Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Sougata Roy on Bharat Jodo Yatra

বাংলায় কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রায় আমন্ত্রণ নেই তৃণমূলের, ‘বললেও যেতাম না’: সৌগত রায়

পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে বিজেপির বিরোধী সব রাজনৈতিক দল-সহ বাংলার বাম রাজনৈতিক দলগুলিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি শাসকদল তৃণমূলকে।

বাংলায় আয়োজিত কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় আমন্ত্রণ নেই শাসক দলের।

বাংলায় আয়োজিত কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় আমন্ত্রণ নেই শাসক দলের। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:২৭
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে আয়োজিত কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় আমন্ত্রণ জানানো হল না শাসকদল তৃণমূলকে। অথচ সেই যাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন খোদ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। কংগ্রেসের আমন্ত্রণপত্রের প্রাপ্তিস্বীকার করে সেলিম জানিয়েছেন, তাঁরা কী করবেন, দলে আলোচনা করেই সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদককে ‘সেলিমদা’ বলে সম্বোধন করে শুক্রবার চিঠি পাঠিয়েছেন অধীর। সেলিম ছাড়াও অন্য বাম দলগুলি যেমন আরএসপি, সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক— সব দলের নেতাকেই ২৩ জানুয়ারির ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রায় সামিল হতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এমনকি, চিঠি পাঠানো হয়েছে তুলনায় ছোট রাজনৈতিক দল পিডিএসের রাজ্য সম্পাদক সমীর পুততুণ্ডকেও। পৃথক ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে।

বাংলার শাসকদলকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হল না? বিশেষত, যখন এই কর্মসূচি বিজেপির বিরুদ্ধে? কংগ্রেস কি তা হলে তৃণমূলকে বিজেপির ‘দোসর’ মনে করছে? যেমন মনে করে সিপিএম-সহ বাম দলগুলি? বিজেপি এবং তৃণমূলকে এই কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলেই জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সংগঠন ইন-চার্জ নিলয় প্রামাণিক।

শনিবার কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় অবশ্য বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধী অনেক আগেই ভারত জোড়ো যাত্রায় সামিল হতে তৃণমূলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তা-ও দিল্লিতে। সেই সময় তৃণমূল স্পষ্ট জানিয়েছিল, তারা এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে না। আর তা ছাড়া আমরা তো জানি, বিজেপি বিরোধী যে কোনও আন্দোলনে তৃণমূলকে পাওয়া যাবে না। তাই আমরা বাংলার কর্মসূচিতে তাদের আমন্ত্রণ জানাইনি।’’

উল্লেখ্য, কার্সিয়াঙে আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রদেশ কংগ্রেসের ‘পাহাড় থেকে সাগর’ পদযাত্রা শেষ হওয়ার কথা। সেই সমাপ্তি পর্বেই অংশগ্রহণের জন্য সিপিএম-সহ বাম দলগুলিকে অনুরোধ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তৃণমূলকে আমন্ত্রণ না-জানানো প্রসঙ্গে দমদমের প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় আবার অন্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর সাফ কথা, ‘‘আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও আমরা যেতাম না!’’ পাশাপাশিই সৌগতের সংযোজন, ‘‘দিল্লিতে ভারত জোড়ো যাত্রায় সামিল হতে আমাদের সব সাংসদকেই কংগ্রেসের তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা সেখানেই সামিল হইনি! আমাদের সেই অবস্থান দেখেই হয়তো প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব বাংলার কর্মসূচিতে আমাদের দলকে আমন্ত্রণ জানাননি।’’

সৌগত এমন দাবি করলেও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের একটি সূত্র দাবি করছে, দিল্লিতে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় কিছুক্ষণের জন্য অংশ নিয়েছিলেন তৃণমূলের এক সাংসদ। যদিও সেই ঘটনার সত্যতা আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও পক্ষই স্বীকার করেনি।

২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে রাহুলের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ উপলক্ষ করেই জাতীয় রাজনীতিতে ফের কাছাকাছি আসার সুযোগ তৈরি হয়েছিল কংগ্রেস-তৃণমূলের। বিজেপির বিরোধী সব দলকে নিজের কর্মসূচিতে সামিল হতে রাহুল আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বেশ কিছু দল সাড়া দিলেও তৃণমূল স্পষ্ট করেই ওই কর্মসূচিতে সামিল না হওয়ার কথা জানিয়েছিল। যা থেকে অনেকে মনে করছেন, এটা স্পষ্ট যে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হবে না। সেই কারণেই বাংলায় কংগ্রেস ও বাম দলগুলি পরস্পরের হাত ধরাধরি শুরু করেছে বলে তাঁদের অভিমত।

অন্য বিষয়গুলি:

Bharat Jodo Yatra TMC Sougata Roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE