কলকাতার একটি স্কুলে পড়ুয়াদের টিকাকরণ। শুক্রবার। ছবি: সুমন বল্লভ।
যার মোকাবিলা করার জন্য টিকা নেওয়া, টিকাকরণের ভিড়ে সেই করোনাই কি সংক্রমণ বিস্তারের সুযোগ পাচ্ছে? প্রশ্নটা উঠছে স্কুলের ভিড় দেখে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফর্ম পূরণে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকা ও স্কুল-কর্তৃপক্ষ যথাসাধ্য করছেন। কিন্তু কাজ তো ওই একটাই নয়। কাগজে-কলমে স্কুল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও নানা কাজের জন্য ভিড় জমেই যাচ্ছে। তাতেই স্কুলগুলি করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর কেন্দ্র হয়ে উঠছে না তো? ফর্ম পূরণে অতিমারির বিধিনিষেধ মেনে চলার পরেও কয়েক দিন ধরে স্কুলে ভিড় দেখে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি বড় অংশ।
অধিকাংশ স্কুলে একই সঙ্গে চলছে টিকাকরণ শিবির, পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, মিড-ডে মিলের জিনিসপত্র বিলি ইত্যাদি। কিছু কিছু স্কুলে আবার টিকাকরণ শিবিরে, নিজেদের ছাত্রছাত্রী ছাড়াও পার্শ্ববর্তী কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়াদেরও টিকাকরণ চলছে। ফলে সেই সব স্কুলে ভিড় হচ্ছে বেশি। শিক্ষক শিবিরের একাংশের অভিযোগ, ছাত্রছাত্রীদের যখন আসতে বলা হচ্ছে, অনেকেই সেই নির্দিষ্ট সময়ে আসছে না। নির্দিষ্ট সময়ের আগে বা পরে চলে আসছে। একসঙ্গে অনেকে স্কুলে আসায় বড় হয়ে যাচ্ছে জমায়েত। ফলে ফর্ম পূরণে বিধি মেনেও স্কুল থেকেই করোনা ছড়ানোর আতঙ্কে ভুগছেন শিক্ষকেরা।
মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে জানান, তাঁদের স্কুলে আশপাশের সাতটি স্কুলের পড়ুয়ার টিকাকরণ শিবির চলছে। প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি স্কুলের পনেরো থেকে আঠারো বয়সি পড়ুয়ারা টিকা নিতে আসছে। দিনে সর্বাধিক ২০০ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে শুক্রবার পর্যন্ত চলেছে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিলি। মাধ্যমিকের ফর্ম পূরণের কিছু কাজ বাকি ছিল। সেটা শেষ করার পাশাপাশি ফর্ম পূরণ চলছে উচ্চ মাধ্যমিকেরও। রাজাবাবু বলেন, ‘‘সব স্কুলের পড়ুয়াদের রোস্টার মেনে আসতে বলা হচ্ছে। কিন্তু সকলে বেঁধে দেওয়া সময় মেনে আসছে না। টিকা নিতে স্কুলে চলে এলে পড়ুয়াদের কাউকে তো আর ফেরত পাঠানো যায় না। ফলে স্কুলে ভিড় হয়ে যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণের একটা ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।’’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি বড় অংশের বক্তব্য, টিকাকরণের জন্য একটি স্কুলের সঙ্গে অনেক স্কুলকে যুক্ত না-করে নির্দিষ্ট সংখ্যক স্কুলকে যুক্ত করলে ভিড় কম হত।
স্কুলের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ বিস্তারের আশঙ্কা অমূলক নয় বলেই মনে করছেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগ সিংহ মহাপাত্র। তিনি জানান, কয়েক দিনের মধ্যে তাঁদের চার জন শিক্ষিকা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। সাত থেকে আট জন শিক্ষিকা সর্দিকাশিতে ভুগছেন। পাপিয়াদেবী বলেন, ‘‘যে-সব পড়ুয়া করোনার টিকা নিতে আসছে, তাদের মা-বাবাদেরও স্কুলে ছেলেমেয়েদের পাঠানোর সময় একটু সচেতন থাকা প্রয়োজন। আমাদের স্কুলে তিন-চার জন পড়ুয়া গায়ে জ্বর থাকা সত্ত্বেও টিকা নিতে চলে এসেছিল। থার্মাল গানে জ্বর ধরা পড়ায় তাদের বাড়ি পাঠানো হয়। কিছু পড়ুয়া সর্দিকাশি নিয়ে চলে এসেছে টিকা নিতে। অভিভাবকদের তো একটু সচেতন হয়ে স্কুলে পাঠাতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy