Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
TMC MLA Humayun Kabir

ফের বিতর্কে হুমায়ূন কবীর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও ‘বেপরোয়া’ বিধায়ককে বাগে আনতে নজর দলের

সোমবার কালীঘাটে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট নির্দেশ দেন, দলের নেতারা যেখানে খুশি যেতে পারবেন, বিবৃতি দিতে পারবেন না। দলীয় শৃঙ্খলা না মানলে প্রথমে শো কজ় করা হবে। এ বার হুমায়ূন কবীরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার ভাবনা শুরু হয়েছে।

TMC highest leadership OF TMC keeping their eyes on Bharatpur MLA Humayun Kabir

তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ূন কবীর। —ফাইল ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৯
Share: Save:

ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ূন কবীরের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবার কালীঘাটে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট নির্দেশ দেন, দলের নেতারা যেখানে খুশি যেতে পারবেন কিন্তু বিবৃতি দিতে পারবেন না। দলীয় শৃঙ্খলা না মানলে প্রথমে শো কজ় করা হবে। সংশ্লিষ্ট নেতাকে জবাব দিতে হবে। পর পর তিন বার একই ঘটনা ঘটলে ওই নেতাকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তৃণমূলনেত্রীর সেই নির্দেশের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে দলীয় নেতৃত্বকে অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, সাংসদ। তিনি স্বাভাবিক ভাবেই দিল্লির দায়িত্বে থাকবেন। যে দিন সর্বভারতীয় সম্পাদক হন, সে দিনই দলের দু’নম্বর হয়ে যান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেকেরও নেত্রী, সকলের নেত্রী তিনিই।’’

হূমায়ুন আরও বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে কয়েক জন ঘিরে রয়েছেন, যে ক’জন নিজেদের পরিকল্পনার মধ্যে রেখেছেন, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কতটা ভাল চান, দীর্ঘমেয়াদি ভাবে পশ্চিমবঙ্গের শাসক হিসাবে তাঁকে দেখতে চান, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, যাঁরা দলটাকে গুলিয়ে দিতে চাইছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের জায়গা ঠিক রাখতে চাইছেন, কানে মন্ত্রণা দিচ্ছেন, ২০২৬ সালে তাঁরা জবাব পাবেন। আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতা মানি। তৃণমূল যদি আগামী দিনে আমাকে টিকিট না দেয়, বেঁচে থাকলে অপকর্মের জবাব দেব।’’ বিধানসভার বাইরে সংবাদমাধ্যমকে হুমায়ুন এমন কথা বললে তা পৌঁছয় বিধানসভার অন্দরে থাকা তৃণমূল পরিষদীয় দলের কাছে।

পরিষদীয় দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘আমরা হুমায়ূনের মন্তব্যের কথা জানতে পেরেছি। তার উপর দলের নজর রয়েছে। যথাসময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ প্রসঙ্গত, একদা অধীরের ভাবশিষ্য হুমায়ূন ছিলেন মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস নেতা। ২০১১ সালে রেজিনগর থেকে বিধায়ক হন। কিন্তু ২০১৩ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে প্রতিমন্ত্রী করেন মমতা। উপনির্বাচনে হেরে গেলে মুর্শিদাবাদের রাজনীতিতে তাঁর প্রভাব কমে। আর ২০১৫ সালে অভিষেক প্রসঙ্গে বিরূপ মন্তব্য করে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন হুমায়ূন। ২০১৬ সালে রেজিনগরে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে তৃণমূল প্রার্থী সিদ্দিকা বেগমকে তৃতীয় স্থানে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। যদিও জিততে পারেননি তিনি। এর পর কয়েক বছর কখনও কংগ্রেস, কখনও বিজেপিতে কাটিয়ে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন হয় হুমায়ূনের। এ বার নিজের পুরনো কেন্দ্র থেকে সরিয়ে তৃণমূল তাঁকে প্রার্থী করে ভরতপুরে। সেখানে জয়ী হয়ে বর্তমানে তিনি বিধানসভার সদস্য। লোকসভা ভোটের আগে বহরমপুরে অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রার্থীও হতে চেয়েছিলেন হুমায়ূন। এই বিষয়ে প্রকাশ্যে বিবৃতিও দিয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হতে পারেননি। লোকসভা ভোটের পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে বিরূপ মন্তব্য করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলছেন হুমায়ূন। তাই দলের নতুন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেছে। তৃণমূল পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিলেই পদক্ষেপ করবে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy