Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

সব্যসাচী-কাণ্ডের জল আরও ঘোলা, অনাস্থার প্রস্তুতি ফিরহাদের, পাল্টা চ্যালেঞ্জও

অনাস্থা প্রস্তাব ছাড়াই মেয়র যাতে সরে যান, সে জন্য পুরমন্ত্রী সোমবার সকাল থেকে চেষ্টা শুরু করেন। সরাসরি সব্যসাচীকে ফোনে তিনি সেই প্রস্তাবও দেন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৬
Share: Save:

জট সোমবারও খুলল না। বরং নানা কারণে সব্যসাচী-কাণ্ডের জল আরও ঘোলা হল।

বিধাননগরের মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে দলীয় নেতৃত্ব যে পুরোদস্তুর ব্যবস্থা নিতে তৈরি, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বিধাননগরের কাউন্সিলরদের বৈঠকের পরে রবিবারই তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। সেখানে সব্যসাচী ডাক পাননি। কিন্তু মেয়র পদ থেকে সব্যসাচী না সরলে, কী ভাবে তা করা যায়, সেই কৌশলও ওই বৈঠকে স্পষ্ট হয়নি। অনাস্থা প্রস্তাব ছাড়াই মেয়র যাতে সরে যান, সে জন্য পুরমন্ত্রী সোমবার সকাল থেকে চেষ্টা শুরু করেন। সরাসরি সব্যসাচীকে ফোনে তিনি সেই প্রস্তাবও দেন। তবে রাত পর্যন্ত ইস্তফা না-দিতে অনড় সব্যসাচী। ‘কী হয়, দেখা যাক’ বলে তিনি চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত জিইয়ে রাখেন। এমনকি, বুধবার বিধাননগর পুরবোর্ডের বৈঠকেও তিনি হাজির থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

এই অবস্থায় পুর-অধিবেশনে অনাস্থা প্রস্তাব এনে মেয়রকে সরানো ছাড়া অন্য উপায় থাকে না। সেই লক্ষ্যে ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়কে সামনে রেখে শুরু হয় কাউন্সিলরদের ‘ঐক্য’ গড়ার কাজ। দলের অন্দরে হাওয়া উঠে যায় তাপসবাবুই পরবর্তী মেয়র পদে প্রথম পছন্দ। পাশাপাশি চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বিকেলে পুরভবনে তাঁর ঘরে সব্যসাচীকে পাশে বসিয়েই দাবি করেন, ‘‘সব্যসাচী এখনও মেয়র রয়েছেন। মেয়রের পদে ডেপুটি মেয়রকে বসে কাজ চালাতে বলা হয়নি। ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কোনও অচলাবস্থা হয়নি। পরিষেবাও অব্যাহত রয়েছে।’’ সব্যসাচীও বলেন, ‘‘আমিই মেয়রের কাজ চালিয়ে যাব।’’ বিধায়ক হিসেবে তিনি ১১ জুলাই মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে যাবেন কি না, সে প্রশ্নের অবশ্য স্পষ্ট জবাব মেলেনি।

সম্ভাবনার ৩ অঙ্ক

• অনাস্থা প্রস্তাবে মেয়র সব্যসাচী দত্তের পরাজয়
• ‘অন্য’ কোনও কৌশলে সব্যসাচীই জিতে গেলেন
• পুরসভা ভেঙে দিয়ে প্রশাসক বসানো

এ সবের বাইরে সোমবার দিনভর ছিল কথার লড়াই। প্রথমে দুপুরে ফিরহাদ বলেন, ‘‘সব্যসাচীকে ইস্তফা দিতে বলেছি। উনি তাতে রাজি।’’ এর পরেই বিধাননগর পুরভবনে সব্যসাচী বলেন, ‘‘দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা কেউ আমাকে ইস্তফা দিতে বলেননি। কোনও ফোনও পাইনি। এই পদ নির্বাচিত। পুরপ্রতিনিধিরা মেয়র নির্বাচন করেন। এটা কখনও কারও ফোনে হয় না। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ লিখিত ভাবে কিছু জানালে নিশ্চিত ভাবে তার জবাব দেব।’’

তৃণমূলের মহাসচিব ও শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান পার্থ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, ‘‘বাবা কি অবাধ্য ছেলেকে সব লিখিত ভাবে বলেন? দলের থেকে কেউ বড় হতে পারে না।’’ মেয়র পদে নিজে থেকে ইস্তফা না দিলে আগামী দিনে সব্যসাচীকে ‘মির জাফর’ বলা হবে বলে মন্তব্য করেন ফিরহাদ। যার জবাবে সব্যসাচী বলেন, ‘‘শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য যদি মির জাফর হই, তা হলে মির জাফরের নাম অন্য ভাবে আলোকিত হবে।’’

বিদ্যুৎ-কর্মীদের একটি সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে সব্যসাচী শুক্রবার বিদ্যুৎ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন ওই তৃণমূল বিধায়ক। তার পরেই সব্যসাচীর বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব নেন মমতা। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Sabyasachi Dutta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy