দল পরিচালনায় গুরুত্ব বাড়ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
অপেক্ষাকৃত কমবয়সিদের প্রাধান্য দিয়েই বৃহস্পতিবার রাজ্য ও জেলা স্তরের সাংগঠনিক দায়িত্বে ব্যাপক রদবদল করল তৃণমূল। মনে করা হচ্ছে, এ বারের বেশির ভাগ রদবদলেই নবীন মুখ সামনে আসায় বিধানসভা নির্বাচনে দল পরিচালনায় গুরুত্ব বাড়ছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একই ভাবে একাধিক পরিবর্তন করে এ দিন দলের যুব সংগঠনের নতুন কমিটিও প্রকাশ করেছে তৃণমূল।
গত ২১ জুলাইয়ের সভায় তৃণমূলে ‘ছাত্র-যৌবন’কে এগিয়ে আনার কথা বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’দিনের মধ্যে সাংগঠনিক রদবদলে সেই মনোভাবই প্রতিফলিত হল। এ দিন দলের রাজ্য ও জেলা স্তরের বাছাই করা নেতাদের বৈঠকে এই রদবদলের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন মমতা স্বয়ং। পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করে ভিডিয়ো-বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা কাজ করবেন না, তাঁদের দায়িত্বে রাখা হবে না। এক এক জন একাধিক দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকবেন, তা-ও আর হবে না।’’ বৈঠক শেষে দলের তিনটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। পরিবর্তিত রাজ্য কমিটি ছাড়াও রয়েছে একটি কোঅর্ডিনেশন কমিটি এবং একটি স্টিয়ারিং কমিটি। এই রদবদলে জেলাভিত্তিক পর্যবেক্ষক ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গ এবং জঙ্গলমহলে বড় অংশে ভোট কমেছে তৃণমূলের। এই দুই অংশেই সংগঠনের বড় রদবদল করা হয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার কোচবিহারে জেলা সভাপতি করা হয়েছে তুলনায় নবীন ও অভিষেকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে। বিদায়ী সভাপতি বিনয় বর্মণকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। সাংসদ অর্পিতা ঘোষের জায়গায় কংগ্রেস থেকে আসা বিধায়ক তুলনায় নবীন গৌতম দাসকে দক্ষিণ দিনাজপুরে সভাপতি করেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: লকডাউনেও রাজ্যে উড়ান চালু, মুখ্যমন্ত্রীর উষ্মায় মুখ্যসচিব
নদিয়ার লোকসভা ভিত্তিক জেলা কমিটি ভেঙে একটি কমিটি গঠন করে তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। জেলা দলে তাঁকে নিয়ে লাগাতার বিরোধ চললেও তাতে আমল দেয়নি তৃণমূল। হাওড়ার (শহর) জেলা সভাপতি পদে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ রায়। তাঁর বিরুদ্ধে দোষীদের আড়াল করার অভিযোগ তুলেছিলেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। অরূপের জায়গায়
সভাপতি করা হয়েছে তরুণ লক্ষ্মীরতন শুক্লকে। ৫৮ সদস্যের রাজ্য কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন রাজীব। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়ায় তুলনায় তিন নবীন সভাপতি হয়েছেন। শান্তিরাম মাহাতোর বদলে পুরুলিয়ার সভাপতি হয়েছেন গুরুপদ টুডু। ঝাড়গ্রামে বিধায়ক দুলাল মুর্মু। বাঁকুড়ার সভাপতি বিধায়ক শ্যামল সাঁতরা।
আরও পড়ুন: জঙ্গল পুনরুদ্ধারে দলের বাইরে পা মমতার, তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে ছত্রধর
উত্তর কলকাতা জেলা কমিটির চেয়ারম্যান থাকছেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে সভাপতি পদে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। রাজ্য কমিটির সম্পাদক পদে পুরনোদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ব্যক্তিগত জীবনযাপন নিয়ে বিতর্ক এক সময় আলোড়ন তুলেছিল। জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন নেতা ছত্রধর মাহাতো এলেন রাজ্য কমিটিতে।
ভোটের আগে নবীনদের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিলেও প্রবীণদেরও সাংগঠনিক বৃত্তে রাখার চেষ্টা করেছে তৃণমূল। মালদহ, উত্তর দিনাজপুর ও মুর্শিদাবাদে সভাপতি বদল করা হয়নি। তবে সকলকে জায়গা দিতে সব জেলায় দলের কোঅর্ডিনেটর হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে ‘পদপ্রত্যাশী’দের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy