(বাঁ দিকে) কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। নাদিমুল হক (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
ওয়াকফ বিল নিয়ে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) আসন্ন পাঁচ রাজ্যের সফর বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ভুক্ত দলগুলি। বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই ঘোষণা করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি ওয়াকফ সংক্রান্ত জেপিসির অন্যতম সদস্য। কল্যাণের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যেসভায় তৃণমূলের সংসদীয় দলের মুখ্য সচেতক নাদিমুল হকও।
আগামী শনিবার গুয়াহাটি থেকে সফর শুরু করার কথা জেপিসির। ছ’দিনে দেশের পাঁচ রাজ্যের পাঁচটি শহরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের বৈঠক করার কথা। এই তালিকায় রয়েছে কলকাতাও। তা ছাড়া, ভুবনেশ্বর, পটনা এবং লখনউও রয়েছে। কল্যাণ বলেন, ‘‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ওয়াকফ জেপিসিতে তাড়াহুড়ো করছেন চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল। ঝাড়খণ্ড এবং মহারাষ্ট্রে ভোট রয়েছে, আমাদের রাজ্যে উপনির্বাচন রয়েছে, এর মধ্যে কী ভাবে এই সফর সম্ভব?’’
গত ৩ নভেম্বর লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়ে জেপিসির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করেছিলেন বিরোধী সাংসদেরা। গত মঙ্গলবার স্পিকারের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎও করেন কল্যাণেরা। শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘সপ্তাহে দু’দিন ৯ ঘণ্টা করে জেপিসির বৈঠক হচ্ছে, আমরা সাংসদেরা অন্য কোনও কাজই করতে পারছি না। কোনও স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যেতে পারছি না। এ রকম ভাবে হয় নাকি? তার মধ্যেই আবার এই সফরের সূচি।’’ কল্যাণের এ-ও দাবি, স্পিকার তাঁদের কথা সহানুভূতির সঙ্গেই শুনেছিলেন এবং আশ্বাস দিয়েছিলেন মিটিংয়ের সময় কমানো এবং সফর বাতিলের বিষয়টি তিনি দেখবেন। কিন্তু তা হয়নি। তার পরেই ওই সফর বয়কটের কথা ঘোষণা করলেন কল্যাণেরা। লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ জানিয়েছেন, কংগ্রেস, ডিএমকে, শিবসেনা (উদ্ধব), এনসিপি (পওয়ার), জেএমএম সাংসদেরাও বয়কট করছেন আসন্ন সফর।
এর আগের মুম্বই, আমদাবাদ, হায়দরাবাদ, চেন্নাই-সহ বিভিন্ন শহরে জেপিসির সফরের উদাহরণ দিয়ে কল্যাণ বলেন, ‘‘নাওয়া-খাওয়ার সময় দিচ্ছে না। মিটিং করেই ছুটতে হচ্ছে অন্য শহরে।’’ কল্যাণের আরও অভিযোগ, ওয়াকফ নিয়ে চেয়ারম্যান যাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণ করছেন, তাঁদের অধিকাংশেরই এ বিষয়ে কোনও ভূমিকা নেই। মতামত কৃত্রিম ভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তৃণমূলের।
ওয়াকফ বিল নিয়ে গোড়া থেকেই জেপিসির মধ্যে সরব কল্যাণ। গত ২২ অক্টোবর জেপিসির বৈঠকে অসংসদীয় আচরণের অভিযোগে সাসপেন্ড করা হয়েছিল শ্রীরামপুরের কল্যাণকে। তিনি বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিতণ্ডার সময় জেপিসির চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পালকে লক্ষ্য করে কাচের বোতল ভেঙে ছোড়েন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় কাচ বিঁধে কল্যাণের হাত জখম হয়েছিল। ছ’টি সেলাইও পড়েছিল ডান হাতের বুড়ো আঙুলে।
সময় বেঁধে দিয়ে জেপিসিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। সেই সূত্রে, আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে জেপিসির রিপোর্ট পেশ করার কথা। এই প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, ‘‘অতীতেও অনেক জেপিসি হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। টু-জি স্পেকট্রাম নিয়ে গঠিত জেপিসি রিপোর্ট দিতে সময় নিয়েছিল দেড় বছর।’’ কল্যাণ-সহ বিরোধীদের দাবি, তাড়াহুড়ো করে নিজেদের মনগড়া রিপোর্ট দিতেই জেপিসির চেয়ারম্যান অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy