প্রতীকী ছবি।
শিক্ষা দফতরের হস্তক্ষেপে মাঝপথেই স্কুল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল আরএসএস-এর ‘প্রাথমিক বর্গ’ প্রশিক্ষণ কর্মশালা।
এই কর্মশালায় এখানে মতাদর্শগত পাঠ দেওয়ার পাশাপাশি লাঠিখেলা, শরীরচর্চা, যোগাসন এমনকি ‘নিযুদ্ধ’ বা ক্যারাটেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল। এই শিবির থেকেই পরবর্তী বা প্রথম বর্ষের প্রশিক্ষণ শিবিরের জন্য স্বয়ংসেবকদের পাঠ দেওয়া হয়। এ বছরের নাকাশিপাড়ার সাহাপুর হাইস্কুল ও তাহেরপুর নেতাজি হাইস্কুলে প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয়েছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তাহেরপুরের স্কুলের প্রশিক্ষণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। নাকাশিপাড়ায় অবশ্য তা যথারীতি চলছে।
আরএসএস সূত্রে জানা গিয়েছে, শিবির বন্ধ করা হয়নি, তা সংশ্লিষ্ট স্কুলের বদলে অন্যত্র সরানো হয়েছে। এই আবাসিক ৭ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলার কথা ছিল। কিন্তু স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে তাহেরপুরের স্কুলটির প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলতেও বলা হয় বলে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে। এর পরেই স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই শিবির বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী স্কুল কর্তৃপক্ষ বাইরের কাউকে স্কুলভবন ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারেন না। শিক্ষামূলক কাজের জন্যই তা ব্যবহৃত হওয়ার কথা। সেই নির্দেশিকা মেনে কাজ করার কথাই স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্কুলের কাছে রিপোর্টও চেয়েছে শিক্ষা দফতর। বুধবার সেই প্রসঙ্গে তাহেরপুর নেতাজি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জগবন্ধু বিশ্বাস বলেন, “একটি ভুল বোঝাবুঝি ছিল। মিটে গিয়েছে।”
তবে আরএসএস-এর নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার প্রচার প্রমুখ পার্থিব মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের সংগঠন একটি অরাজনৈতিক জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবী হিন্দু সংগঠন। বর্তমান রাজ্য সরকারের আমলে আমাদের বারবার প্রশাসনিক বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। দেশবিরোধী শক্তিকে খুশি করার জন্য এগুলো করা হচ্ছে। এটা কাম্য নয়। আমরা তা ভাল ভাবে নিচ্ছি না।"
প্রশ্ন হল, বাইরের কাউকে স্কুলভবন ব্যবহার করতে না দেওয়ার সরকারি নির্দেশিকাই যদি থেকে থাকে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্কুলে নানা রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের সভা ইত্যাদি হয় কী করে? এই প্রশ্নের অবশ্য সদুত্তর মেলেনি। নাকাশিপাড়ার সাহাপুর হাইস্কুলেও যেখানে আরএসএস-এর প্রশিক্ষণ কর্মশালা চলছে, শুধু তাহেরপুরের স্কুলটি কী দোষ করল? নদিয়া জেলা মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক দিব্যেন্দু পালের দাবি, ‘‘আমাদের কাছে প্রথমে শুধু তাহেরপুরের স্কুলের খবরই ছিল। নাকাশিপাড়ার স্কুলটির ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy