Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

আঁচ গ্রামাঞ্চলে, মানছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ

চিকিৎসক-ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুরক্ষায় ব্যর্থতা ও তদন্তে সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই সঙ্গেই প্রমাণ লোপাটের মতো গুরুতর অভিযোগে সন্দেহ দানা বেঁধেছে নানা মহলে।

Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রবিশঙ্কর দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫২
Share: Save:

আর জি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রভাব শুধু শহরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ নয় বলেই মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মতে, ‘রাত দখল’ বা মিছিল-প্রতিবাদ রাজ্যের জেলাগুলিতেও তীব্র। রাজনৈতিক কর্মসূচিকে বাদ দিলেও সাধারণ মানুষের সেই প্রতিক্রিয়ার ‘আঁচ’ ভাবাচ্ছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে।

চিকিৎসক-ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুরক্ষায় ব্যর্থতা ও তদন্তে সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই সঙ্গেই প্রমাণ লোপাটের মতো গুরুতর অভিযোগে সন্দেহ দানা বেঁধেছে নানা মহলে। এই অবস্থায় ‘বিচার চেয়ে’ পথে নামলেও শাসক পক্ষের তরফে সে সব খণ্ডনে করা পদক্ষেপ বিশ্বাসযোগ্য হয়নি বলেও মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। সে ক্ষেত্রে সাধারণ ভাবে সরকারি হাসপাতাল পরিচালনায় যে অব্যবস্থা প্রকট হয়েছে, তা নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষকে যথার্থ বলেই মনে করছেন তাঁরা। এবং জবাবদিহির ‘দায়’ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ক্ষমতায় আসা শাসক দলেরই বলে
শাসক শিবিরের অন্দরের আলোচনায় উঠে আসছে।

দলের এই অংশ নাগরিক সমাজের প্রতিক্রিয়াকেই বেশি দুশ্চিন্তার বলে মনে করছে। এই অংশের মতে, শুধু শহরে নয়, রাজ্যের গ্রামাঞ্চলেও দলীয় বৃত্তের বাইরে থাকা মানুষের মধ্যে এই ঘটনা বড় প্রভাব ফেলেছে। নাগরিকের এই বিক্ষোভ সরাসরি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে, এমন মনে না-করলেও বহু প্রশ্নের জবাব দেওয়ার দায় তাদের বলেও মানছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে প্রতিবাদীদের আক্রমণ করে দলের একাধিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি ক্ষতি করেছেন বলেও মনে করেন শীর্ষ নেতৃত্বের এই অংশ। তাঁদের মতে, এই অসন্তোষের জবাব দিতে গিয়ে ওই নেতারা দলকেই এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদীদের প্রতিপক্ষ করে ফেলেছেন। দলের এক নেতার মন্তব্য, ‘‘হাসপাতালে ভাঙচুর, প্রাক্তন অধ্যক্ষের বদলি থেকে বিশিষ্টদের পুরষ্কার ফেরানো পর্যন্ত কয়েক জনের কুকথা, ব্যঙ্গ, কটাক্ষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে গিয়েছে।’’ সেই কারণেই তাঁদের ‘বিচারের দাবি’ও আন্তরিক মনে হয়নি সাধারণ মানুষের।

এই পরিস্থিতিকে দলের একাংশ সিপিএম ও বিজেপির ‘চক্রান্ত’ বলেও চিহ্নিত করেছেন। প্রকাশ্যে তা নিয়ে জবাবও দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, ‘সিবিআইয়ের কাছে বিচারের দাবি’তে পথে নেমে বড় মিছিল, সভাও করেছেন শাসক দলের জনপ্রতিনিধি ও সাংগঠনিক পদাধিকারীরা। কয়েকটি জায়গায় সেই জমায়েতের চেহারা বড় হলেও তাতে আর জি কর-কাণ্ড স্তিমিত বলে ধরে নিতে নারাজ দলের অনেকেই। দক্ষিণবঙ্গের গ্রামীণ কেন্দ্রের এক তৃণমূল বিধায়কের কথায়, ‘‘প্রভাব আছে। তবে সবটা দলের বিরুদ্ধেই, এমন কথা বলা যায় না। ঘটনার ভয়াবহতায় মানুষের মধ্যে একটা আলোড়ন নিশ্চয়ই হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE