তৃণমূল ছাড়ার দিনে। ফাইল চিত্র
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন দেখতে দেখতে চার মাস হতে চলল। কিন্তু তিনি এখনও বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য রয়ে গিয়েছেন। পদ্মের ওয়েবসাইটে জ্বলজ্বল করছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর নাম ও ফোন নম্বর। জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্তকুমার রায় আর বালুরঘাটের বিধায়ক অশোক লাহিড়ির মাঝেই রয়েছেন রাজীব। এই কমিটি বিজেপির ক্ষেত্রে যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ। দলের সংবিধান অনুযায়ী, এর উপরে রয়েছে শুধু সংসদীয় বোর্ড। যে জাতীয় কর্মসমিতিতে রাজীবের নাম রয়ে গিয়েছে তাতে রয়েছেন স্বয়ং অমিত শাহ থেকে নরেন্দ্র মোদীরা।
তৃণমূল ছাড়ার জল্পনা, দূরত্ব তৈরি হওয়া, বেসুরো কথা বলা— এ সব লম্বা সময় ধরে চলেছিল ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে। রাজীবের বিজেপিতে যোগদানও ছিল নাটকীয়। কথা ছিল ৩১ জানুয়ারি হাওড়ার ডোমজুড়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর হাত থেকে পতাকা নেবেন। কিন্তু শেষবেলায় শাহর সফর বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু রাজীবের যোগদান আটকায়নি। সেই সময়ে বিজেপিতে থাকা মুকুল রায়ের অভিভাবকত্বে আরও কয়েকজনের সঙ্গে রাজীব একদিন আগেই ৩০ জানুয়ারি দিল্লিতে শাহর বাড়িতে গিয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। কলকাতায় চাটার্ড বিমান পাঠিয়েছিলেন শাহ।
দিল্লি যাওয়ার আগে তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্রেমে-বাঁধানো ছবি হাতে শেষবার বিধানসভা থেকে বেরিয়েছিলেন রাজীব। ভেবেছিলেন বিজেপি বিধায়ক হয়ে ফেরত আসবেন। কিন্তু সে স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। ভোটপর্ব মেটার পর থেকেই ডোমজুড়ে পরাজিত বিজেপি প্রার্থী রাজীব ক্রমশ গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব এবং পুরনো দল তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন। অবশেষে তা সম্পূর্ণ হয় ৩১ অক্টোবর। ফেরেন তৃণমূলে। তবে সেটাও কলকাতায় নয়। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় রাজীব পুরনো দলের পতাকা ফের হাতে নেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে।
হিসাব মতো ৩০ জানুয়ারি থেকে ৩১ অক্টোবর ন’মাসের ব্যবধান। তবে রাজীব সেই ন’মাস বিজেপিতেই ছিলেন, তা বলা যাবে না। ২মে ফল ঘোষণার পর থেকে গেরুয়া শিবিরে রাজীবের ছায়াও সে ভাবে দেখা যায়নি। তৃণমূলে ফিরলেও এখনও পর্যন্ত বাংলায় কোনও সাংগঠনিক পদ পাননি রাজীব। তাঁকে ত্রিপুরার পর্যবেক্ষক করেছে শাসকদল। সেই দায়িত্ব নিয়ে এখন উত্তর-পূর্বের বিজেপি শাসিত রাজ্যে ঘাসফুল ফোটানোর দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। কিন্তু তখনও পদ্মের ওয়েবসাইটে তিনি রয়েই গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় কর্মসমিতিতে তিনি বিরাজমান।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে গেরুয়া শিবির খুবই গুরুত্ব দিয়েছিল রাজীবকে। খুব কম সময়ের মধ্যে তাঁকে জাতীয় কর্মসমিতির অন্তর্ভুক্ত করে নেন পদ্মের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু রাজীবকে ধরে রাখা যায়নি। দলের অভ্যন্তরে রাজীবকে নেওয়া ‘বাড়াবাড়ি’ ভুল সিদ্ধান্ত বলে সমালোচিত হয়েছিল। সেই ভুল সংশোধনের সুযোগ পায়নি বিজেপি। একই ভাবে ওয়েবসাইটে নাম থেকে যাওয়ার ভুলও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংশোধিত হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy