Advertisement
০৯ অক্টোবর ২০২৪
Mamata Banerjee

পুরনোদের ‘লড়াই’ মনে করিয়ে নবীনদের বার্তা

লোকসভার আগে বৃহস্পতিবার দলের ‘বিশেষ অধিবেশন’-এ পথনির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তবে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক নেতাজি ইনডোরের ওই সভায় আসেননি।

Mamata Banerjee.

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৫:১৮
Share: Save:

কিছু বিষয়কে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটু সরে আছেন কি না, এই জল্পনার মধ্যেই দলের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের ‘নতুন তৃণমূল’ স্লোগানের পাশে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাঁর ‘অনেক লড়াইয়ের সঙ্গী’দের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।

লোকসভা নির্বাচনের আগে বৃহস্পতিবার দলের ‘বিশেষ অধিবেশন’-এ পথনির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তবে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক নেতাজি ইন্ডোরের ওই সভায় আসেননি। চোখে সমস্যার কারণে তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে ছিলেন। সভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, অভিষেকের চোখে আঘাত লেগে রক্তপাত হয়েছে। হাসপাতালে গিয়েছেন। সেই সঙ্গেই ৬-৭ মাস ধরে ১০০ দিনের বকেয়া নিয়ে অভিষেক যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, এ দিন তাঁর রূপরেখা কিছুটা বদলে দিয়েছেন মমতা। প্রথমে দিল্লি ও পরে রাজভবনের সামনের ধর্না সেরে অভিষেক ঘোষণা করেছিলেন, এই ধারায় কর্মসূচি চলবে নভেম্বরের শুরু থেকেই। মমতা অবশ্য এ দিনের সভা থেকে নভেম্বর ও ডিসেম্বরের পাঁচ দিনের কর্মসূচি স্থির করে দিয়েছেন। সেই সঙ্গেই ডিসেম্বরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে তৃণমূলের সংসদীয় দল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, আগেও কর্মসূচি নিয়ে অভিষেকের একটি সিদ্ধান্ত বদলে দিয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। রাজ্যে ১০০ দিনের কাজে বকেয়া টাকার দাবিতে বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক। মমতা তা সরিয়ে ব্লক স্তরে অবস্থান-বিক্ষোভ করতে বলেন। এ বার মমতার ঘোষণা, বিধানসভায় ২৮, ২৯ ও ৩০ নভেম্বর আম্বেডকরের মূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখাবেন তৃণমূলের বিধায়কেরা। আর ২ ও ৩ ডিসেম্বর বুথে বুথে মিছিল, সভা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর দেখা না পেলে রাস্তাই আমাদের রাস্তা দেখাবে। পেটালে পেটাবে! অনেক মার খেয়েছি।’’ এই প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ দিনই জয়নগরে কটাক্ষ করেছেন, ‘‘‘রাজঘাটে তো গিয়েছিলেন। পুলিশ এমন দৌড় করিয়েছিল যে, কৃষি ভবনে ঢুকে বসে ছিলেন! আবার যান না দিল্লি, আবার দৌড় করাব! তবে দিল্লি যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী এক বার জয়নগর থেকে ঘুরে যান।’’

নির্বাচনের মুখে দলের প্রার্থী বাছাইয়ের চর্চায়ও এ দিন বিশেষ উপাদান যোগ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। জনপ্রতিনিধি বাছাইয়ে নবীনদের তুলে আনা প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু না বললেও তাঁর ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। কথা প্রসঙ্গে দমদমের সাংসদ সৌগত রায়ের নাম করে তিনি বলেন, ‘‘সৌগতদা মাঝেমাঝে বলেন, আমার বয়স হয়ে গিয়েছে। কীসের বয়স? মানুষের মনের কোনও বয়স নেই। যত দিন বাঁচবেন, কাজ করে যাবেন। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মতো বাঁচবেন! ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াই করতে হবে।’’ শাসক শিবিরের একাংশ মনে করাচ্ছে, দলের কাজে ও পদে বয়সের সীমা বেঁধে দেওয়ার প্রস্তাব এক সময়ে দিয়েছিলেন অভিষেক।

সভায় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের এ দিন তৃণমূলের অতীতও মনে করিয়ে দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘ববি ( ফিরহাদ হাকিম) বলছিল, দিদি কোমরে ব্যাথা। জিজ্ঞেস করলাম, কেন? বলল, ওই যে মার খেয়েছিলাম। ববি, বক্সী (সুব্রত বক্সী), বালু ( জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক) অনেক ডান্ডা খেয়েছে। ওরা আমার অনেক লড়াইয়ের সঙ্গী।’’ সংগঠনের প্রসঙ্গে নতুন-পুরনো চর্চার কথা টেনে মমতা এ দিন বলেন, ‘‘নতুনেরা পুরনোদের সম্মান দেবেন। পুরনোরা নতুনদের কাছে টেনে নেবেন।’’ সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে দলের অন্দরে সম্প্রতি যে আলোড়ন শুরু হয়েছে, সেই সম্পর্কে মমতা বলেন, ‘‘কেউ বাদ গেলে মনে করবেন না, বাইরে চলে গিয়েছেন।’’ তাঁর নির্দেশ, ‘‘কারও অনুমতির জন্য বসে থাকবেন না। সবাইকে নিয়ে কাজ করবেন। আমি কাউকে বাইরে রাখতে চাই না।’’

সমান্তরাল কাজের কারণে ‘বঙ্গজননী’ সংগঠনটিকেও এ দিন দলের মহিলা শাখার সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE