ফাইল চিত্র।
বৈভব বা বাহুল্যের তৃণমূল ভবনে সায় নেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই দলের নতুন দফতর তৈরি নিয়ে যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল, তা পুনর্বিবেচনা করা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি আপাতত কাজ চালাতে দক্ষিণ কলকাতায় একটি নতুন বাড়ি ভাড়ায় নেওয়ার কথা বলে দিয়েছেন তিনি।
বাইপাসের পাশে ধাপার জমিতে তৃণমূলের যে অফিসবাড়ি ছিল, তা ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল গত বছরের মাঝামাঝি। অত্যাধুনিক ব্যবস্থা-সহ এই ভবন তৈরির প্রস্তাবে যে তাঁর সায় নেই দলের শীর্ষ নেতাদের জানিয়ে দিলেন তিনি। আরও এক বার চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হওয়ার পর দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে শনিবার মমতা বলে দিয়েছেন, ওই রকম বাড়িতে সায় নেই তাঁর।
নতুন কমিটির প্রথম বৈঠকে দলের ‘আর্থিক, সাংগঠনিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক’ দায়িত্ব মমতার হাতে অর্পণ করেছিলেন শীর্ষনেতারা। সেই সূত্রেই মমতা বিভিন্ন এই সব বিষয়েই আলোচনা করেন। বৈঠকে দলের হিসাব পরীক্ষককে ডেকে আর্থিক অবস্থা, আয়-ব্যয়, ব্যাঙ্ক অ্যাকউন্ট ইত্যাদি নিয়ে খোঁজখবর করে তিনি নির্দিষ্ট করে বলে দেন, দলের অর্থের অর্ধেকটা অবশ্যই রাজ্য সংগঠনের প্রয়োজনে খরচ করতে হবে। সেই সূত্রেই আসে তৃণমূল ভবনের প্রসঙ্গ। মমতা বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমাদের দল মা- মাটি- মানুষের দল। এটা আমাদের স্লোগান। সরকারের মনোভাবও তাই। আমাদের দলের অফিসে বাহুল্য থাকতে পারে না।’ তারপরেই তিনি বলেছেন, ‘আমি কোথায় বসব? আমি ওখানে বসতে পারি না।’
২০০৪ সালে তৈরি হয়েছিল পুরনো তৃণমূল ভবন। তিনতলা বাড়িতে জায়গা অনেক থাকলেও সেভাবে আধুনিকতার ছোঁয়া ছিল না। বরং একটু সাবেক গড়ন আর ব্যবস্থাই ছিল সর্বত্র। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব নেওয়ার পরে এই বাড়িটি ভেঙে একেবারে নতুন করে তৃণমূলের কেন্দ্রীয় দফতর তৈরির উদ্যোগী হয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতা-কর্মী এবং পদাধিকারীদের বসার ঘর, থাকার জায়গা, ক্যান্টিন, কার পার্কিং, কনফারেন্স হল সহ একাধিক আধুনিক ব্যবস্থার কথাও ভাবা হয়েছিল নতুন পরিকল্পনায়।
নতুন এই বাড়ির জন্য দলের সাংসদ ও বিধায়কদের কাছে ১ লক্ষ টাকা করে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। আর নতুন ভবন শেষ হওয়া পর্যন্ত দলের কাজ চালাতে কাছেই দু’টি অস্থায়ী অফিসঘর তৈরি করা হয়েছিল। মমতা মনে করেন, তৃণমূলের মতো দলের জন্য এই রকম কোনও বড় অফিস দরকার নেই। অভিষেকের অবস্থান ঘিরে তৈরি সাম্প্রতিক টানাপড়েনের পরিপ্রেক্ষিতে মমতার এই সিদ্ধান্তকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্বের একাংশ।
ওই বৈঠকে দলের নেতাদের নিয়মিত তৃণমূলের দফতরে বসার কথা বলেন। এবং সেই কারণেই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে মমতা দক্ষিণ কলকাতায় একটি হাজার দশ স্কোয়ার ফুটের বাড়ি দেখতে বলেন।
আপাতত ভাড়া নেওয়া হবে বাড়িটি। সেখানেই নিয়মিত বসতে হবে সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যদের। সেই সঙ্গেই অফিসে কর্মীদের সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনার জন্য থাকতে বলা হবে নবনির্বাচিত ওয়ার্কিং কমিটির কয়েক জন সদস্যকে।
মমতা অবশ্য এও জানিয়েছেন, তরুণ নেতারা ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে কাজকর্ম করতেই পারেন। প্রসঙ্গত ক্যামাক স্ট্রিটে মূলত অভিষেক তাঁর কাজকর্ম করতেন। সেখানে তাঁর পূর্ণাঙ্গ অফিসও রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy