শুভেন্দু অধিকারী ও সৌমেন মহাপাত্র। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ফলে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও কাঁথি উত্তর ও দক্ষিণ দু’টি আসনেই ফুটেছে পদ্ম। এ বার তাই কাঁথির রাজনীতিতে শাসকদলের দাপট বাড়িয়ে অধিকারীদের ক্ষমতা খর্ব করতে পাল্টা রণনীতি তৈরি করছে তৃণমূল। সেই রণনীতিতে প্রথম পদক্ষেপ হতে চলেছে কাঁথি পুরসভা দখলের চেষ্টা। এই পুরসভা গত প্রায় ৩৫ বছর ধরে কার্যত অধিকারী পরিবারের দখলে ছিল বলেই অভিযোগ তৃণমূল। দীর্ঘ সময় পুরপ্রধানের দায়িত্বে থেকেছেন এখন কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী এবং তাঁর ছোট ছেলে সৌমেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যোগ দেওয়া পরে পরেই এই পুরসভা থেকে বিছিন্ন হয়ে গিয়েছে অধিকারী পরিবার। বিধানসভা ভোটের আগে আগে প্রশাসক পদে থাকা সৌমেন্দুকে সরিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। এখন সেই পুরসভায় ভোট হলে যাতে অধিকারী পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠদের পরাজিত করা যায় তার পরিকল্পনাই চলছে তৃণমূলে। আর সেই কৌশল সফল করার উদ্যোগে বেশি করে সামনে রাখা হচ্ছে জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে। সঙ্গে আছেন অধিকার পরিবারের বিরোধী হিসেবে পরিচিত আর এক মন্ত্রী অখিল গিরিকে।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই লক্ষ্যেই শনিবার কাঁথি পুরসভার বর্তমান কো-অর্ডিনেটরদের নিয়ে বৈঠক করেন মৎস্যমন্ত্রী অখিল, সেচমন্ত্রী সৌমেন ও প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতির্ময় কর। তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এই নেতারা সকলেই বরাবর অধিকারী পরিবারের বিরোধী বলেই পরিচিত। বিধানসভা ভোটের পরে পরেই কাঁথি পুরসভার নতুন প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়েছেন অধিকারী পরিবারের বিরোধী হিসেবে পরিচিত সিদ্ধার্থ মাইতি। মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে তিনিও ছিলেন। সূত্রের খবর, কী ভাবে কাঁথি পুর এলাকায় নাগরিক পরিষেবায় জোর দিয়ে পুরভোটের আগে তৃণমূলের পক্ষে জমি মজবুত করা যায় তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে ওই বৈঠকে পুরভোট নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলেই দাবি করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতির্ময়। তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভা এলাকায় বেশ কিছু সার্ভে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়।’’ তবে দলেরই একাংশ মনে করছে ওই পুরসভা নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের তাগিদ রয়েছে বলেই কো-অর্ডিনেটরদের সঙ্গে ২জন মন্ত্রিসভার সদস্য বৈঠকে বসেন।
কাঁথি এলাকার রাজনীতি মূলত পুরসভা এলাকা কেন্দ্রিক। পুরসভা এলাকা অবশ্য কেবলমাত্র কাঁথি দক্ষিণ বিধানসভার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে তার প্রভাব পাশের বিধানসভা কাঁথি উত্তরেও রয়েছে। তাই পুর পরিষেবা বা়ড়িয়েই কাঁথির মাটিতে অধিকারীদের অধিকার আলগা করতে চাইছে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy