মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের এ বার রাজ্যেই কাজে লাগানোর কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার আলিপুরের ধন ধান্য প্রেক্ষাগৃহে ‘রিয়েল এস্টেট কনভেনশন’-এ নির্মাণ সংস্থাগুলিকে এমনটাই বার্তা দিলেন তিনি।
মমতা বলেন, ‘‘আমরা আমাদের জমি-নীতি বদল করেছি। আপনাদের কাজের জন্য সব রকম সুবিধা দেওয়া হয়েছে। চা-বাগানের ১৫ শতাংশ জমিকে পর্যটন শিল্পে ব্যবহার করা যাবে। সঙ্গে চা-বাগানের চাষের কাজও হবে। ‘ফ্রি হোল্ড’ পলিসিতে শিল্প স্থাপনের জন্য যত্রতত্র ঘুরে বেড়াতে হবে না। আমাদের অনেক ল্যান্ড ব্যাঙ্ক থেকে আপনারা শিল্প ক্লাস্টার, পরিবহণ লজিস্টিক হাব তৈরি করতে পারবেন।’’ এর পরেই তিনি আরও বলেন, ‘‘কর্মচারীরা আমাদের সম্পদ। মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরের লোকেরা ভাল নির্মাণ শ্রমিক। তাই তাঁদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয় কাজের জন্য। অর্থের জন্য তাঁদের নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁদের নিরাপত্তা নেই। আপনারা একটি অ্যাপ তৈরি করুন। সেখানেই রাজ্যের শ্রমিকদের রাজ্যেই কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করুন। পরিযায়ী শ্রমিকদের আপনারা কাজে লাগান। তথ্যভান্ডার আমরা দিয়ে দেব। স্থানীয় মানুষ কাজ পেলে তাদের যাতায়াত এবং খাবার খরচ কমবে।’’
বিনিয়োগের জন্য পশ্চিমবঙ্গে অনুকূল পরিবেশ থাকলেও রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে বলেই অভিযোগ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। বলা হচ্ছে, এখানে উন্নয়ন নেই, রয়েছে শুধু সাম্প্রদায়িক হানাহানির ঘটনা। ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা হচ্ছে বার বার। কিন্তু এখানে শিল্পের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। রয়েছে সুষ্ঠু জমি নীতি। তৈরি হয়েছে ল্যান্ডব্যাঙ্ক।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘বাংলার রাস্তা জুড়বে বিশ্বের সঙ্গে। অনেক কর্মী আছেন। শেষ দু’বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা নিয়োগ হয়েছে। প্রতি বছর ১০ হাজার কোটি করে বিনিয়োগ বাড়ছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দেশের মধ্যে কলকাতায় রিয়াল এস্টেটের দাম বেড়েছে। দিল্লি, মুম্বইয়ের থেকেও বেশি দাম বেড়েছে কলকাতায়।’’
মমতা বলেন, ‘‘কোভিডের জন্য সকলের দু’বছর নষ্ট হয়েছে। তাই দ্রুত কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য কর কমানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে নানা সুবিধাও। তার পরেই বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ বেড়েছে। শিল্পস্থাপনের জন্য সব ধরনের অনুমতি পেতে অনলাইনে আবেদনের সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে জমি পেতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য জমি সংক্রান্ত সব বিষয়ে নীতির সরলীকরণ করা হয়েছে।’’ তবে ফ্ল্যাট বিক্রির ক্ষেত্রে এই ব্যবসায় ‘অসাধু ব্যবসায়ীদের’ প্রবেশ ঘটেছে বলেও উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থ নিয়ে ফ্ল্যাট না দেওয়ার অভিযোগ ওঠা সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করার নির্দেশ নির্মাণকারী সংস্থাগুলিকেই দিয়েছেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য ঘর তৈরি করুন। তাঁরাও কম দামে ঘর কিনতে পারবে। তবে কিছু অসাধু প্রোমোটার আছেন, তাঁরা টাকা নিয়ে ফ্ল্যাট দেন না। তাই তাঁদের কালো তালিকা ভুক্ত করুন। গরিব মানুষের টাকা নিয়ে চলে যাবে, এ সব সহ্য করা যাবে না।’’
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বিভিন্ন শিল্প সংস্থাকেও হেনস্থা করছে বলেও অভিযোগ করেছেন মমতা। এ ক্ষেত্রে যে তাঁর পরিবারকেও নিশানা করা হচ্ছে, তা-ও উল্লেখ করেছেন তিনি। বলেন, ‘‘আপনাদের নানা এজেন্সি দিয়ে হেনস্থা করা হয়। শুধু আপনাদের কেন, যে আমি কারও থেকে এক পয়সা নিয়ে নিইনি, এক কাপ চা-ও খাইনি, সেই আমার পরিবারকেও...।” সোমবার পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে জঙ্গলসুন্দরী শিল্পতালুকে ৭৫০ কোটি টাকার সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy