তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
বুধবার সকালে কলকাতার সল্ট লেকের সিজিও কমপ্লেক্সে (যেখানে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির দফতর অবস্থিত) পৌঁছলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্কুলে নিয়োগ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিষেককে তলব করেছিল ইডি। বুধবার সকাল ১১টা ১২ মিনিটে বাড়ি থেকে ইডির দফতরের উদ্দেশে রওনা দেন অভিষেক। ১১টা ৩৪ মিনিটে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন তিনি। গাড়ি নিয়ে সোজা সিজিও কমপ্লেক্সে ঢুকে যান অভিষেক। গাড়ির পিছনের আসনে বসেছিলেন তিনি। গাড়ি নিয়ে ভিতরে ঢোকার সময় জানলার কাচ না নামিয়েই হাতজোড় করলেন অভিষেক। ইতিমধ্যেই সিজিও কমপ্লেক্সের চারদিকে পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপ তৈরি করা হয়েছে।
নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় তাঁকে নিয়ে ওঠা অভিযোগের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত যাতে ইডি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে না পারে, সে ব্যাপারেই আদালতে রক্ষাকবচ চেয়ে আবেদন করেছিলেন অভিষেক। মঙ্গলবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলাটির শুনানি হয়। আবেদন শোনার পর বিচারপতি জানান, ইডি এই বিষয়ে আগেই মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং তারা সেই প্রতিশ্রুতি এখনও পর্যন্ত পালন করেছে। তাই নতুন করে কোনও রক্ষাকবচের প্রয়োজন নেই অভিষেকের। শুনানির সময় ‘গ্রেফতারি নয়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকার’ আশ্বাস দিয়েছেন ইডির কৌঁসুলিও।
এই প্রসঙ্গে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এক্স (সাবেকি টুইটার) হ্যান্ডলে বুধবার সকালে একটি পোস্ট করা হয়। যেখানে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। অভিষেকের একটি বক্তব্যও এই পোস্টে তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে অভিষেকের মন্তব্য, ‘‘আমার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করছে বিজেপি। সিবিআই, ইডির মাধ্যমে হুমকি দিয়ে, ভয় দেখিয়ে আমাকে দমানো যাবে না। জনগণের সেবা থেকে আমাকে সরানো যাবে না। জনগণের কাছে পৌঁছনো থেকে আমাকে আটকানো যাবে না।’’
বুধবার বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির বৈঠক দিল্লিতে। ‘ইন্ডিয়া’র ওই কমিটির সদস্য অভিষেক। কিন্তু সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠকে হাজির থাকতে পারলেন না অভিষেক। যদিও অভিষেক যে দিল্লিতে যেতে পারবেন না তার ইঙ্গিত মঙ্গলবার তৃণমূলের তরফে একটি সাংবাদিক বৈঠকে দিয়েছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং পার্থ ভৌমিক। সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ বলেন, ‘‘উনি (অভিষেক) তদন্তের মুখোমুখি হতে ভয় পান না। সেটা আগামিকাল আপনারা দেখে নেবেন।”
ইডি যে আবার তলব করেছে তা নিজেই সমাজমাধ্যমে লিখে জানিয়েছিলেন অভিষেক। রবিবার নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘ইন্ডিয়ার সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক ১৩ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে, যে কমিটির আমিও এক জন সদস্য। কিন্তু ইডি ওই দিনই আমাকে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস দিয়েছে। এই মাত্র সেই নোটিস পেলাম। ৫৬ ইঞ্চি ছাতির কাপুরুষতা ও অন্তঃসারশূন্যতা দেখে বিস্মিত না হয়ে পারছি না।’’
প্রসঙ্গত, অভিষেককে ইডির তলব নিয়ে সোমবারই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেককে সারা ক্ষণ বিরক্ত করা হচ্ছে। অকারণ হেনস্থা করা হচ্ছে ওকে। কোনও প্রমাণ নেই।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘বার বার অভিষেককে নিম্ন আদালত, হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে ছুটতে হচ্ছে বিচারের জন্য! কী হয়নি ওর বিরুদ্ধে?’’
মঙ্গলবার ১১ দিনের বিদেশসফরের জন্য কলকাতা বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়েছেন মমতা। এ বারে মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফরের তালিকায় রয়েছে দু’টি দেশ। দুবাই এবং স্পেন। প্রথমে দুবাই যাবেন। তার পর সেখান থেকে যাবেন স্পেনে। এই সফর সেরে ফিরবেন আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর। মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন শিল্পপতিদের একটি প্রতিনিধিদল। সূত্রের খবর, বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আগে বিদেশি লগ্নি আনাই ১১ দিনের এই সফরের লক্ষ্য হতে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy