কোনও মন্তব্য নয়। কুণালকে নির্দেশ দলের। ফাইল চিত্র
আপাতত দলের হয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। শনিবারই তাঁকে এই বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। সম্প্রতি প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেল হেফাজত হওয়ার পরে কুণাল যে মন্তব্য করেছিলেন তা নেতৃত্বের পছন্দ না হওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। তবে কোনও চিঠি পাঠানো হয়নি কুণালকে। মৌখিক ভাবেই আপাতত দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে তাঁকে। তবে শুধুই মুখপাত্রের কাজ করতে পারবেন না কুণাল। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে তিনি থাকছেনই। এই প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, ‘‘দলের পক্ষ থেকে আমায় জানানো হয়েছে। আমি দলের কঠিন দিনের সৈনিক। এখন দল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।’’ শুধুই পার্থ সম্পর্কে না কি দলের যে কোনও বিষয়েই তাঁকে মন্তব্য করতে নিষেধ করা হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর দেননি কুণাল।
পার্থের বাড়িতে তল্লাশির সময়ে প্রথমে কুণাল বিজেপির চক্রান্তের কথা বললেও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে টাকা উদ্ধারের পরে বলেন, যাঁদের জেরা করা হয়েছে বা যাঁদের থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে তাঁরা বুঝবেন। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তবে দ্বিতীয় বার অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে বিপুল নগদ টাকা উদ্ধারের পরে সরব হন কুণাল। এমনকি পার্থের বিরুদ্ধে দলের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেও টুইট করেন। ঘটনাচক্রে সেই দিনেই পার্থকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠক শেষে বিচারপর্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত পার্থকে দলের সব দায়িত্ব থেকে সরানোর ঘোষণা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর পরে গত শুক্রবার পার্থের জেলা হেফাজত হলে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কুণাল। তিনি বলেন, ‘‘জেলে ঢুকে দেখুন কেমন লাগে। আমি মাথা উঁচু করে বলছি, আমি কোনও অপরাধ করিনি। আশা করব, আমি যেমন নাগরিক হিসেবে বন্দিজীবনের প্রত্যেকটি নিয়ম মেনেছি, পার্থের ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম প্রযোজ্য হোক। কারা দফতর যেন সে রকমই করে। তাঁকে কোনও জেল হাসপাতালে নয়, সেলে রাখতে হবে। আমাকেও সেলে রাখা হয়েছিল। আমার সঙ্গে তখন থেকে বহু কর্মী ও বন্দির যোগাযোগ রয়েছে। আমি খবর পাব।’’ এখানেই না থেমে কুণাল বলেন, ‘‘আমি প্রথম দিন থেকে বলেছি ষড়যন্ত্র। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে পার্থও ছিলেন। যখন বন্দি ছিলাম, যন্ত্রণায় জ্বলে মরেছি, তখন বলা হয়েছিল আমি পাগল। অথচ উনি তো প্রথমে কোনও কথা বলেননি। কাকে যেন ফোন করছিলেন। কেন মন্ত্রিত্ব ছাড়বেন, এ সব বলে বেরিয়েছেন।’’
প্রসঙ্গত সারদা মামলায় দীর্ঘ সময় জেলে ছিলেন কুণাল। সেই প্রসঙ্গ টেনেই তিনি বলেন, ‘‘আমার জেল জীবনে যা হয়েছিল, আমি যখন বলেছিলাম চক্রান্ত, তখন এই পার্থ এবং কেউ কেউ বলেছিলেন আমি নাকি পাগল। এই পার্থ আমায় দলবিরোধীও বলেছিলেন। অথচ এই পার্থই তখন থেকে অপা, অমুক, তমুক করে বেরিয়েছিলেন।’’ পার্থ-সহ দলের আর যাঁর তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিলেন তাঁদেরও একই দশা হবে বলেও মন্তব্য করেন কুণাল।
এর পরেই কুণালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে তৃণমূল। তবে এ নিয়ে শাসক দলের মধ্যে দু’রকম মত রয়েছে। এক দল বলছেন, ব্যক্তিগত রাগ মেটাতে গিয়ে দলে আরও চক্রান্তকারী রয়েছেন বলে কুণাল তৃণমূলকেই অস্বস্তিতে ফেলছেন। অপর পক্ষের বক্তব্য, পার্থ-কাণ্ডে জনমানসে যে প্রতিক্রিয়া সেখানে কুণালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ক্ষতির হতে পারে। কেউ কেউ ভাবতেই পারেন যে এখনও পার্থ সম্পর্কে তৃণমূল দুর্বল। তবে রাজ্য তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘পার্থের বিরুদ্ধে তো যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা দল নিয়েইছে। এর পরেও এক জন বর্ষীয়ান মানুষ সম্পর্কে দলের তরফে অসম্মানজনক কথা বলাটা ঠিক হবে না।’’ যদিও কুণাল ঘনিষ্ঠদের দাবি, দল নয়, ব্যক্তিগত মত হিসাবেই ওই কথাগুলো বলা হয়েছিল। কুণাল সে কথা উল্লেখও করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy