Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
আতঙ্কিত দিঘার পর্যটকরা

আচমকা দুলে উঠল চেয়ারটা

শনিবার সকাল এগারোটা নাগাদ সমুদ্রস্নানে ঢল নেমেছে পর্যটকদের। নিরাপত্তার জন্য রয়েছে নুলিয়া, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী, কোস্ট গার্ড। হঠাৎই ছন্দপতন। বিকট শব্দে খানখান হয়ে গেল চারদিক। মিনিট দু’য়েকের ব্যবধানে পরপর দু’বার।

ভয়: রাস্তায় ভিড় করেছেন উদ্বিগ্ন বাসিন্দা ও পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

ভয়: রাস্তায় ভিড় করেছেন উদ্বিগ্ন বাসিন্দা ও পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

শান্তনু বেরা
দিঘা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৭ ০০:৪৫
Share: Save:

সপ্তাহ শেষের দিঘায় থিকথিকে ভিড়। শনিবার সকাল এগারোটা নাগাদ সমুদ্রস্নানে ঢল নেমেছে পর্যটকদের। নিরাপত্তার জন্য রয়েছে নুলিয়া, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মী, কোস্ট গার্ড। হঠাৎই ছন্দপতন। বিকট শব্দে খানখান হয়ে গেল চারদিক। মিনিট দু’য়েকের ব্যবধানে পরপর দু’বার।

দিনভরের চেষ্টাতেও শব্দের উৎস জানতে পারেনি পুলিশ-প্রশাসন। আর তাতে আতঙ্কের পারদ চড়েছে। পর্যটক থেকে স্থানীয় বাসিন্দা সকলেই উদ্বেগে রয়েছেন। দিঘার প্রায় সব হোটেলেই এ দিন আতঙ্কের ছবি দেখা গিয়েছে। এ দিন ওই জোরাল শব্দের সময় দিঘার হোটেল থেকে সমুদ্রের পাড় সব কিছু কেঁপে ওঠে। ওল্ড দিঘার ব্যারিস্টার কলোনির একটি হোটেলে সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। হোটেলের প্রবেশপথে কাচে ফাটল দেখা দেয়। ডাইনিং রুমে বড় কাচের জানলা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। হোটেলের ম্যানেজার কৃষ্ণপ্রসাদ রায় বলেন, “চেয়ারটা দুলে উঠল। তারপর শুরু হল কাচ ভাঙা। ততক্ষণে পর্যটকেরা চিৎকার করতে করতে হোটেলের বাইরে বেরিয়ে এসেছেন।’’

দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রথমে আমি নিজেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে বেশ কয়েকটি হোটেল থেকে ফোন পাই। তাদের আশ্বাস দেই ভয় না পাওয়ার জন্য।’’ তবে রাত পর্যন্ত আতঙ্ক কাটেনি পর্যটকদের। বর্ধমান থেকে বন্ধুদের সঙ্গে দিঘায় বেড়াতে আসা গুরুপ্রসাদ দে বলেন, “ভয়ে হোটেল থেকে নীচে নেমে আসি। অন্য পর্যটকরাও তখন রাস্তায়। কিন্তু কীসের শব্দ তাই জানা গেল না। ভয় তো লাগবেই।’’ কলকাতা রুবি এলাকা থেকে আসা পিন্টু বড়ুয়া, সল্টলেকের রামাশিস সিংহ, হাওড়ার আমতার বাসিন্দা শেখ আব্দুল মাতিন— সকলেই বলছেন, ‘‘এত জোরে আওয়াজ আগে কখনও শুনিনি।’’ রামাশিস তো আবার বলেন, ‘‘ভয়ে আর সমুদ্রের দিকে যাইনি। যদি সুনামি আসে।’’ এ দিন ওই বিকট শব্দের পরে সমুদ্রে নামায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

পরিস্থিতি দেখে অনেক পর্যটকই আর দিঘায় থাকতে চাইছেন না। দুর্গানগরের বাসিন্দা অণিমা বসু শুক্রবার রাতে দিঘা পৌঁছেছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘খুব ভয় পেয়ে গিয়েছি। সঙ্গে ছোট বাচ্চা রয়েছে। এখানে থাকার ঝুঁকি আর নিতে পারছি না।’’ নদিয়ার ধানতলার বাসিন্দা চঞ্চল বিশ্বাসেরও বক্তব্য, ‘‘কোনও ঝুঁকি নেব না। রবিবার হোটেল ছেড়ে চলে যাব।’’ শনি-রবির ছুটিতে পর্যটকদের এই আতঙ্ক স্থানীয় ব্যবসায় ভাটা এনেছে। দিঘার ব্যবসায়ী সুমন দাস মানছেন, ‘‘শব্দের কিছুক্ষণ পরে পর্যটকেরা দিঘা বাজার থেকে হোটেলে ফিরে যান। আর তেমন লোক আসেনি। ফলে, ভাল বিক্রিবাটাও হয়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Digha Sound Fear Tourists দিঘা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy