রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের উপাচার্যহীন ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সম্প্রতি রাজ্যপাল ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্যের এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে প্রয়োজন পড়লে উপাচার্যের ভূমিকা পালন করবেন তিনি নিজে। কিন্তু, রবিবার রাতে রাজভবনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নতুন অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ করা হচ্ছে। যেমন, এর আগেও রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে করেছেন রাজ্যপাল।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা অসুবিধায় পড়ছেন বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষাবিদেরা। রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যরা বলেছিলেন, উপাচার্যদের নিয়ে নানা সমস্যার কারণে আদতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। তাঁদের ডিগ্রি, সার্টিফিকেট পেতে অসুবিধা হচ্ছে। প্রশাসনিক নানা কাজেও সমস্যা হচ্ছে। গত ৩১ অগস্ট এর সমাধান হিসাবে রাজভবনের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য তথা রাজ্যপালই আপাতত জরুরি পরিস্থিতিতে ওই উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করবেন। যা নিয়ে শিক্ষা দফতরের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজভবনকে। এর পরেই রবিবার রাতে রাজ্যের ১৬টি উপাচার্যহীন বিশ্ববিদ্যালয়েই অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল।
এর মধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য তথা প্রাক্তন বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়। অর্থাৎ তিনি একই সঙ্গে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ছাড়া ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির দায়িত্ব পেয়েছেন রাজকুমার কোঠারি, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে দেবব্রত বসু, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে গৌতম চক্রবর্তী, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ ভবনের তরফে। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মাথায় বসানো হয়েছে তপন চক্রবর্তীকে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ অ্যানিম্যাল অ্যান্ড ফিশারিজ সায়েন্সেসের দায়িত্ব পেয়েছেন শ্যামসুন্দর দানা।
দীর্ঘ দিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবন বনাম সরকারের টানাপড়েন চলছে। শনিবারই রাজভবনের তরফে একটি সার্কুলার জারি করে বলা হয়েছিল, আচার্যের পর উপাচার্যই হবেন যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বেসর্বা। তাঁর অধস্তন, যেমন সহ-উপাচার্য বা রেজিস্ট্রারদের তাঁরই নির্দেশ পালন করে চলতে হবে। সরকার তাঁদের নির্দেশ দিলেও তা তাঁরা মানতে বাধ্য নন। সে ক্ষেত্রে উপাচার্য মান্যতা দিলে তবেই সরকারি নির্দেশ পালন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্তারা। রাজভবনের ওই নির্দেশ নিয়ে আবার বিতর্ক শুরু হয়। রাজ্যের শিক্ষাবিদদের অনেকেই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার বা শিক্ষা দফতরকে এই নির্দেশে কার্যত অপাংক্তেয় করে দেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।
রাজভবনের এই নির্দেশের যখন সমালোচনা করেছেন শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে প্রাক্তন উপাচার্যেরা, তখন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুভ্রকমল রাজভবনের পক্ষ নিয়ে বলেছিলেন, যা হয়েছে তা আইন মেনেই হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy