নিহতদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন শশীরা। ছবি: সংগৃহীত।
পদপিষ্ট হয়ে মৃতদের পরিবারের পাশে থাকবে তৃণমূল। আসানসোলে গিয়ে এই আশ্বাস দিলেন রাজ্যের ৪ মন্ত্রী-সহ তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। রবিবার দুপুরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল পৌঁছে গিয়েছিল আসানসোলে। এর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক মলয় ঘটক। যেখানে ৪ দিন আগেই বিজেপি নেত্রীর আয়োজিত কম্বল বিতরণ সভায় মৃত্যু হয়েছে এক কিশোরী সহ-দুই মহিলার। রবিবার যখন এই তিন পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন তৃণমূলের নেতা-বিধায়ক-মন্ত্রীরা। তখন বিজেপি নেতা জিতেন তিওয়ারি দাবি করলেন, বুধবারের ঘটনার নেপথ্যে শাসকদলের ষড়যন্ত্র থাকাও বিচিত্র নয়।
শনিবারই তৃণমূল জানিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল যাবে আসানসোলে। সেই মতো রবিবার দুপুরে রাজ্যের নারী এবং শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক, পর্যটনমন্ত্রী তথা আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এবং সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক পৌঁছে যান নিহতদের বাড়িতে। দলের বাকি সদস্যদের মধ্যে ছিলেন বিধায়ক বিবেক গুপ্ত এবং যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষও। নিহতদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন শশীরা। তাঁদের অভিযোগ শোনেন। একান্তে কথা বলে পরিবারের হাতে ফলের ঝুড়ি এবং একটি করে খামও তুলে দিতে দেখা যায় তাঁদের। সাংবাদিক বৈঠকে শশী জানান, দল থেকে এই সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলের রামকৃষ্ণডাঙায় পুরসভার প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্রের স্ত্রী তথা বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি আয়োজিত একটি কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতেই দুর্ঘটনা ঘটে। ওই সভায় হাজির ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সভা ছেড়ে যাওয়ার পরই কম্বল নেওয়ার হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। যাতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় অন্তত এক কিশোরী-সহ ৩ জনের। আহত হন আরও অন্তত ৬ জন। এঁরা আসানসোসল জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এক জন এখনও চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার পরেই শুভেন্দুর কর্মসূচি ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কিন্তু রবিবার জিতেন পাল্টা দোষারোপ করেছেন তৃণমূলকেই। তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় ৩ জন মারা গিয়েছে ঠিকই, তবে আরও অনেকেই মারা যেতে পারত। অথচ শুনছি, তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নাকি বলে বেড়াচ্ছেন, ‘হাম লোগো কো আচ্ছা মুদ্দা মিল গয়া’ বলুন তো, এটা কি ‘মুদ্দা’?’’
এ ব্যাপারে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলে জিতেন্দ্র জানতে চেয়েছেন, ‘‘পুলিশ যে এত তৎপরতা দেখাচ্ছে, তারা বরং একটা তালিকা প্রকাশ করুক সেদিন কাদের কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে মোতায়েন করা হয়েছিল। তারা কোথায় ছিল? প্রয়োজনে তাদের মোবাইল ট্র্যাকিং করুক। তারা সে দিন ওই অনুষ্ঠানে ছিল না কি, অন্য কোথাও চলে গিয়েছিল, তা-ও দেখুক। সে ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের কোন নেতার কথায় চলে গিয়েছিল, তারও তদন্ত হওয়া উচিত।’’
জিতেন্দ্রর অভিযোগ, ‘‘আমাদের এই কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানের আগে তৃণমূল কংগ্রেস একটা হাই লেভেলের বৈঠক করেছিল সেই মিটিংয়ে কী আলোচনা হয়েছিল তা তদন্ত করে দেখা হোক। এর আগে এমন অনেক অনুষ্ঠান হয়েছে এ ধরনের ঘটনা তো হয়নি। হয় এটা দুর্ঘটনা অথবা তৃণমূলের ষড়যন্ত্র। তবে যে ভাবে তৃণমূল এখন সক্রিয় হয়ে উঠেছে, তাতে মনে হচ্ছে ঘটনাটি তৃণমূলের ষড়যন্ত্রই।’’ এই প্রশ্নের উত্তরে বাবুলের উত্তর, ‘‘এমন নীচ কথার প্রতিক্রিয়া দেওয়ার কোনও যুক্তি পাচ্ছি না।’’
পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় আসানসোলে মোমবাতি মিছিল করে প্রতিবাদ জানিয়েছে তৃণমূল। জিতেনের দাবি, তিনি খবর পেয়েছেন, বিভিন্ন ব্লকে ৭ দিন আগেই বলে দেওয়া হয়েছিল মোমবাতি মিছিল করার কথা। জিতেন বলেন, ‘‘ওরা কী করে জানল, এ ধরনের ঘটনা ঘটতে চলেছে!’’
সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘ষড়যন্ত্র যেটা বলছেন, সেটা ঠিকই বলছেন জিতেন। তবে ওই ষড়যন্ত্র বিরোধী দলনেতার সঙ্গে পরামর্শ করে। পরামর্শ হয়েছিল, বিনা অনুমতিতে সভা হবে। পুলিশ লাঠি চালাবে। তাতে কেউ যদি মারা যান, অভিযোগের তির বাংলার সরকারের দিকে যাবে। তখন রাজ্যে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি বলে শুভেন্দু অধিকারী কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেনন। আর আসানসোল আসেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy