কাঁথির অরবিন্দ স্টেডিয়ামে জেলা সভাধিপতির মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের খাওয়াদাওয়া। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
সরকারি স্টেডিয়াম। খেলাধুলোর জন্যই তা ব্যবহৃত হয়, কিংবা সরকারি অনুষ্ঠান। ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে স্টেডিয়াম ভাড়া দেওয়ার নিয়ম নেই। অথচ সেই খেলার মাঠেই পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিকের মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের খাওয়াদাওয়া হল।
উত্তমের মা সন্ধ্যা বারিকের শ্রাদ্ধাদির কাজ বৃহস্পতিবার হয়েছে কাঁথির দেশপ্রাণ ব্লকে পৈতৃক বাড়িতে। আর শুক্রবার মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়েছিল কাঁথি শহরের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে। প্রায় ৮ হাজার লোক খেয়েছেন। জেলার ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের দলীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি তৃণমূলের সাংগঠনিক পদাধিকারীরা ছিলেন। এসেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারও। কিন্তু সরকারি খেলার মাঠে এমন ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিল কে, উঠেছে প্রশ্ন।
কাঁথি মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার এক আধিকারিক জানালেন, অরবিন্দ স্টেডিয়াম পরিচালনার জন্য আগে কমিটি ছিল। কমিটির সভাপতি জেলাশাসক এবং সম্পাদক মহকুমাশাসক। কমিটিতে সরকারের পাঁচ প্রতিনিধিও ছিলেন। ২০১৬ সালে ওই কমিটি সর্বশেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল— মাঠের মূল অংশ শুধুমাত্র খেলাধুলার জন্য ব্যবহার করা হবে। স্কুলস্তরের খেলায় কোনও ভাড়া নেওয়া হবে না। তবে কোনও ক্লাব খেলার আয়োজন করলে, ৫০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। আর মূল মাঠের চারদিকের অংশ শুধুমাত্র সরকারি মেলা বা অন্য অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করা যাবে। তবে ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে স্টেডিয়ামের কোনও অংশই ব্যবহার করা যাবে না।
সেই নিয়ম ভেঙে এ দিন মাঠের মূল অংশের এক দিকে প্যান্ডেল খাটিয়ে খাওয়ানোর আয়োজন করা হয়। মূল মাঠে ছিল গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। কাঁথির বাসিন্দা তথা মহকুমা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক নিশীথকুমার মাইতির কটাক্ষ, ‘‘এমনিতেই গর্ত আর হাঁটু সমান ঘাসে ভর্তি হয়ে ওটা আর খেলার মাঠ নেই। শ্মশান হয়ে গিয়েছে। সেখানে শ্রাদ্ধের খাওয়াদাওয়া হবে এটাই স্বাভাবিক।’’ কাঁথির বিজেপি সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারীও বলেন, ‘‘শহরে অনেক ফাঁকা মাঠ ছিল। সেখানে অনুষ্ঠান করা যেত। এ হল ক্ষমতার অপব্যবহার।’’
তৃণমূলের দাপুটে নেতা উত্তম অবশ্য এতে অন্যায় কিছু দেখছেন না। তাঁর দাবি, ‘‘আগে অনেকেই এ রকম অনুষ্ঠান করেছেন। সরকারি নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট ভাড়ার বিনিময়ে স্টেডিয়ামে লোক খাওয়ানো হয়েছে। তা নিয়ে কে, কী বলছে সে সবে গুরুত্ব দেব না।’’ উল্লেখ্য, এর আগে এখানে জেলা বইমেলা, তাঁত মেলার মতো সরকারি কর্মসূচি হয়েছে, ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান নয়।
তবে এ নিয়ে মুখে কুলুপ প্রশাসনিক কর্তাদের। কাঁথির মহকুমাশাসক শৌভিক ভট্টাচার্যের মোবাইল বন্ধ ছিল। কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সৌভিক চট্টোপাধ্যায়। ফোন ধরেননি জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেরও জবাব দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy