১১ মে পর্যন্ত জীবনকৃষ্ণ সাহাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক। — নিজস্ব চিত্র।
সিবিআই আদালতে তখন চলছিল নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি। পাশাপাশি চলছিল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার জামিনের মামলা। আইনজীবীদের সওয়াল, বিচারকের নির্দেশের মাঝেই কিছু ক্ষণের জন্য দেখা হয় বাবা-ছেলের। ছেলেকে পাশে বসিয়ে কাছে টেনে নেন বড়ঞার বিধায়ক। একরত্তি ছেলে কী বলল বাবাকে? এজলাস থেকে বেরিয়ে জীবনকৃষ্ণ সেই উত্তর দেন সাংবাদিকদের। ছেলের প্রশ্ন ছিল, ‘‘বাড়ি কবে যাবে বাবা?’’
গত ১৭ এপ্রিল থেকে সিবিআইয়ের হেফাজতে বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ। শনিবার সিবিআইয়ের আদালতে হাজির করানো হয়েছিল তাঁকে। ১১ মে পর্যন্ত তাঁকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।
বসেছিল একরত্তি ছেলে। সেখান থেকে উঠিয়ে নিজের পাশে ছেলেকে বসান জীবনকৃষ্ণ। পুলিশকর্মী থেকে আদালতে উপস্থিত কেউ কেউ বাধা দেন। বিধায়ক যদিও কিছু ক্ষণের জন্য ছেলেকে কাছছাড়া করেননি। পাশে বসিয়ে মাথায় হাত বোলান। বার বার কাছে টেনে নেন। তার পর খুদে ফের চলে যায় পিছনের বেঞ্চে, মায়ের কাছে। তার পর এক সময় ঘুমিয়েও পড়ে। মামলা তখনও চলছিল। এর পরেই জামিনের আবেদন খারিজ করে বিচারক বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠান জীবনকৃষ্ণকে।
এজলাস থেকে বেরোনোর পর জীবনকৃষ্ণকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেন, তাঁর মোবাইল থেকে কিছু পাওয়া গিয়েছে কি না! বিধায়ক জানান, কিছু পাওয়া যায়নি। পরে যদিও গাড়িতে উঠে সাংবাদিকদের একই প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘না, না, না।’’
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে গত ১৭ এপ্রিল ভোরে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক তৃণমূলের জীবনকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সিবিআইয়ের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই জীবনকৃষ্ণ শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় শিক্ষক নিয়োগের জাল বিস্তার করেছিলেন তিনি বলে অভিযোগ। শুধু শিক্ষক নিয়োগই নয়, বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন শংসাপত্রের পাশাপাশি ভুয়ো শিক্ষাগত যোগ্যতার নথিও ব্যবস্থা করতেন তিনি বলে অভিযোগ।
তদন্তকারীদের দাবি, বড়ঞার আন্দির বাড়িতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য রীতিমতো একটি ‘দফতর’ খুলে ছিলেন জীবনকৃষ্ণ। অভিযোগ, একাধিক এজেন্ট বা দালাল জীবনকৃষ্ণের কাছে চাকরিপ্রার্থীর তালিকা নিয়ে আসতেন। সঙ্গে মোটা টাকাও। পরে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতা দখলের পর শাসকদলের একাধিক নেতা ও মন্ত্রীদের ‘কাছের’ মানুষ হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন জীবনকৃষ্ণ। জীবনকৃষ্ণের নিজের ব্লক বড়ঞা ছাড়াও খড়গ্রাম, বীরভূমের সাঁইথিয়া এলাকার লোহাজং গ্রামেও বহু ‘দালাল’ ছিলেন। যাঁরা সরাসরি জীবনকৃষ্ণের সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি পুলিশের একাংশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy