Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪

ন্যাজাট নিয়ে ধীরে চলতে চায় তৃণমূল

সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে যা-ই বলা হোক না কেন, দলীয় নেতৃত্ব চিন্তায় রয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০৩:১০
Share: Save:

পরিস্থিতি সামাল দিতে আপাতত সন্দেশখালিতে রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ রাখছে তৃণমূল। দলের স্থানীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সেই নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। নেতৃত্বের একাংশের মতে, পাল্টা হামলা ‘মাত্রাছাড়া’ হওয়ার ফলেই গোটা এলাকায় দল সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। তাই বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচির জবাবে পথে নামলে নতুন জটিলতা তৈরি হতে পারে।

সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে যা-ই বলা হোক না কেন, দলীয় নেতৃত্ব চিন্তায় রয়েছেন। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘বিজেপি শুরু করলেও পরে পরিস্থিতি যে দিকে গড়িয়েছে, তাতে আমাদের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। তাই ঝড়ের সময় মাথা নুইয়ে থাকা উচিত বলে মনে করছি।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘এখন দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠক হবে। মিছিল, মিটিং নয়। সন্দেশখালি, হাড়োয়া, মিনাখাঁ-সহ ওই এলাকায় বুথ স্তরে দলের পর্যালোচনার কাজ শেষ করে অন্য কর্মসূচির কথা ভাবা হবে।’’

সন্দেশখালির গোলমালের নেপথ্যে বিজেপির উস্কানি রয়েছে বলে বুধবার মন্তব্য করেছেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘৬ জুন সন্দেশখালিতে বিজেপির নেতারা গিয়ে উস্কানি দিয়েছিলেন। তারই প্রতিফলন তো এ সব। ওরাই সন্ত্রাস করছে আবার সন্দেশখালির ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামছেন সাংসদরা। ওদের আসল উদ্দেশ্য মানুষ বোঝে।’’ সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে দুষে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘সিপিএমের সমাজবিরোধী শাজাহানকে দলের সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করেছে তৃণমূল। আমরা এটা হতে দেব না।’’

ঘটনার পরে দলের একাংশের কাজকর্ম সম্পর্কে নানা তথ্য হাতে এসেছে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে এই তৈরি হওয়া নতুন ‘বাহিনী’ যে এলাকায় ত্রাস হয়ে উঠেছে, তা নিয়ে অন্ধকারেই ছিল দল। যে হাটগাছি অঞ্চলে এই গোলমালের শুরু সেখানকার নেতা এখন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কাদের মোল্লা। গত শনিবারের সংঘর্ষে তৃণমূলের তরফে ছিলেন এই কাদের এবং তাঁর নিজস্ব বাহিনী। সন্দেশখালির আরেক ‘শক্তিশালী’ নেতা শাজাহানের নাম এই ঘটনায় এলেও তিনি এই সংঘর্ষে ছিলেন না বলেই জেনেছেন দলীয় নেতৃত্ব। তবে কাদের তাঁর ‘স্নেহধন্য’ বলেই জানেন এলাকার মানুষ।

এই কাদের শুধু দলের ব্লক সভাপতিই নন। সন্দেশখালি ১ পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ। দলের সংখ্যালঘু সংগঠনও তাঁর হাতে। কাদেরের স্ত্রী হাটগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। কাদেরের আগে এখানে পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন সুকুমার মাহাত। ২০১৬ সালে সিপিএমকে হারিয়ে সুকুমার বিধায়ক নির্বাচিত বিধানসভায় চলে যান। তখনকার উপপ্রধান কাদের তখন থেকেই পঞ্চায়েত ও স্থানীয় রাজনীতির রাশ নিয়েছেন। তৃণমূলের চালু ব্যবস্থা অনুযায়ী, বিধায়ক তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় কমিটির চেয়ারম্যান হলেও এই অঞ্চলে দীর্ঘদিন তাঁর কোনও ভূমিকা নেই। দলীয় সূত্রের খবর, গত পঞ্চায়েত ভোটেও এই এলাকায় কোন স্তরে কে প্রার্থী হবেন, তা-ও ঠিক করেছেন কাদেরই। কাকে বাদ দেবেন, তা-ও স্থির করেছেন তিনিই। এ ভাবেই প্রশ্নহীন ক্ষমতায় ভারসাম্য হারানোয় এইরকম ঘটনা ঘটেছে বলে মত নেতাদের একাংশ।

তবে অভিযুক্ত শাজাহান বা কাদেরের দু’জনেই এলাকায় আছেন। বুধবার শাহাজান বলেন, ‘‘আমি কোনওভাবেই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন। আমি অপরাধ করলে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে ফাঁসি দেওয়া হোক।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Sandeshkhali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy