চণ্ডীতলা শিল্পতালুকে এ ভাবেই পোঁতা হয়েছিল তৃণমূলের পতাকা। ছবি: দীপঙ্কর দে।
মুখ্যমন্ত্রীর নীতি মেনে নিজেরাই জমি কিনে চণ্ডীতলা শিল্পতালুকে কারখানা গড়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এলাকার তৃণমূল নেতাদের বিক্ষোভে সেই কারখানার কাজও বন্ধ করে দিতে হল একটি বহুজাতিক ঠান্ডা পানীয় এবং পোশাক বিক্রেতা সংস্থাকে।
তৃণমূলের বিক্ষোভকারীদের দাবি, ওই দু’টি কারখানায় তাদের লোককে বহাল করতে হবে। কিন্তু দু’টি সংস্থাই এই দাবি মানতে রাজি হয়নি। এর জেরে মঙ্গলবার সকাল ন’টা নাগাদ এলাকার তৃণমূল নেতা এবং কাপাসহাড়িয়ার অঞ্চল সভাপতি রবীন খাঁড়া জনা ষাটেক লোক নিয়ে কারখানা দু’টির সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। সামনের রাস্তায় লাগিয়ে দেওয়া হয় তৃণমূলের পতাকা। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা কারখানা দু’টির ভিতরে ঢুকে কাজ বন্ধেরও ‘নির্দেশ’ দেন। এতে ভয় পেয়ে কর্মীরা কাজ বন্ধ করে দেন। কর্তৃপক্ষের লোকজনকেও কারখানায় ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হুমকির মুখে পড়ে অনেকেই বাড়ি ফিরে যান।
খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যায় চণ্ডীতলা থানার পুলিশ। তারা বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। তৃণমূলের পতাকাও খুলে ফেলা হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনা হয় তৃণমূল নেতাদের। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল নেতারা দাবি করেন, তাঁদের লোককেই কারখানায় নিয়োগ করতে হবে। কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, সবেমাত্র ওই এলাকায় কাজ শুরু করা হয়েছে। পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এর পরেও এ দিন অবশ্য কারখানা দু’টির কাজ চালু করা যায়নি।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন শিল্প গড়তে জোরালো বার্তা দিতে শুরু করেছেন, তখন এ দিন চণ্ডীতলায় এমন ঘটনায় বিব্রত হুগলি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী এবং জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ আছে, শিল্পপতিদের কাজে বাধা দেওয়া যাবে না। দলের সঙ্গে কথা না বলে যাঁরা ওখানে গিয়েছিলেন, তাঁদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেলাশাসক সঞ্জয় বনশলও
বলেন, ‘‘ওখানে ঠিক কী ঘটেছিল, সেই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’’
দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে লাগোয়া কাপাসহাড়িয়ার পাঁচঘড়ায় কয়েক একর জমি কিনে বিভিন্ন শিল্পসংস্থা কারখানা তৈরি করছে। বেশ কয়েকটি কারখানায় কাজ সবে শুরুও হয়েছে। উৎপাদন এবং প্যাকেজিংয়ের কাজ শুরু করেছে একটি বহুজাতিক ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুতকারী সংস্থা। পাশে একটি বহুজাতিক পোশাক প্রস্তুতকারী সংস্থাও কারখানা এবং গুদাম করেছে। এই দু’টি সংস্থা মিলিয়ে প্রায় ১৬০ জন কর্মী কাজ করছেন। এই কর্মীদের বেশির ভাগই বাইরে থেকে আসছেন বলে দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীদের নেতা রবীন খাঁড়া। তিনি বলেন, ‘‘কারখানার জন্যই স্থানীয় মানুষ জমি বেচেছিলেন। তাঁদের নিয়োগ করা হবে বলে প্রাথমিক ভাবে জানানোও হয়েছিল। সেই দাবি নিয়েই আমরা বিক্ষোভ দেখিয়েছি। তবে আলোচনার পরে বিষয়টি মিটে গিয়েছে।’’
এ ব্যাপারে কী বলছেন ওই দু’টি সংস্থার কর্তারা? ঠান্ডা পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থাটির এক কর্তা আমন অগ্রবাল বলেন, ‘‘এই বিষয়ে এখনই প্রতিক্রিয়া জানাতে পারছি না। পরে সবিস্তার জানাব।’’ অন্য সংস্থাটির সাইট ম্যানেজার সঞ্জীব শুক্ল বলেছেন, ‘‘আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এর বেশি কিছু বলব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy