গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিক্ষোভ, স্লোগান আর প্রতিবাদে গতকাল দিনভর মুখর হয়ে রইল আরজি কর হাসপাতাল। সেখানকার মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদের ঢেউ গোটা রাজ্যকেই আন্দোলিত করেছে। আজ থেকেই রাজ্যের বহু হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। প্রবল বিক্ষোভের মুখে ওই হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে শুরু করে দায়িত্বে থাকা পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন পদে রদবদল করে আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ প্রশমনের প্রয়াস চলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। আন্দোলনকারী জুনিয়ার ডাক্তারেরা ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও কর্মবিরতি শুরু করেছেন। পরিষেবায় তার প্রভাব পড়েছে। রাজ্য প্রশাসন যখন এমন একটা ঘটনার জের সামলাতে ব্যস্ত, তখন আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের নতুন তথ্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। ইতিমধ্যে প্রশ্নের মুখে থাকা আদানিদের বিদেশে সরানো টাকায় দেশের শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবির প্রধান মাধবী পুরী বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচের অংশীদারি আছে বলে অভিযোগ তুলেছে তারা। সেই বিতর্ক নিয়েও জাতীয় রাজনীতি সরগরম। দুই বিতর্কের জল আরও গড়াতে পারে।
আরজি করে ধর্ষণ ও হত্যা: তদন্ত, আন্দোলন ও কর্মবিরতি
মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান-বিক্ষোভে অচলাবস্থা অব্যাহত আরজি করে। রবিবার জরুরি বিভাগেও কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। যার জেরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা। আন্দোলনকারীদের স্পষ্ট বক্তব্য, বিচারবিভাগীয় তদন্ত, দোষীকে প্রাণদণ্ড ও হাসপাতালের কর্তাদের পদত্যাগ-সহ তাঁদের চার দফা দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। এই পরিস্থিতিতে গত কাল আরজি করে গিয়েছেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার (সিপি) বিনীত গোয়েল ও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের কর্তারা। পরে কমিশনার নিজেও আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে। ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে জেরা করে গোটা ঘটনা সম্পর্কে আরও তথ্য মিলেছে। কিন্তু অভিযুক্ত যুবক যে এত দিন ধরে সিভিক বা পুলিশ পরিচয় দিয়ে নিজেকে ‘প্রভাবশালী’ হিসাবে তুলে ধরে দৌরাত্ম্য করে বেড়িয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে, তা কার প্রশ্রয়ে হল? কেনই বা এত দিন তাঁর বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগ জমা পড়ল না? এই সব প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা চলবে আজ। অন্য দিকে, শুধু আরজি করই নয়, চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর রাজ্যের সর্বত্রই সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। চিকিৎসকদের, বিশেষত মহিলাদের সুরক্ষা বৃদ্ধির দাবিতে রবিবার জেলার হাসপাতালগুলিতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে। তার প্রভাব পড়ছে স্বাস্থ্য পরিষেবায়। জেলার বেশ কয়েকটি হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে অচলাবস্থাও তৈরি হয়েছে। যার জেরে বিপাকে পড়েছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা। গত কাল রাতে জুনিয়র ডাক্তারেরা ছ’দফা দাবির কথা জানিয়ে আজ থেকে রাজ্যের বহু হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। এর ফলে রাজ্য জুড়েই চিকিৎসা পরিষেবায় ব্যাপক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভোগান্তির মুখোমুখি হতে পারেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। আজ সেই পরিস্থিতির দিকেও নজর থাকবে।
আরজি কর-কাণ্ডে দেশ জুড়েও কর্মসূচি
জাতীয় স্তরেও চিকিৎসক সংগঠনগুলি আরজি কর-কাণ্ডের নিন্দা করেছে। এ বার আরও দেশ জুড়ে আন্দোলনের ডাক দিল ফেডারেশন অফ রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন। সোমবার দেশের হাসপাতাগুলিতে একাধিক পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সংগঠন। আজ সেই দিকে থাকবে নজর।
হিন্ডেনবার্গ এবং ‘সেবি-আদানি যোগ’ বিতর্ক
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট ঘিরে আবার কি তপ্ত হতে চলেছে ভারতীয় রাজনীতি? শনিবার রাত থেকে রবিবার সারা দিনে তার ইঙ্গিত রয়েছে। আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবির প্রধানের যোগসূত্র নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আমেরিকার সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। হিন্ডেনবার্গ শনিবার নিজেদের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখে, “আদানিরা বিদেশে যে টাকা সরিয়েছেন, তাতে অংশীদারি রয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সেবির প্রধানের।”সেবি-প্রধান মাধবী পুরী বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ পাল্টা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, হিন্ডেনবার্গের আসল উদ্দেশ্য তাঁদের ‘চরিত্রহনন’ করে সেবির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলানো।
রেশন দুর্নীতি: ধৃত দুই ভাইকে আদালতে হাজির করাবে ইডি
রেশন দুর্নীতি মামলায় ধৃত আনিসুর রহমান ওরফে বিদেশ ও আলিফ নুর ওরফে মুকুলকে আজ পেশ করা হবে ব্যাঙ্কশাল আদালতে। প্রথমে দু’জনের বাড়িতে তল্লাশি, তার পরে গত ১ অগস্ট তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির অফিসে। সে দিনই জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় বিদেশ ও মুকুলকে। ২ অগস্ট তাঁদের আদালতে পেশ করা হলে, বিচারক ১২ অগস্ট পর্যন্ত ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই হেফাজতের মেয়াদ শেষে আজ ফের আদালতে পেশ করা হবে দু’জনকে।
কেমন বৃষ্টি হবে, পূর্বাভাস কী
সপ্তাহের শুরুতে দক্ষিণবঙ্গের আকাশে বজ্রগর্ভ মেঘের আনাগোনা বাড়বে। সোমবার দক্ষিণবঙ্গের সাতটি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। দুই ২৪ পরগনা, দুই বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ায় ওই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দক্ষিণের বাকি জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। উত্তরবঙ্গে সোমবার কোনও দুর্যোগের সতর্কতা নেই। তবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সতর্কতা রয়েছে উত্তরের সমস্ত জেলাতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy