অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলার রায়দান কবে হবে, তা লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের ১৬টি ফাইলের ফরেন্সিক রিপোর্টের উপর নির্ভর করবে। শনিবার মামলার শুনানিতে এমনটাই জানালেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। অভিষেকের লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার কম্পিউটারের ১৬টি ফাইল কলকাতায় কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। ইডির আধিকারিক মিথিলেশ কুমার মিশ্র এবং লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানার আধিকারিক অমিতাভ সিংহ রায় ওই ফাইলগুলির প্রতিলিপি সেখান থেকে নিয়ে আসবেন। সেখানকার বিশেষজ্ঞ রিপোর্ট দেবেন। সেই রিপোর্ট ওই দুই অফিসার আদালতে নিয়ে আসবেন। তার পর ইডি রিপোর্ট পেশ করবে। বিচারপতি ঘোষ জানান, ওই রিপোর্টের উপর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা নির্ভর করবে। প্রয়োজনে আদালত রায় ঘোষণা পিছিয়ে দিতে পারে। আপাতত রায় ঘোষণার দিন স্থগিত রাখা হল। আগামী সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টায় এই মামলার পরবর্তী শুনানি। নিয়োগ মামলা থেকে নিষ্কৃতি চেয়ে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন অভিষেক। সেই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা হওয়ার কথা। তার আগেই নতুন করে কেন ইডি এই মামলায় আবার সক্রিয় হল, তা জানতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন অভিষেক। সেই নিয়ে শুনানি ছিল শনিবার।
এর আগে, শুক্রবার মামলার শুনানিতে লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের দফতরে ইডি আধিকারিকের ডাউনলোড করা ১৬টি ফাইল দেখতে চান বিচারপতি ঘোষ। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘ওই ১৬টি ফাইলে কী আছে আমি দেখব। শনিবারই নিয়ে আসুন। এ নিয়ে যাবতীয় বিতর্ক মেটাতে চাই।’’ ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ সংস্থার অফিসে তল্লাশি চালাতে গিয়ে সেখানকার কম্পিউটারে ১৬টি ফাইল ডাউনলোড করেন ইডির এক আধিকারিক। সেই ফাইল বেআইনি ভাবে ডাউনলোড করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন সংস্থার এক কর্মী। বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, ১৬টি ফাইল পুলিশকে আদালতে আনতে হবে শনিবারই। নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার তদন্তেই অভিষেকের সংস্থা লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের দফতরে তল্লাশি চালায় ইডি।
‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এ তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি হাতে পেয়েছে ইডি। সেই নথির ভিত্তিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ শুরু করছে ইডি। এখানেই অভিষেকের আইনজীবীর প্রশ্ন, একই ইসিআইআর-এর ভিত্তিতে কী করে নতুন পদক্ষেপ করা হয়? এর কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, অভিষেকের বিরুদ্ধে ইডির নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এখনও ওই মামলায় রায় ঘোষণা হয়নি। তা সত্ত্বেও এই মামলায় ইডি কেন এত সক্রিয়, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে অভিষেকের তরফে।
অন্য দিকে, চলতি সপ্তাহে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক সংক্রান্ত তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে ইডির কাছে জানতে চান বিচারপতি অমৃতা সিংহ। ‘ঢিমে গতিতে’ তদন্ত নিয়ে সমালোচনাও করেন বিচারপতি সিংহ। এক বার সমন পাঠিয়ে কেন আবার অভিষেককে তলব করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি সিংহ। তাঁর নির্দেশ, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ইডিকে রিপোর্ট দিয়ে অভিষেকের বিরুদ্ধে তদন্তের অগ্রগতি জানাতে হবে।
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় জেলবন্দি কুন্তল ঘোষের চিঠির মাধ্যমে অভিষেকের নাম উঠে আসে। ধর্মতলায় শহিদ মিনারের সভা থেকে অভিষেক দাবি করেছিলেন, হেফাজতে থাকার সময় মদন মিত্র, কুণাল ঘোষকে তাঁর নাম নিতে বলেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর পর পরেই রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল দাবি করেন যে, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে ‘চাপ’ দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠিও দেন কুন্তল। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি পাঠান কলকাতার হেস্টিংস থানাতেও। তার পর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, প্রয়োজনে সিবিআই বা ইডি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সেই একই নির্দেশ বহাল রাখেন হাই কোর্টের বিচারপতি সিংহও। তার পরেই অভিষেককে ডেকেছিল সিবিআই। হাজিরাও দিয়েছিলেন অভিষেক। পরে তাঁকে তলব করেছিল ইডি। কিন্তু তিনি হাজিরা দেননি। এর পর আর নতুন করে অভিষেককে তলব করেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy