কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘দালালরাজ’ চলছে বলে কয়েক দিন ধরেই সরব সেখানকার তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র। মঙ্গলবারের বারবেলায় সেই অভিযোগ নিয়ে তিনি সটান পৌঁছে গেলেন হাসপাতালে। কিন্তু গিয়ে দেখেন, অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান নিজের দফতরে নেই। তার পর সেখানে বসেই ফোনে অধ্যক্ষকে ‘বাণ’ ছুড়লেন মদন। যা অনেকের কানেই ‘হুমকি’র মতো ঠেকেছে। মদনকে ফোনে অধ্যক্ষ কী বলেছিলেন, জানা যায়নি। তবে আনন্দবাজার অনলাইনকে পার্থপ্রতিম বলেন, ‘‘হুমকি কোথায়? উনি কিছু কথা আমায় বলেছেন। আমার সঙ্গে ওঁর অনেক দিনের পরিচয়। কথা বলে মিটিয়ে নেব।’’
আরও পড়ুন:
মদনের পরনে ছিল ফ্লুরোসেন্ট সবুজ আর কালো রঙের স্পোর্টস পোশাক। চোখে তাঁর ‘সিগনেচার’ কালো রোদচশমা। চেয়ারে বসে ফোন কানে অধ্যক্ষের উদ্দেশে মদনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনি বেরিয়ে গিয়েছেন কেন? মাসের শেষে তো তিন লক্ষ টাকা মাইনে পান। এখানে দালালরাজ চলছে। আপনি কেন সুয়োমোটো (স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে) থানায় ডায়েরি করেননি?’’ এখানেই থামেননি মদন। তাঁর কথায়, ‘‘ও সব দালালরাজ আরজি কর, এনআরএসে হয়। ওখানে সব চুড়ি পরে বসে থাকে। এটা কামারহাটি। ঘেঁটি ধরে নাড়িয়ে দেব।’’ কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা থেকে শুরু করে ভাইস চেয়ারম্যান, ৩০ জন কাউন্সিলরও মদনের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেই সংখ্যার কথাও অধ্যক্ষকে জানিয়ে দেন তৃণমূল বিধায়ক।
অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘উনি যে আসবেন, তা আমার জানা ছিল না। জানলে হয়তো থেকে যেতাম।’’ তাঁর উদ্দেশে তো বিধায়ককে বলতে শোনা গিয়েছেল, ‘ঘেঁটি ধরে নাড়িয়ে’ দেওয়ার কথা? শুনে অধ্যক্ষ বলছেন, ‘‘উনি কী বলেছেন সবটা শুনিনি। আসলে আমি একটা মিটিংয়ে ছিলাম তো!’’
আরও পড়ুন:
হাসপাতাল রোগীদের উপর জুলুম হলে, মুমূর্ষু কাউকে ভর্তি না নিলে ক্ষোভে মদনের ফেটে পড়া নতুন নয়। কয়েক মাস আগে এসএসকেএস হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার ইউনিটে দুর্ঘটনাগ্রস্ত এক যুবককে দীর্ঘ ক্ষণ ফেলে রাখার অভিযোগ পেয়ে সেখানে পৌঁছে ধুন্ধুমার বাধিয়েছিলেন মদন। সেই জল অনেক দূর পর্যন্ত গড়িয়েছিল। মদন ‘চ্যালেঞ্জ’ করে বসেছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার পর কুণাল ঘোষ আসরে নেমে মদনকে ঠান্ডা করেছিলেন। মদন যে যুবকের জন্য সেই রাতে এসএসকেএমে ছুটেছিলেন দিন কয়েক পর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। এ বার নিজের কেন্দ্রের সাগর দত্ত নিয়ে নিজের ‘মেজাজে’ মদন।