দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে ‘মায়ের গাঁ’ বলে পরিচিত জয়রামবাটিতে গড়াল রেলের চাকা। বৃহস্পতিবার কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটির বিশেষ ট্রেন জয়রামবাটি পর্যন্ত নবনির্মিত লাইনে পরীক্ষামূলক ভাবে চালানো হয়। বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ জয়রামবাটি স্টেশনে বিশেষ ট্রেন পৌঁছোতেই সেখানে ভিড় জমান এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
প্রাচীন মল্লরাজধানী বিষ্ণুপুরকে তারকেশ্বরের সঙ্গে রেলপথে জুড়তে ২০০০-’০১ অর্থবর্ষে বিষ্ণুপুর তারকেশ্বর রেলপথের ঘোষণা করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর থেকে ধাপে ধাপে জমি অধিগ্রহণ করে ওই রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০১০ সালে ওই রেলপথে গোকুলনগর এবং ২০১২ সালে ময়নাপুর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করে ট্রেন চলাচল শুরু করেন রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নানা সমস্যা দেখা দেওয়ায় প্রকল্পের কাজ শ্লথ হয়ে পড়ে। সম্প্রতি জয়রামবাটি পর্যন্ত ওই রেলপথ নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়। এর পরেই বৃহস্পতিবার ওই রেলপথে পরীক্ষামূলক ভাবে বিশেষ ট্রেন চালানো হল।
কমিশন অফ রেলওয়ে সেফটির বিশেষ ট্রেন পৌঁছোবে মা সারদার জন্মস্থান জয়রামবাটিতে, সেই খবর আগেই পৌঁছে গিয়েছিল এলাকার সব গ্রামে। সেই ট্রেন দেখতে বৃহস্পতিবার হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন জয়রামবাটি স্টেশনে। রেলের আমন্ত্রণে স্টেশনে হাজির ছিলেন জয়রামবাটির সন্ন্যাসী ও ভক্তেরা।
সন্ন্যাসী স্বামী প্রবুদ্ধানন্দ বলেন, ‘‘আজকের দিনটি শুধু আমাদের কাছে বহু প্রতীক্ষিত নয়, আজকের দিনটি একটি ঐতিহাসিক দিন। জয়রামবাটির মতো প্রত্যন্ত গ্রামে ট্রেন এল। কয়েক বছর আগেও এই গ্রামে ট্রেন আসা অকল্পনীয় ছিল। রেলপথে জয়রামবাটি যুক্ত হওয়ায় এখন ভক্তেরা খুব সহজেই মায়ের এই পূণ্যভূমি দর্শনে আসতে পারবেন। এলাকার আর্থ সামাজিক পরিবেশও দ্রুত বদলে যাবে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা নীলকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এত দিন আমাদের ট্রেন ধরতে ছুটতে হত বিষ্ণুপুরে। এ বার থেকে আমরা জয়রামবাটি থেকেই ট্রেনে চড়তে পারব। এ আমাদের পরম প্রাপ্তি।’’