পার্থ-কাণ্ডে মুখ খুললেন জহর সরকার
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে নগদ টাকা ও গয়না উদ্ধারের পরে তিনি যে অস্বস্তিতে তা স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। টিভিতে নগদ টাকা গয়না উদ্ধারের ছবি দেখার পরেই তাঁর বাড়ির লোকেরা তাঁকে রাজনীতি ছাড়তে বলেন বলেও সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন জহর। তবে তিনি যে এখনই রাজনীতি ছাড়বেন না সেটাও স্পষ্ট করেছেন।
জহরের দাবি, প্রত্যেক রাজনৈতিক দলে টাকা তোলার লোক থাকে। রাজনীতির জন্য টাকার দরকারও হয়। কিন্তু এক শ্রেণি যে ভাবে টাকা তুলেছে তাতে তৃণমূলের শরীরের একটা অংশ পচে গিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হেফাজতে থাকা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘পার্থবাবুকে তো শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে দেখেছি। কথাও বলেছি অনেক বার। টিভিতে দেখে আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ও রকম ভদ্রলোকের ইমেজ! তিনি কার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হচ্ছেন, তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু দুর্নীতির টাকা দিয়ে তাঁকে অলঙ্কৃত করা। এটা দেখলে কী রকম গা শিরশির করে।’’ বান্ধবীকে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়া নিয়েও একই রকম মন্তব্য করেন জহর। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘একটি শ্রেণি, সব পেশাতেই আছে, যারা ধান্দবাজি করতে এসেছে। একটি শ্রেণি সব জায়গাতেই করে। রাজনীতিতেও করে। কিন্তু যে ভাবে করল এ বার সেটা সত্যিই দৃষ্টিকটু।’’ যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদের চিহ্নিত করা গেলে তৃণমূল নেতৃত্বের উচিত দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া, এমন মন্তব্যও করেন তিনি। তার পরেই বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের মোহর লাগিয়ে যত ইচ্ছা টাকা বানাবো, বান্ধবীর নামে ফ্ল্যাট বানাবো, গাড়ির পরে গাড়ি কিনব, এগুলো মানতে পারছি না।’’
সোমবার জহর জানান, তিনি রাজনীতির মানুষ নন। তাঁকে বক্তা হিসাবে তৃণমূল রাজ্যসভার সাংসদ করে। একইসঙ্গে দাবি করেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন দেশের জন্য খুবই জরুরি। এর পরে দেশে আর নির্বাচন না-ও হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি জানান, মোদীর বিরুদ্ধে লড়াই দেওয়ার মতো একমাত্র মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জহর বলেন, ‘‘মানুষ এখনও বিশ্বাস করে, ভদ্রমহিলা লড়ে দেখাতে পারবেন। আমি এখনও বিশ্বাস করি, উনি পারবেন। যদিও কখনও মনে হয় পারবেন না, আমার আর থাকার দরকার নেই। আমি তো রাজনীতি করতে আসিনি।’’ তবে এখনই রাজনীতি যে তিনি ছাড়বেন না তা স্পষ্ট করে জহর বলেন, ‘‘আত্মসম্মান যদি না রাখতে পারি, আমি ছেড়ে দেব। এখনও অবধি আমায় সেই সম্মান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু হুট করে ছেড়ে দিলে বলবে, মাথাগরম কিংবা বলবে নাটক করছে। বলবে, পারল না।’’ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যই যে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে সেই দাবি করে বলেন, ‘‘আমার এক মাত্র টার্গেট হল এই স্বৈরাচারী শক্তি। এই আদর্শটির সঙ্গে মিলিয়ে দেখছি। যে আদর্শ মেনে চলবে, তার সঙ্গে থাকতে রাজি আছি। মানুষ এখনও বিশ্বাস করে, ভদ্রমহিলা লড়ে দেখাতে পারবেন। আমি এখনও বিশ্বাস করি, উনি পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy