মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প আগেই প্রশংসিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। এ বার ফের ‘কন্যাশ্রী’ এবং ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের প্রশংসায় ইউনিসেফ। শুক্রবার কলকাতায় আয়োজিত এক আলোচনাচক্রে আমন্ত্রিত ছিলেন এ রাজ্যে ইউনিসেফের ফিল্ড অফিসের প্রধান মনজুর হোসেন। সেখানে বক্তৃতার সময় বাংলার এই দুই প্রকল্পের অবদানের কথা স্মরণ করিয়ে দেন হোসেন। তাঁর মতে, রাজ্যে সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ‘কন্যাশ্রী’, ‘রূপশ্রী’-সহ অন্য সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি অন্যতম চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করেছে। উল্লেখ্য, এই দুই প্রকল্পই বাংলায় নারী ক্ষমতায়নের দিকে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে। বর্তমানে আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকে যখন নারী নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে, ঠিক সেই সময়েই ইউনিসেফ আধিকারিকের এই মন্তব্য।
‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতি পেয়েছে। এ বার সমাজ বদলের লক্ষ্যে ‘কন্যাশ্রী’ ও ‘রূপশ্রী’-র অবদানের কথা স্মরণ করালেন ইউনিসেফের আধিকারিক। এই প্রশংসাসূচক বার্তাকে সমাজমাধ্যমে তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, “আমি খুব আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, সরকারের সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি আবার ইউনিসেফের প্রশংসা পেয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রী আরও লিখেছেন, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বদলে দিচ্ছে— সেগুলি আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি পাচ্ছে।”
ইউনিসেফ আধিকারিকের মন্তব্যের পর থেকেই তৃণমূলের মহিলা নেত্রীরা সামাজিক উন্নয়নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরদর্শী ভাবনার কথা তুলে ধরতে শুরু করেছেন। সমাজমাধ্যমে এক ভিডিয়োবার্তায় রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, মহিলারা এই রাজ্যে যে সম্মান পেয়েছেন, তা এক কথায় ‘অতুলনীয়’। তাঁর মতে, রাজ্যের মহিলাদের পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজী নজরুল ইসলামের ‘নারী’ কবিতার একটি অংশ ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর’ স্মরণ করিয়ে দিয়ে চন্দ্রিমা বলেন, “এই কথাটি যে কত বড়, তা এ রাজ্যের মহিলাদের অনবদ্য সম্মান দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।”
‘কন্যাশ্রী’ ও ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পকে ইউনিসেফ প্রশংসা করায় আপ্লুত চন্দ্রিমার কথায়, “এর থেকে বড় কী হতে পারে! সারা বিশ্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তা দেখিয়ে দিচ্ছেন, কী ভাবে মেয়েদের সম্মান দিতে হয়, প্রতিটি ক্ষেত্রে জায়গা করে দিতে হয়। এর থেকে বড় কিছু হয় না।” একই কথা বলছেন মমতার মন্ত্রিসভার অপর এক মহিলা মুখ শশী পাঁজা। নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রীর কথায়, নারী ক্ষমতায়নের পথকে আরও সুদৃঢ় করেছে এই দু’টি প্রকল্প। তিনি বলেন, “আবারও জগৎসভায় বাংলা প্রশংসা পেল।” এই প্রশংসাপ্রাপ্তির পর সমাজমাধ্যমে তৃণমূল লিখেছে, বাংলাই পথ দেখাচ্ছে এবং প্রতি দিন নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।
পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ-সহ অন্য দলীয় নেতা-নেত্রীরাও এই প্রশংসাকে তুলে ধরেছেন সমাজমাধ্যমে। সম্প্রতি আরজি কর-কাণ্ডের থেকে দৃশ্যত অরাজনৈতিক যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তাতে মহিলাদের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। গত ১৪ অগস্ট মেয়েদের রাত দখল কর্মসূচির প্রভাব পড়েছিল কলকাতা শহর ছাপিয়ে শহরতলি এমনকি দূরবর্তী জেলার মফস্সল শহরেও। এই আবহে ইউনিসেফ আধিকারিকের এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে দলগত ভাবে প্রচারে নেমেছেন তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। রাজ্য সরকার তথা রাজ্যের শাসকদল যে নারী ক্ষমতায়নে বিশেষ নজর দিয়ে আসছে, সেই বার্তাই তুলে ধরার চেষ্টা চন্দ্রিমা-শশী-বিরবাহাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy