Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

ঘেমেনেয়ে দমবন্ধ, ছুটি নিয়েছে বৃষ্টিও

মাঝে মাঝে সূর্য মেঘের আড়ালে চলে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সেই মেঘটা কিছুতেই জমাট বাঁধতে পারছে না। এ দিকে জ্যৈষ্ঠের গোড়ায় মানুষ ঘেমেনেয়ে একশা।

হাঁসফাঁস। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

হাঁসফাঁস। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০২:৪৫
Share: Save:

মাঝে মাঝে সূর্য মেঘের আড়ালে চলে যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সেই মেঘটা কিছুতেই জমাট বাঁধতে পারছে না। এ দিকে জ্যৈষ্ঠের গোড়ায় মানুষ ঘেমেনেয়ে একশা।

এই চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে আনুকূল্য বর্ষাচ্ছে না প্রকৃতিও। অনেকেই বলছেন, এর থেকে তাপমাত্রা চড়চড় করে উঠে গেলে হয়তো কষ্টটা কম হতো। হাওড়ার শৌনক ঘোষ যেমন শনিবার অফিসে ঢুকে ঘেমেনেয়ে অস্থির। ঘড়িতে তখন সবে বেলা দশটা!

গত কয়েক দিনের গরম সত্যিই অস্থির করে তুলেছে আমজনতাকে। এ দিনটাও ব্যতিক্রম ছিল না। আলিপুর আবহাওয়া দফতর বলছে, শনিবার দুপুরে কলকাতার অস্বস্তিসূচক ছিল ৬৫ শতাংশের ধারেকাছে— অর্থাৎ অস্বস্তির মাত্রা কার্যত চরমে।

গোটা জ্যৈষ্ঠ মাসটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে কি এ ভাবেই দাপট দেখাবে গরম?

আলিপুর হাওয়া অফিস কিন্তু তেমন কথা বলছে না। তবে আবহবিজ্ঞানীরা জানিয়ে দিচ্ছেন, আগামী কয়েক দিনে বৃষ্টির সম্ভাবনা তেমন নেই। বরং পশ্চিমের জেলাগুলি থেকে রাজ্যে ঢুকতে পারে শুকনো গরম হাওয়া। কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা বাড়বে। শুকনো গরম হাওয়া ঢুকবে। তবে তাপপ্রবাহের আশঙ্কা এখনও দেখা যাচ্ছে না।’’ গত কয়েক দিনে অবশ্য তাপমাত্রা সে ভাবে মাথাচাড়া দেয়নি। তার কারণ ছিল বাতাসের আর্দ্রতা। অস্বস্তির কারণ সেটাই। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, গত ক’দিন ধরে সাগর থেকে প্রচুর জলীয় বাষ্প দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে ঢুকে পড়েছিল। তার ফলেই এমন অবস্থা।

কিন্তু স্বস্তির কালবৈশাখী মিলবে কি? সঞ্জীববাবু বলছেন, দক্ষিণবঙ্গে জোরালো জলীয় বাষ্প জোগান দেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখন আর নেই। উল্টে পশ্চিমের জেলাগুলিতে গরম হাওয়া ঠেলে ঢুকে আসায় বৃষ্টির সম্ভাবনা কমবে। তবে আবহবিদদের একাংশের মতে, সাগর থেকে বাতাস যেটুকু ঢুকবে তা দিয়ে উপকূলীয় জেলাগুলি শুকনো গরম ঠেকাতে পারবে। আগামী ক’দিনে তাই কলকাতা-সহ উপকূলীয় জেলাগুলিতে তাপমাত্রা খুব বেশি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই বলেই পূর্বাভাস আলিপুর হাওয়া অফিসের।

চলতি মরসুমে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে নিয়মিত ঝড়বৃষ্টি হলেও কলকাতার কপাল মন্দই ছিল। কালবৈশাখীর মেঘ কখনও পুরুলিয়া, কখনও বাঁকুড়া-বর্ধমানে এসেই শক্তি খুইয়েছিল। কোনও দিন আবার কলকাতায় আসার পথে হাওয়ার খামখেয়ালিপনায় আচমকা মুখ ঘুরিয়েছিল মেঘ। ফলে দু’-তিন দিন বাদ দিলে সে ভাবে ঝড়বৃষ্টি পায়নি মহানগর। এ বার পশ্চিমাঞ্চলে শুকনো গরম হাওয়া ঢুকে পড়লে সেই মেঘ তৈরির সম্ভাবনাও নষ্ট হবে বলে মনে করছেন আবহবিজ্ঞানীরা।

এই গরমে তাই অনেকেরই নজর পাহাড়ের দিকে। শনিবার রাতের দার্জিলিং মেল, পদাতিক এক্সপ্রেসের মতো উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলিতে ‘ঠাঁই নাই-ঠাঁই নাই’ রব। স্কুল-কলেজে গরমের ছুটি পড়তেই দল বেঁধে পাহাড়ে রওনা দিয়েছে বাঙালি।

অন্য বিষয়গুলি:

Heat Summer Rain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy