ত্রিবেণীর কুম্ভ মেলা। —ফাইল চিত্র।
শাহি স্নানের নির্ঘণ্ট ছিল মঙ্গলবার সকাল ৯টা। এক বছর আগে এই সময়ে ত্রিবেণী-মগরা মেন রোড ভক্ত-সমাগম ছিল নজরে পড়ার মতো। এই বারে অদূরেই যে কুম্ভ স্নান হচ্ছে, তা জনসাধারণকে জিজ্ঞাসা না করলে বোঝার উপায় নেই। গত বছর ত্রিবেণীতে যে মাঠ উপচে পড়েছিল ভিড়ে, এ বার তা অর্ধেকও ভরেনি। আয়োজকদের অভিযোগ, প্রশাসন তৃতীয় বর্ষের কুম্ভ স্নানের অনুমতি দেওয়া নিয়ে টালবাহানা বা অসহযোগিতা না করলে, এই হাল হত না। প্রশাসন অভিযোগ মানেনি।
বেলা সাড়ে ১০টার কিছু পরে সাধুরা জড়ো হন। অন্তত চারশো সাধু এসেছিলেন বলে দাবি। ছিল ছৌয়ের প্রদর্শনী। সাধুদের নগর পরিক্রমা দেখতে লাগোয়া বাড়ি থেকে অনেকেই রাস্তায় নেমে আসেন। এসেছিলেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও। নগর পরিক্রমা শেষে হয় শাহি স্নান।
কিন্তু ভিড় নিয়ে আক্ষেপ শোনা গিয়েছে সর্বত্র। কল্যাণী-সহ রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে এসে পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন অনেকেই। তাঁদের আক্ষেপ, “বাজার খুব খারাপ। ক্রেতা নেই। পুলিশ মেলা করার অনুমতি না দেওয়ায় লোক হয়নি। বাইরে থেকেও কেউ খুব একটা আসেননি।”
এই পরিস্থিতির জন্য প্রশাসনকে দায়ী করছেন আয়োজকদের একাংশও। আয়োজকদের তরফে কাঞ্চন চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “প্রশাসনের অনুমতি পাওয়ার জন্য বার বার দিন পরিবর্তন করতে হয়েছে। কুম্ভ মেলা হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। সকলকে খবর দেওয়া যায়নি।” ত্রিবেণী কুম্ভ পরিচালনা সমিতি আগেই মেলা ও স্নানের আয়োজন করতে চেয়েছিল। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার কথা জানিয়ে প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। পরে শর্তসাপেক্ষে সপ্তঋষি ঘাটে স্নানের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সাংসদ লকেটেরও অভিযোগ, “প্রশাসন সহযোগিতা করেনি। আমরা সরকারে এলে এই মেলাকে বিশ্বমানের করব।”
অসহযোগিতার অভিযোগ উড়িয়ে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে দাবি, মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় সমন্বয় বৈঠকে সকলের সম্মতিতে মেলা স্থগিত রাখা হয়। অন্যতম আয়োজক সংস্থা ‘ওঙ্কারনাথ মিশন’ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে দিন বদলে, শর্ত সাপেক্ষে মেলার অনুমতি মিলেছে’। খামতি ছিল না নিরাপত্তাতেও। কুম্ভ স্নান ঘিরে বাজার ও ঘাটে বিশাল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ত্রিবেণীতে এ দিন এসেছিলেন কাশীর শঙ্করাচার্য নরেন্দ্রানন্দ সরস্বতী। ‘শাহি-স্নানের’ পরে তিনি বলেন, “চলতি সরকার দেশের ১৪০ কোটি মানুষকে করোনার টিকা দিয়েছে। ৮০ কোটি মানুষকে রেশন দিচ্ছে। বিকাশ হচ্ছে। তাই মোদী সরকারের ফের ক্ষমতায় আসা উচিত!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy