প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলাম নন, বরং ভাঙড় উদ্ধারে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লার সঙ্গে বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্তের উপরেই ভরসা রাখছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সে কারণেই ভাঙড়ে শওকতের সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সব্যসাচীকে। তৃণমূলের একাংশ বলছে, দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে আর ভাঙড় হাতছাড়া করতে চাইছেন না শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আরাবুলের পরিবর্তে শওকতের সঙ্গী এ বার সব্যসাচী।
২০২১ সালে ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রে রেজাউল করিমকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। রাজনীতির বৃত্তে যাঁরা ঘোরাফেরা করেন, তাঁদের অনেকেই মনে করেন, ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর নওশাদ সিদ্দিকি নয়, আসলে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বই হারিয়েছিল করিমকে। তার পর ক্রমেই ভাঙড়ে নিজেদের ঘাঁটি শক্তিশালী করেছে আইএসএফ। প্রভাব বেড়েছে নওশাদের। মনোনয়ন পর্বে সেই প্রভাব অনেকটাই প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূল এবং আইএসএফের সংঘাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভাঙড়। দু’পক্ষই একে অন্যের দিকে আঙুল তুলেছে। এ বার আইএসএফের প্রভাব খর্ব করতে সব্যসাচীর উপরেই আস্থা রাখলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন:
এর পরেই প্রশ্ন উঠছে, এককালে ভাঙড়ের রাশ থাকত যাঁর হাতে, সেই আরাবুলকে কেন পঞ্চায়েত ভোট সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হল না? তৃণমূলেরই একাংশ বলছে, শওকতের সঙ্গে আরাবুলের ঠান্ডা লড়াই দলকে বিপাকে ফেলতে পারে বুঝেই এই সিদ্ধান্ত। দীর্ঘ দিন ভাঙড়ে তৃণমূলের সংগঠন সামলেছেন আরাবুল। এ বার সেখানে পঞ্চায়েত ভোট সামলানোর দায়িত্ব পেয়েছেন শওকত। দু’জনের দ্বন্দ্ব যাতে পঞ্চায়েত ভোটে প্রভাব ফেলতে না পারে, সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, সব্যসাচী দীর্ঘ ১০ বছর ভাঙড় লাগোয়া রাজারহাট নিউটাউনের বিধায়ক ছিলেন। ভাঙড়ের স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত। কর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে। আবার শওকতের সঙ্গে তাঁর কোনও দ্বন্দ্বও নেই। মূল দায়িত্ব সামলাবেন শওকত। তাঁকে সাহায্য করতে পারবেন সব্যসাচী।
২০১৯ সালের বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সব্যসাচী। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পর তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। পুরভোটে দাঁড়িয়ে জিতে ফের বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান হয়েছেন। এ বার তাঁকেই আবার ভাঙড়ের দায়িত্ব দিল দল। ভাঙড় ফেরাতে কতটা সাহায্য করতে পারেন তিনি, তা বলবে সময়।