Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫
TMC

শুভেন্দু-গড়ে তৃণমূল তির

শুভেন্দু অধিকারীর খাসপাড়া কাঁথিতে দাঁড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হল তৃণমূল।

সৌগত রায়, শুভেন্দু অধিকারী এবং ফিরহাদ হাকিম।— ফাইল চিত্র

সৌগত রায়, শুভেন্দু অধিকারী এবং ফিরহাদ হাকিম।— ফাইল চিত্র

কেশব মান্না
শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৫৫
Share: Save:

সদ্য বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারীর খাসপাড়া কাঁথিতে দাঁড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হল তৃণমূল। দল ছাড়ার দিন থেকে একাধিক সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বাছাই করা শব্দে বিরোধিতার সুর চড়িয়েছেন শুভেন্দু। কাঁথিতে দাঁড়িয়ে বুধবার শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘ধান্দাবাজ’ বলে আঙুল তুলেছেন রাজ্য তৃণমূলের নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, শুভেন্দু তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র নন্দীগ্রামের মানুষের সঙ্গেও ‘প্রতারণা’ করেছেন।

তৃণমূলে শুভেন্দুর অন্তিম পর্বেই কাঁথির এই সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। সেইমতো এ দিন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের নেতৃত্বে প্রথমে কাঁথি শহরে মিছিল হয়। তার পরে ডরমিটরি মাঠে সভা। ভিড় হয়েছিল বিস্তর।

তবে অধিকারী পরিবারের কাউকেই মিছিল বা সমাবেশে দেখা যায়নি। শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী এবং এক ভাই দিব্যেন্দু তৃণমূলের সাংসদ। তার উপরে শিশিরবাবুই তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাপতি। শুভেন্দুর আর এক ভাই সৌমেন্দু কাঁথি পুরসভার প্রশাসক। কেন তাঁরা ছিলেন না? শিশিরবাবুর বক্তব্য, পায়ের ব্যথার কারণে চিকিৎসকের পরামর্শে সপ্তাহ তিনেক বাড়িতেই। আর দিব্যেন্দুর দাবি, তিনি কোনও ‘আমন্ত্রণ’ পাননি। যদিও জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরি বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি-সহ দলের সমস্ত পদাধিকারীকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল।’’ কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ প্রশ্ন, শিশিরবাবু যেখানে দলের জেলা সভাপতি, সেখানে দলের কর্মসূচিতে তাঁদের আলাদা করে আমন্ত্রণ জানাতে হবে কেন? তা ছাড়া, এ দিনের সমাবেশ-মঞ্চ ছিল অধিকারীদের বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’ থেকে কার্যত ঢিল
ছোড়া দূরে।

আরও পড়ুন: শুধু আবেদনপত্র নয়, ছবি তুলে আঙুলের ছাপ দিলে তবেই স্বাস্থ্যসাথী

আরও পড়ুন: সঙ্গীত মেলাতেও মমতার ‘অস্মিতা’

শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে মন্ত্রী ফিরহাদ বলেন, ‘‘আপনি নন্দীগ্রামের আন্দোলনে ছিলেন আর সেই নন্দীগ্রামের মানুষের সঙ্গেই প্রতারণা করলেন!’’ শুভেন্দুকে ‘ধান্দাবাজ’ বলে ফিরহাদের মন্তব্য, ‘‘এত দিন গাঁধীবাদী আদর্শ নিয়ে চলার পরে হয় কোনও ধান্দাবাজি কিংবা জেল খাটার ভয়ে অথবা অন্য কোনও উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের আশায় গাঁধীজির হত্যাকারীদের হাত ধরলেন।’’

সাংসদ সৌগতবাবুর কথায়, ‘‘শুভেন্দু বিশ্বাসঘাতক!’’ তিনি বলেন, ‘‘অভিষেককে সঙ্গে নিয়ে শেষ বার বৈঠকে আমার সামনে শুভেন্দু বলেছিলেন, অভিষেকের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও অভিযোগ নেই। তার পরেই বক্তৃতা করে বলছেন, তোলাবাজ ভাইপো হটাও! এই রকম বিশ্বাসঘাতক, মীরজাফরকে মানুষ ক্ষমা করবে না!’’

নন্দীগ্রামের আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা শুভেন্দু যে ভাবে তুলে ধরছেন, তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা এ দিন তা-ও নস্যাৎ করে দেন। সৌগতবাবু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি নন্দীগ্রামে না যেতেন, তবে সেখানকার আন্দোলন ভারতব্যাপী ছড়িয়ে পড়ত না। নন্দীগ্রামের আন্দোলন আবু সুফিয়ানদের মতো স্থানীয় নেতারাই সংগঠিত করেছেন।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘শুভেন্দু যখন ২০০১-এ বিধানসভা ভোটে মুগবেড়িয়া এবং ২০০৪-এর লোকসভা ভোটে তমলুকে হেরে গিয়েছেন, তখনও অখিল গিরি কিন্তু বিধায়ক।’’ রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, ‘‘কাঁথিতে তৃণমূল নন্দীগ্রাম-সহ অন্য অনেক জায়গা থেকেই লোক এনেছিল। ওখানকার মানুষও তা জানেন।’’

বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে আজ, বৃহস্পতিবার কাঁথিতে পদযাত্রা করবেন শুভেন্দু। কাঁথি শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে জনসভাও করবেন তাঁরা। তার আগে এ দিন বিকেলে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের সঙ্গে কলকাতায় বৈঠক করেন শুভেন্দু। মুকুলবাবু বলেন, ‘‘শুভেন্দু সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন। তবে কাঁথিতে শুভেন্দু যে কী, সেটা তৃণমূল আজ বুঝে যাবে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Suvendu Adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy