নবজোয়ার যাত্রায় ভোটের সময়ে গন্ডগোল। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
উত্তরবঙ্গের পরে এ বার দক্ষিণবঙ্গের বহরমপুরেও পঞ্চায়েতে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ভোটাভুটিকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিল। রবিবার সন্ধ্যায় বহরমপুর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধিবেশন স্থলে ভোটের শুরু থেকেই একাধিক বুথের দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে মারপিট, চেয়ার ভাঙচুর, ব্যালট বাক্স ভাঙার চেষ্টার ঘটনা ঘটে। ছাপ্পা ভোটেরও অভিযোগ উঠে। ভোটার না হয়েও ভোট দেওয়ার অভিযোগকে ঘিরে গন্ডগোল শুরু হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার সময় জেলা সভাপতি শাওনি সিংহ রায় অধিবেশন স্থলে থাকলেও এই পর্বে অভিষেক তাঁবুতে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সুবিমল পালের নেতৃত্বে বিরাট পুলিশ বাহিনী ওই অধিবেশন স্থলে ঢুকে পরিস্থিতি সামাল দেন। তার পরে সারা ক্ষণই পুলিশকে পরিস্থিতি সামাল দিতে দেখা গিয়েছে। যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি শাওনি সিংহ রায় বলেন, “দু’-একটি ছোট ও বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া শান্তিতেই ভোটাভুটি হয়েছে।” একটু রাতে অভিষেক বাইরে বেরিয়ে এসে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। পাশাপাশি অধিবেশন মঞ্চে উঠে কে বা কারা ভোট দিতে পারেননি তা জানতে চান। পরে মঞ্চের পাশেই ভোটাভুটির ব্যবস্থা হয়। ভোট হলে তাঁরা ভোট দিতে পেরেছে কি না সেটাও খোঁজ নেন অভিষেক।
এ দিন প্রথমে ডোমকলের রায়পুর এবং মধুরকুল অঞ্চলের বুথে অন্যের ভোট দেওয়ার অভিযোগকে ঘিরে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। পরে রেজিনগর বিধানসভা এলাকার বেলডাঙা ২ ব্লকের রামপাড়া ২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতাদের মধ্যে কিল-ঘুষি, চড়, মারামারি, চেয়ার ছোড়াছুড়ি হয়েছে। সেই সময় কিছুটা দূরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। বেলডাঙ্গার ২ ব্লক পূর্বের আন্দুলবেড়িয়ার ভোটাভুটিতে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগকে কেন্দ্র করে চেয়ার ছোড়াছুড়ির পাশাপাশি ব্যালট বাক্স ভাঙার চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। রাতে বেলডাঙার মীর্জাপুর অঞ্চল ভোটেও ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠে। অঞ্চল সভাপতি সাদেক আলির অভিযোগ, ‘‘বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীর অনুগামীরা, যাঁরা ভোটার নন, তাঁরাই ব্যাজ ছিনতাই করে নিয়ে ভোট দিয়েছেন।’’ ব্লক তৃণমূল সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, “বিধায়ক ক্যাম্প থেকে ব্যাজ চুরি করে একশো লোক ঢুকিয়েছে। তাই কর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।” যদিও রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী বলেন, “ওরা ব্যাজ চুরির প্রমাণ দিক। বরং ওরাই শনিবার রাতে ভোটার তালিকা পরিবর্তন করে নিজের লোকেদের নাম ঢুকিয়েছে।”
বেলডাঙা ১ ব্লকের ভাবতা ২ অঞ্চলের বুথে সেখানকার জেলা পরিষদ সদস্য ফতেমা বিবি ও তার অনুগামীদের সঙ্গে গন্ডগোল বাধে। সেখানেও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর হয়েছে। বেলডাঙ্গার আন্দুলবেড়িয়ার ভোটেও কারচুপির অভিযোগ তুলেছে দলের একাংশ। বেলডাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, “বেলডাঙ্গা উত্তর ব্লকের সভাপতি বনোতোষ ঘোষের নেতৃত্বে প্রকৃত ভোটারদের নাম বাদ দিয়ে অন্য ভোটারদের দিয়ে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আমরা ফের নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।” বেলডাঙা উত্তরের সভাপতি বনতোষ ঘোষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ওরা ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy