Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Tamonash Ghosh

করোনায় মৃত্যু তমোনাশের, রাজ্যকে খোঁচা দিলীপের

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রথমে ২০০১ এবং পরে ২০১১ ও ২০১৬ সাল মিলে মোট তিন বার নির্বাচিত হন তমোনাশবাবু। 

তমোনাশ ঘোষ

তমোনাশ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২০ ০২:০০
Share: Save:

টানা এক মাস করোনার সঙ্গে লড়াই চালানোর পরে বুধবার সকালে মৃত্যু হল তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের (৬৪)। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গত ২৩ মে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। করোনা ধরা পড়ার পরে দীর্ঘ চিকিৎসা চললেও গত সপ্তাহে হৃদ্‌যন্ত্রজনিত সমস্যা তৈরি হয়। করোনায় এ রাজ্যে এই প্রথম কোনও বিধায়কের মৃত্যু হল।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রথমে ২০০১ এবং পরে ২০১১ ও ২০১৬ সাল মিলে মোট তিন বার নির্বাচিত হন তমোনাশবাবু। পরিবহণ-সহ বেশ কয়েকটি শাখায় দলের শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। দলের ভিতরে তো বটেই, দলের বাইরেও ‘ভাল মানুষ’ হিসেবে পরিচিত সতীর্থের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে এ দিন সর্বদল বৈঠকেও তাঁর প্রতি শোকজ্ঞাপন করা হয়।

তবে করোনায় বিধায়কের মৃত্যু ঘিরে শোকের আবহেও রাজনৈতিক তরজা বেধেছে। তমোনাশবাবুর মৃত্যুকে দু‌র্ভাগ্যজনক বলার পাশাপাশিই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খোঁচা, ‘‘এক মাস তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই মৃত্যু থেকে বোঝা যাচ্ছে, সরকার ভিআইপি-দেরও চিকিৎসার সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে পারছে না। সাধারণ মানুষের তা হলে কী হবে!’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘শাসক দলের বিধায়ক-সাংসদরা আক্রান্ত হচ্ছেন, কারণ তাঁরা সামাজিক দূরত্ববিধি মানছেন না। এমনকি, মুখ্যমন্ত্রীও সামাজিক দূরত্ববিধি মানছেন না। অথচ আমরা ত্রাণ দিতে বেরোলেই বলা হচ্ছে, আমরা নাকি দূরত্ববিধি মানছি না!’’ দিলীপবাবুর এমন আক্রমণের জবাবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আপনার কি সব রকম জ্ঞান এবং শ্রদ্ধাবোধ লোপ পেয়েছে? বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের তরফে এমন কথা শুনে মর্মাহত হচ্ছি। আমরা আমাদের প্রিয় সতীর্থকে হারিয়েছি আর আপনারা সেই মৃত্যু নিয়েও রাজনীতি করতে চাইছেন।’’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘ দিনের রাজনৈতিক সঙ্গী তমোনাশবাবু কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে চলে আসেন তাঁর সঙ্গেই। তমোনাশবাবুর মৃত্যুকে ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূল নেত্রী। দল ক্ষমতায় আসার পরে তমোনাশবাবু মন্ত্রিসভায় জায়গা না পেলেও তা নিয়ে ক্ষোভ ছিল না। তাঁকে ২০১৬ সালেও মন্ত্রী করা হয়নি তবে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। অসুস্থ হওয়ার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত সংস্থার কাজে ছিলেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করতে দুর্গাপুরে বৈঠক চলাকালীনই অসুস্থ হন তিনি। তৃণমূল তৈরির পর থেকে তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ পদে ছিলেন তিনি। সেই সূত্রে সারদা মামলায় তাঁকে ডেকে কথা বলেছিল সিবিআই।

প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় বার সরকার গড়ার পর থেকেই তৃণমূলের নব্য নেতাদের একাংশের সঙ্গে তাঁর সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। এই বিরোধের জেরে ‘অসম্মানে’র কথা জানিয়ে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ফলতায় যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছিলেন তমোনাশবাবু। সেই ঘটনার জেরেই গত বছর তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচি ‘দিদিকে বলো’ থেকেও সরে ছিলেন তিনি। প্রয়াত নেতার ছবির সামনে এ দিন নতমস্তকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলতা বিধানসভা ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রেরই অন্তর্গত।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy