সিপিম মুখপত্রের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভায় সীতারাম ইয়েচুরি। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে। নিজস্ব চিত্র।
কেবল মুখে বিরোধিতাই যথেষ্ট নয়। বিকল্প নীতির উপরে দাঁড়িয়ে বিজেপির মোকাবিলা করতে হবে এবং সেই কাজই তাঁরা করতে চাইছেন বলে বার্তা দিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। সেই সঙ্গেই এ রাজ্যে তৃণমূলের প্রতি ইঙ্গিত করে তাঁর বক্তব্য, কাজ ও নীতির ফারাক না থাকলে শুধু বিরোধিতায় বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয় না।
আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক। সেখানে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কর্মসূচির ভিত্তিতে কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলির বোঝাপড়া গড়ে উঠেছে। এই আন্দোলনকেই আরও জোরালো করে তুলতে হবে। জোটের প্রক্রিয়ায় কিছু দেরি হয়েছে বলেও মেনে নিয়েছেন তিনি। জেলায় জেলায় কী ভাবে কর্মসূচি এগোচ্ছে, বৈঠকে তার রিপোর্ট দিয়েছেন জেলার প্রতিনিধিরা। আর প্রথম দিনের বৈঠক শেষে প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে দলের বাংলা মুখপত্রের প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের মঞ্চে ইয়েচুরি বুঝিয়েছেন, দেশে বিজেপিকে বড় ধাক্কা দিতে হলে বাংলায় তাদের রুখে দেওয়া জরুরি।
ইয়েচুরির বক্তব্য, ‘‘বিহারে মহাজোট এনডিএ-কে প্রায় হারিয়ে দিয়েছিল। কেউ কেউ বলছেন, বাংলাতেও মহাজোট (বিজেপির বিরুদ্ধে) কেন হবে না? কিন্তু রাজ্যে রাজ্যে পরিস্থিতি আলাদা। বিহারে যা হয়েছে, বাংলায় অবিকল সেটাই সম্ভব নয়। রাজনীতিতে দুই আর দুই সব সময় চার হয় না, শূন্যও হতে পারে!’’
যেখানে যত নির্বাচন আসবে, সর্বত্রই বিজেপিকে পরাস্ত করার ডাক দিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘একটা ফ্যাসিবাদী, হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র তৈরি করা ১৯২৫ সাল থেকে আরএসএসের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই তারা এখন এগোচ্ছে। বিজেপি-আরএসএসের সঙ্গে কারও তুলনা হয় না।’’ বাংলার যোগসূত্র টেনে ইয়েচুরির সংযোজন, ‘‘এখানে বিজেপিকে কারা নিয়ে এসেছিল, কী ভাবে তারা জমি পেয়েছিল, সবারই জানা। এখনও কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের মধ্যে কোনও নীতির ফারাক দেখা যাচ্ছে কি? এরা দল ভাঙিয়েছে, এখন ওরাও ভাঙাচ্ছে! কৃষি আইন নিয়ে এত প্রতিবাদ হচ্ছে। এই রাজ্যে কয়েক বছর আগে কৃষি সংক্রান্ত যে আইন হয়েছে, মোদী সরকার সেই পথেই আরও এগিয়ে নতুন আইন করেছে।’’
বাংলায় ভোটের আগে বিজেপি দেদার টাকা খরচ করবে, বিজেপি বনাম তৃণমূলের দ্বিমেরু লড়াইয়ের কথাই প্রচার হবে— এই ‘বাস্তব পরিস্থিতি’র জন্য তৈরি থেকে বামেদের বিকল্প নীতিতে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন ইয়েচুরি। তাঁর মতে, পরিকাঠামো এবং সরকারি বিনিয়োগ বাড়লে কিছু কর্মসংস্থান তৈরি হবে, মানুষের হাতে কিছু টাকা এলে তাঁরা খরচ করতে পারবেন এবং অর্থনীতির হাল ফিরবে, তখন বন্ধ কারখানার দরজাও খোলা সম্ভব হবে। বর্তমান সরকার যে নীতি মানেই না।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকের ফাঁকেই এ দিন তাদের মুখপত্রের দফতরে গিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর সঙ্গে কথা বলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য। ইয়েচুরির সঙ্গেও তাঁর ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ হয়েছে। আর দেরি না করে আগামী ৭ জানুয়ারি আসন-রফা নিয়ে আলোচনা সম্ভব কি না, জানতে চেয়েছিলেন বিমানবাবু। সে দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কর্মসূচি রয়েছে মুর্শিদাবাদে। অধীরবাবুর সঙ্গে কথা বলে তাঁরা দ্রুত বৈঠকের দিন ঠিক করবেন বলে প্রদীপবাবু জানিয়ে এসেছেন। ইয়েচুরি এবং প্রদীপবাবু, দু’জনেই এ দিন অসুস্থ প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy