Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

মমতা বর্ধমানে, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নেতা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন বর্ধমানে গিয়ে কর্মিসভা করছেন, কলকাতায় গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন তাঁরই দলের জেলা পরিষদ সদস্য। দলের কাজকর্মে তিনি হতাশ, এই অভিযোগ তুলে দিন কয়েক আগে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠি পাঠান শান্তি চাল নামে কালনার ওই নেতা। শুক্রবার কলকাতায় দলের রাজ্য দফতরে শান্তিবাবুকে পাশে বসিয়ে তাঁকে দলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৩১
Share: Save:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন বর্ধমানে গিয়ে কর্মিসভা করছেন, কলকাতায় গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন তাঁরই দলের জেলা পরিষদ সদস্য। দলের কাজকর্মে তিনি হতাশ, এই অভিযোগ তুলে দিন কয়েক আগে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে চিঠি পাঠান শান্তি চাল নামে কালনার ওই নেতা। শুক্রবার কলকাতায় দলের রাজ্য দফতরে শান্তিবাবুকে পাশে বসিয়ে তাঁকে দলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। যদিও নিজেই দল ছাড়ায় দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁকে জেলা পরিষদ সদস্যের খোয়াতে হতে পারে।

রাহুলবাবুর দাবি, “শান্তিবাবুর যোগদানে বিজেপি শক্তিশালী হল। কারণ, পঞ্চায়েতের এক জন প্রতিষ্ঠিত নেতা তৃণমূলে পদত্যাগপত্র দিয়ে আমাদের দলে এলেন। তৃণমূলের উপর থেকে যে তাদের কর্মীদেরই মন উঠে যাচ্ছে, তা এতে স্পষ্ট হল।” তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুরে কর্মিসভা করার দিনই সেই জেলার এক নেতার কলকাতায় এসে বিজেপি-তে যোগদান তাৎপর্যপূর্ণ বলে রাহুলবাবুর দাবি। এ দিনই সোম মণ্ডল নামে এক আইনজীবী এবং প্রিন্স পাঠক নামে আম আদমি পার্টির এক জাতীয় পরিষদ সদস্য বিজেপি-তে যোগ দেন।

তৃণমূলের পুরনো কর্মী শান্তিবাবু দলের বর্ধমান জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের অনুগামী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত পঞ্চায়েত ভোটে জিতে জেলা পরিষদের সদস্য হন তিনি। গত সেপ্টেম্বরে তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই এক পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষা শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, সেই অভিযোগ তোলার জন্য দলের জেলা নেতাদের কাছে আর্জি জানাচ্ছিলেন শান্তিবাবু। সম্প্রতি কালনায় দলের বৈঠকে স্বপনবাবুর কাছে ফের সেই আর্জি জানিয়ে তিরস্কৃত হন তিনি। তার পরেই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।

শ্লীলতাহানির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে যাঁর বিরুদ্ধে, তাঁকে দলে নেওয়া হল কেন? বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুলবাবুর বক্তব্য, “আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ওঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। তৃণমূল দরকার পড়লেই বিরোধী স্বরকে স্তব্ধ করতে মিথ্যা মামলা করছে। অতএব ওই মামলার কোনও গুরুত্ব নেই।” শান্তিবাবুরও দাবি, “রাস্তা তৈরিতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় তৃণমূলের একটি অংশ ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করান। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সেই অভিযোগ তুলে নিতে বললেও জেলা নেতারা গা করেননি।” তাঁর খেদ, “১৬ বছর তৃণমূলে ছিলাম। উদয়াস্ত পরিশ্রম করেছি। কিন্তু দল থেকে পাওনা শুধু হতাশা। তাই এই সিদ্ধান্ত নিতে হল।”

স্বপন দেবনাথ অবশ্য শান্তিবাবুর দলত্যাগকে আমল দিতে নারাজ। তিনি বলেন, “লোকসভা ভোটেই যাঁর বুথে দল পিছিয়ে পড়ে, তাঁর দলত্যাগ আর কী প্রভাব ফেলবে! দল ছাড়ার আগে কিছু না কিছু অভিযোগ করতেই হত, তাই এ সব কথা বলছেন।” শান্তিবাবুর বিরুদ্ধে যিনি শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছিলেন, কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সেই কর্মাধ্যক্ষার দাবি, “তর্কাতর্কির সময়ে শ্লীলতাহানি করেছিলেন শান্তিবাবু। কারও মদতে অভিযোগ করিনি।”

শান্তিবাবুকে কি দলত্যাগ বিরোধী আইনে জেলা পরিষদের সদস্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে? মন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া, “মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন। সেই ভোট পেয়ে উনি জিতেছেন। ওঁর নিজেরই পদত্যাগ করা উচিত।” শান্তিবাবু অবশ্য বলেন, “মানুষ আমায় ভোট দিয়েছেন। তাই নিজে পদত্যাগ করব না।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy