আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর গরু পাচার প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন বিধায়ক শাহনওয়াজ। প্রতীকী ছবি
আগেও হত গরু পাচার। ব্রিটিশ আমল থেকে বাম আমল সব সময়েই। বৃহস্পতিবার এমনই দাবি করলেন কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শাহনওয়াজ শেখ। ২০১০ সালে মঙ্গলকোট বিস্ফোরণে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল শাহনওয়াজের। বৃহস্পতিবার কলকাতায় সাংসদ, বিধায়কদের বিশেষ আদালতে হাজিরা দিতে আসেন তিনি। এই একই মামলায় আসানসোল জেল থেকে অনুব্রতকেও বৃহস্পতিবার কলকাতায় আনা হয়। সেখানেই শাহনওয়াজ শেখের কথায় উঠে এল গরু পাচার প্রসঙ্গ। গরু পাচার-কাণ্ড নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের জবাবে সাফ বলেছেন, ‘‘প্রশাসন, পুলিশ, রাজনীতিক, বিএসএফ জড়িত না থাকলে তা সম্ভব হত না।’’
গরু পাচার-কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার অনুব্রত। বীরভূম তৃণমূলের অন্দরের খবর, দাপুটে নেতা অনুব্রতের সঙ্গে খুব একটা সখ্যতা নেই ওই জেলারই বিধায়ক শাহনাওয়াজের। তবে গরু পাচার প্রসঙ্গে কথা বললেও একটি বারের জন্যও অনুব্রতের দিকে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তোলেননি তিনি। বরং বলেছেন, ‘‘ব্রিটিশ আমল থেকে গরু পাচার হয়। পাচার মানে আসলে গরু কেনা বেচা, যা সব সময় হয়। বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ— সর্বত্র হয়। গরু সীমান্তে যায়। এই ঘটনায় যারা দোষী, তাদের দোষ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী মামলা হবে। বিচার হবে।’’
শাহনওয়াজ কি মনে করেন এই কাণ্ডে প্রশাসনও যুক্ত? আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘না, বিষয়টা এ রকমও নয়। গরু ব্যবসায়ী, হাট মালিকেরাও এর সঙ্গে যুক্ত থাকেন। যে কেউ জড়িত থাকতে পারেন।’’ তার পরেই সুর চড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘বাম আমলেও গরু ব্যবসা হয়েছে। অন্য জেলায় গিয়েছে। প্রশাসন, পুলিশ, জেলা প্রশাসন, রাজনীতি, বিএসএফ সকলেই জড়িত। সবাই সাহায্য না করলে গরু পাচার হতে পারে না।’’
তবে শাহনওয়াজ মনে করেন, অনেক সময়ই অনেককে ‘রাজনৈতিক’ কারণে ফাঁসানো হয়। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক জায়গায় অনেক ব্যাপার হয়। অনেক জায়গায় রাজনৈতিকভাবে ফাঁসানোর জন্য অনেক কিছু করা হয়। অনেক জায়গায় আবার অনেকে দোষী রয়েছেন। অনেককে আবার সন্দেহের বশে যুক্ত করা হয়।’’
তাহলে অনু্ব্রত মণ্ডলের বিষয়ে কী মত শাহনওয়াজের? তিনি বলেন, ‘‘২০০০ সাল থেকে অনুব্রতকে চিনি। আমি নানুর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি ছিলাম। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগেও হত পাচার। তখনও অনুব্রত মণ্ডল ছিলেন। তখন কী ভাবে পাচার হত, এ সব জানা এখন সম্ভব নয়। অনেক জায়গায় গরু বেচা-কেনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কখন থেকে কে এ সব শুরু করেছে, কে যুক্ত, জানা যায় না। সিবিআই, পুলিশ বলতে পারবে।’’
সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েও যে তাঁর অসন্তোষ রয়েছে, জানিয়েছেন শাহনওয়াজ। বলেন, ‘‘তিন বার বিধায়ক হয়েছি, এই ধরনের তদন্ত আগে দেখিনি। বলছে ওকে ধরা হবে, একে ধরা হবে, তার পর সেখানে চলে যাচ্ছে। বুঝতে পারছি না। তারা নিজেরাই দোষী কিনা বোঝা যাচ্ছে না। অনেক সময়ই বলছে, তোমায় ফাঁসাচ্ছি। এ রকম হচ্ছে। ওই অভিযুক্তেরা দোষী কিনা, প্রমাণ সাপেক্ষ বিষয়।’’ তবে সব সময় সিবিআই ভুল পথে তদন্ত করছে, এমন বলতেও রাজি নন তিনি। বলেন, ‘‘যাঁদের সম্পত্তি ফুলেফেঁপে উঠেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করলে বোঝা যাবে। সত্যি অত আয় হয়েছে কিনা, তদন্ত না করলে বোঝা যাবে না।’’
শাহনওয়াজ এই আবেদনও করলেন, যে গরু পাচার সত্যিই রুখতে হলে সব দল, প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত। দেখা উচিত, কাদের সম্পত্তি বেড়েছে, প্রমাণ কী রয়েছে। অন্য রাজ্য থেকে কীভাবে চলে আসছে গরু। আমাদের এখান থেকে কী ভাবে যাচ্ছে, সবই দেখা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy