টোটোয় বিস্ফোরণের পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ। বুধবার ইংরেজবাজারে। নিজস্ব চিত্র
চলন্ত টোটোয় তীব্র বিস্ফোরণ। তাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল চালকের দেহ। বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংরেজবাজার শহরের ঘোড়াপীর সংলগ্ন ঘোষপাড়া এলাকায়। বিস্ফোরণের ধাক্কায় নিকটবর্তী একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, টোটোর সামনের দিকে যে দু’টি ব্যাটারি থাকে, সেগুলি একসঙ্গে ফেটে গিয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গের শীর্ষ পুলিশ কর্তারা বিষয়টিকে হাল্কা ভাবে নিতে নারাজ। তেমনই এক কর্তা জানান, পুলিশকে সব দিক খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তদন্তের জন্য বৃহস্পতিবারই ফরেন্সিক দল যাবে বলেও পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে। তাদের আরও দাবি, টোটোচালকের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে কাছাকাছি বাড়িগুলিতে হইচই পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজনেরা প্রথমে বুঝতেই পারছিলেন না, ঠিক কী ঘটেছে। অনেকেই জানান, ঘটনাস্থলের একাধিক বাড়ির জানলা, দরজার কাচ, টালি ভেঙে যায় বিস্ফোরণের তীব্রতায়। টোটোচালকের দেহের অংশ বিশেষ ১০ মিটার দূর পর্যন্ত ছিটকে যায় বলে দাবি পুলিশেরও। স্থানীয়রা মনে করছেন, মজুত করা বিস্ফোরক থেকে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিস্ফোরণের তীব্রতা ভাবাচ্ছে পুলিশকেও। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বিস্ফোরণে টোটোটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আর চালকের শরীরের বিভিন্ন অংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছে। তাই ব্যাটারি ফেটে এমন হল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আজ, বৃহস্পতিবার ঘটনার তদন্তে আসছে রাজ্যের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দল।’’ ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানান বিজেপির উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু। তিনি বলেন, “দুর্ঘটনাটি নজিরবিহীন। আমরা চাই পুলিশ উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করে দুর্ঘটনার কারণ প্রকাশ্যে আনুক।’’
পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “ব্যাটারি থেকে বিস্ফোরণ বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ মালদহের বামেদের টোটো ইউনিয়নের জেলা সভাপতি নকুল কর্মকার বলেন, ‘‘টোটোয় চারটি ব্যাটারি থাকে। দু’টি ব্যাটারি চালকের আসনে এবং দুটি যাত্রীদের আসনের তলায় থাকে। টোটোয় অতিরিক্ত সামগ্রী ছিল বলে দেখে মনে হচ্ছে। রাস্তার অবস্থাও খারাপ। ঝাঁকুনি থেকে ব্যাটারিতে চাপ লেগে বিস্ফোরণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অন্য কোন বিষয় রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা উচিত পুলিশের।” তবে ব্যাটারি ফেটে শরীর এ ভাবে ছিন্নভিন্ন হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন বলেই জানিয়েছেন ব্যাটারি বিক্রেতাদের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy