প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
তৃণমূল করার ‘অপরাধে’ এক মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানোর অভিযোগ উঠল নন্দীগ্রামে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে এ বার নন্দীগ্রামে প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছে তৃণমূল। রবিবার আট জনের ওই প্রতিনিধি দল নন্দীগ্রাম যাবে বলে জানানো হয়েছে। প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা নির্যাতিতার সঙ্গে দেখাও করবেন।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। দোষীদের শাস্তির দাবিতে পথে নেমেছেন চিকিৎসকেরা। পা মিলিয়েছেন সাধারণ মানুষও। এই আবহে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে এক মহিলাকে নগ্ন করে হাঁটানোর অভিযোগ উঠেছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, নন্দীগ্রামের ১ নম্বর ব্লকের গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চাননতলা এলাকায় এক বধূকে রাস্তায় নগ্ন করে হাঁটানো হয়েছে। এলাকায় ওই মহিলা তৃণমূলকর্মী বলেই পরিচিত। শুক্রবার রাতে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় কয়েক জন দুষ্কৃতী। ওই মহিলাকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। তার পর তাঁকে নগ্ন করে প্রায় ৩০০ মিটার পথ হাঁটতে বাধ্য করা হয়। দুষ্কৃতী দলে ২০ থেকে ৩০ জন ছিল বলেও দাবি তৃণমূলের। বর্তমানে ওই বধূ নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর বিজেপির বুথ সভাপতি তাপস দাসকে গ্রেফতার করেছে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে বাকি অভিযুক্তদের সন্ধানেও তল্লাশি শুরু হয়েছে।
নির্যাতিতার অভিযোগ, ‘‘আমি রাতে ছেলে ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে ছিলাম। মোবাইলে স্বামীর সঙ্গে কথা বলছিলাম। আচমকাই দেখি জানালার কাছে এক জন দাঁড়িয়ে আছে। আমি চিৎকার করতেই প্রায় ৩০-৪০ জন আমার দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে আমাকে টেনে নিয়ে যায় গ্রামের ভেতরে। সেখানে আমাকে বিবস্ত্র করে প্রচুর মারধর করতে থাকে।’’
কেন হামলা চালানো হয়েছে, তা নিয়ে ওই মহিলা দাবি করেছেন, ‘‘আমরা এক সময় বিজেপিতে ছিলাম। লোকসভা ভোটের আগে আমরা তৃণমূলে যোগ দিই। আমাকে অনেক বার বিজেপিতে ফিরে যেতে বলা হয়। কিন্তু সেই অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। সেই কারণে দিন কয়েক আগে আমাকে মারধর করা হয়। প্রকাশ্যে গ্রামের মধ্যে আমার শ্লীলতাহানি করে। এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করি। এ বার অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্যই ছেলে ও মেয়ের সামনেই আমাকে নগ্ন করে গ্রামে টেনে নিয়ে যায়।’’
নন্দীগ্রাম ব্লক তৃণমূলের নেতা শেখ সুফিয়ানের অভিযোগ, ‘‘ওই মহিলার অপরাধ ছিল তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ওঁদের পুনরায় দলে ফেরার জন্য চাপ দিচ্ছিল। সেই দাবি না মানায় বিবস্ত্র করে নৃশংস ভাবে মারধর করা হয়েছে। খোদ বিরোধী দলনেতার এলাকায় তাঁরই মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে নন্দীগ্রামে।
যদিও পদ্মশিবির এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের মতে, সম্পূর্ণ পারিবারিক বিবাদকে রাজনৈতিক রং লাগানোর চেষ্টা চলছে। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের বিজেপির আহ্বায়ক অভিজিৎ মাইতির দাবি, ‘‘মহিলার উপরে যে হামলা হয়েছে আমরা তার নিন্দা করছি। এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ হয়েছে। প্রশাসন আইন মেনে ব্যবস্থা নেবে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ঘটনায় বিজেপির নাম জড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।”
নন্দীগ্রামের এই ঘটনাকে সামনে রেখে প্রতিবাদে নামছে তৃণমূল। রবিবার নন্দীগ্রামে তৃণমূলের যে প্রতিনিধি দল যাচ্ছে, সেই দলে রয়েছেন শিউলি সাহা, বিরবাহা হাঁসদা, সায়নী ঘোষ, উত্তরা সিংহ, মমতাবালা ঠাকুর, দোলা সেন, দেবাংশু ভট্টাচার্য এবং কুণাল ঘোষ। তৃণমূল জানিয়েছে, রবিবার আহত মহিলাকে দেখতে হাসপাতালেও যাবেন কুণালরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy