর দিয়ে ট্রাক ছুটিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছিল। এ নিয়ে প্রশ্নের কোনও উত্তরদেননি পরিবহণমন্ত্রী। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বিভিন্ন জেলায় ওভারলোডিং এবং বিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় জরিমানা আদায় বেড়েছে। নজরদারির দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে।

Sand Mining Firhad Hakim

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}