Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Monsoon

Aman Rice: আমন রোয়ার লক্ষ্যপূরণে চিন্তায় ৫ জেলা

গত খরিফ মরসুমে রাজ্যে আউশ ও আমন চাষ হয়েছিল প্রায় ৪১ লক্ষ হেক্টর জমিতে। এ বার লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৪৩ লক্ষ হেক্টর করেছে কৃষি দফতর।

সেচের জলের অপ্রতুলতায় গোটা পাঁচেক জেলার উঁচু জমিতে ধান রোপণ সম্পূর্ণ হবে না।

সেচের জলের অপ্রতুলতায় গোটা পাঁচেক জেলার উঁচু জমিতে ধান রোপণ সম্পূর্ণ হবে না। ফাইল চিত্র।

সৌমেন দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২২ ০৬:৪৭
Share: Save:

শ্রাবণের মধ্যে আমন ধান রোয়ার কাজ সাধারণত শেষ করে ফেলেন চাষিরা। এ বার ভাদ্র এসে গেলেও, রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় তা শেষ হয়নি। নিম্নচাপে গত কয়েক দিন বৃষ্টি নেমেছে। তবু কৃষি আধিকারিকদের আশঙ্কা, বৃষ্টি ও সেচের জলের অপ্রতুলতায় গোটা পাঁচেক জেলার উঁচু জমিতে ধান রোপণ সম্পূর্ণ হবে না। ফলে, বেশ কয়েক লক্ষ হেক্টর জমিতে চাষ না হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। দেরিতে রোপণের জন্য ধানের মান ও ফলন নিয়েও চিন্তায় তাঁরা।

রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শুরুতে যে পরিস্থিতি হয়েছিল, তার চেয়ে অবস্থার উন্নতি হয়েছে। কয়েকটি জেলায় ধান রোপণের সমস্যা রয়েছে। নিম্নচাপের সাহায্যে বাকি জমিতে চাষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি। তা না হলে বিকল্প চাষের ভাবনা রয়েছে।’’

গত খরিফ মরসুমে রাজ্যে আউশ ও আমন চাষ হয়েছিল প্রায় ৪১ লক্ষ হেক্টর জমিতে। এ বার লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৪৩ লক্ষ হেক্টর করেছে কৃষি দফতর। গত বছর যেখানে অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রায় ৩৭ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান রোপণ হয়ে গিয়েছিল, সেখানে এ বছর হয়েছে ২৬ লক্ষ হেক্টরে। খরিফ মরসুমে গত বছর এক কোটি ৭০ লক্ষ টন ধান উৎপাদন হয়েছিল। এ বার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষি দফতর। দফতর সূত্রের খবর, কী ভাবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে, বিকল্প ভাবনা কী হতে পারে, সে নিয়ে জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে বৈঠক করছেন কৃষিমন্ত্রী, কৃষি সচিব ওঙ্কার সিংহ মিনা-সহ শীর্ষ কর্তারা।

কৃষি দফতরের দাবি, লক্ষ্যপূরণে ‘মাথাব্যথা’ হয়েছে বীরভূম, দক্ষিণ দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও পুরুলিয়া। পুরুলিয়ার কৃষি কর্তারা জানান, জেলায় ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশে চাষ হয়েছে। গত বছর সেখানে প্রায় ৯২% চাষ হয়েছিল। এখন বৃষ্টি হলেও ৫৫% উঁচু জমিতে চাষ সম্ভব নয় বলে তাঁদের দাবি। বীরভূমের উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) একেএম মিনাজুল আহসানের বক্তব্য, “মাত্র ৪৫% জমিতে চাষ হয়েছে। বৃষ্টি কম, ময়ূরাক্ষীতেও জল নেই। কী ভাবে সব জমিতে চাষ হবে, বুঝতে পারছি না।’’

মুর্শিদাবাদে প্রায় ৩৮ শতাংশ, মালদহে প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতে এখনও চাষ হয়নি বলে দফতর সূত্রের খবর। মালদহের উপ-কৃষি অধিকর্তা সৌমেন্দ্রনাথ দাস বলেন, ‘‘সেচের ব্যবস্থা না থাকায় কয়েকটি ব্লকে সমস্যা হয়েছে।’’ দক্ষিণ দিনাজপুরের উপ-কৃষি অধিকর্তা শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, “জেলায় এক লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে এক লক্ষ ৪৬ হাজার হেক্টরে চাষ হয়েছে। জুলাইয়ে ছ’সাত দিনে এক লক্ষ ৩০ হাজার হেক্টরে চাষ হয়েছিল। অগস্টে চাষ এগোয়নি।’’ তবে রাজ্যের আর এক কৃষিপ্রধান জেলা পূর্ব বর্ধমান লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে বলে আধিকারিকেরা জানান।

পুরুলিয়ার চাষি লক্ষ্মীন্দর হাঁসদা, দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন বারুই, পূর্ব বর্ধমানের ফারুক শেখদের দাবি, “উঁচু জমিতে আর চাষ করা যাবে না। জোর করে চাষ করলেও, বীজের ২৮ দিনের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় ধানের মান ও ফলন খারাপ হবে। চাষের খরচও বেড়ে যাবে। তার চেয়ে রবি মরসুমের চাষ এগিয়ে আনলে ভাল হবে।’’ নানা জেলার আধিকারিকেরাও কৃষি সচিবের সঙ্গে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে তেমন দাবি করেছেন বলে দফতর সূত্রে জানা যায়। কৃষিমন্ত্রী বলেন, “যে সব জেলায় খরিফ চাষে সমস্যা হবে, সেখানে ডালশস্য ও সর্ষে চাষে জোর দেওয়া হবে।’’ রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা তথা পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার অবশ্য বলেন, “সমস্যা কাটিয়ে উঠেছি। সেচের বিকল্প ব্যবস্থা, ধান রোপণ নিয়ে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ১২ অগস্ট থেকে ভাল বৃষ্টি হয়েছে। ফলন ভাল হবে।’’(সহ-প্রতিবেদন: প্রশান্ত পাল)

অন্য বিষয়গুলি:

Monsoon agriculture
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy