মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ঘিরে চাপানউতোর শুরু হল শাসক ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে। আগামী ২১ অগস্ট প্রস্তাবিত সভার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। জবাবে তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, সব কিছুতেই ভোটের অঙ্ক দেখে বিজেপি।
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময়ে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত থাকার কথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর মতো অনেকের। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘‘সাগরদিঘির উপনির্বাচনে পরাজয় এবং তার পরে ধারাবাহিক ভাবে সংখ্যালঘুরা দূরে সরে যাওয়ায় লোকসভা ভোটের আগে এই সভার আয়োজন করছে তৃণমূল।’’ বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘এই সভার আহ্বায়ক ইমাম সংগঠন। তাঁরাই মুখ্যমন্ত্রীকে ওই দিন উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এখানে রাজনীতি কোথায়?’’ তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি সবেতে রাজনৈতিক লাভ-ক্ষতির হিসেব কষে। সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু— সকলকেই ওরা শুধু ভোটের হিসেবে মাপে।’’ মন্ত্রীর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের সঙ্গে মত বিনিময় করেন। আমরা সব কিছুকে রাজনীতির প্রেক্ষিতে দেখি না।’’
মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে হারের পরে সংখ্যলঘু ভোট নিয়ে চিন্তায় পড়েছিল তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা ছাড়াও বেশ কিছু জায়গায় প্রতিরোধ এবং সংখ্যালঘুদের ভোটের প্রবণতার আভাস ভাবনায় রেখেছে তাদের। প্রকাশ্যে না বললেও দলের অন্দরে এই ‘ফাঁক’ মেরামতির চেষ্টাও শুরু হয়েছে। অন্য দিকে, তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে বিভিন্ন চেষ্টা হচ্ছে বিরোধীদের তরফেও। সূত্রের খবর, এই অবস্থায় সামগ্রিক সরকারি পরিকল্পনা তো আছেই। ফের ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের ভাতাবৃদ্ধির কথাও শাসক শিবিরে আলোচিত হয়েছে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে ইমামদের উদ্দেশে শুভেন্দু এ দিন বলেন, ‘‘ওই সম্মেলনে উপস্থিত নেতা বা শাসক দলে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের কাছে বেকারত্বের সমস্যা তুলে ধরুন। রাজ্যের ৫০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে ৭০% সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। জানতে চান, তাঁদের ফিরিয়ে আনতে কোনও পদক্ষেপ রাজ্য সরকার করছে কি না।’’ তৃণমূল সরকারের সংখ্যালঘু উন্নয়নের দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে আইএসএফ-ও। তাদের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীর প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী ফিরহাদ জানান, ফুরফুরা শরিফ উন্নয়ন পর্ষদের জন্য ৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তবে পর্ষদের স্থায়ী দফতরের জন্য জমি খোঁজা হচ্ছে। নওসাদের বক্তব্য, ‘‘আমি ফুরফুরার বাসিন্দা ও ভোটার। এত দিন খুঁজেই পাইনি ফুরফুরা উন্নয়ন পর্ষদের দফতর কোথায়! জানতে পারলাম, মহকুমা শাসকের দফতরের একটা অংশকে পর্ষদের দফতর হিসেবে ব্যবহার করা হয়। উন্নয়নের গতি এই রকমই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy