Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Dilip Ghosh

Dilip Ghosh: কাছে-কাছে রইলেন, পাশে-পাশে থাকলেন, মুখবন্ধের চিঠি নিয়ে নড্ডা-দিলীপ কথা হল?

তিন দিনের সফরে দিলীপের সঙ্গে আলাদা করে কোনও বৈঠক হয়নি নড্ডার। তবে অন্য কথার ফাঁকে কি মুখবন্ধের চিঠির প্রসঙ্গ একেবারেই ওঠেনি?

কী কথা হল? বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দরে দিলীপ ও নড্ডা।

কী কথা হল? বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দরে দিলীপ ও নড্ডা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২২ ১৪:২৫
Share: Save:

কলকাতা বিমানবন্দরে মঙ্গলবার স্বাগত জানানো থেকে বৃহস্পতিবার বিদায় জানানো পর্যন্ত জেপি নড্ডা এবং দিলীপ ঘোষ কাছে-কাছে, পাশে-পাশেই রইলেন। কিন্তু দু’জনের মধ্যে সেই বহু আলোচিত চিঠি নিয়ে আলোচনা হল না। রাজনৈতিক মহলের অনেক কৌতূহল থাকলেও শুক্রবার বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, সর্বভারতীয় সভাপতি এবং সহ-সভাপতির মধ্যে আলাদা করে কোনও বৈঠক হয়নি নড্ডার এই সফরে। তবে অন্য কথার ফাঁকে কি একটু হলেও ওঠেনি দিলীপকে দেওয়া মুখবন্ধের চিঠির প্রসঙ্গ? স্বয়ং দিলীপের সংক্ষিপ্ত উত্তর ‘না’।

গত ৩১ মে, মঙ্গলবার দিলীপকে চিঠি দিয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নড্ডা নিজে সে চিঠি লেখেননি। লিখিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহকে দিয়ে। চিঠিতে দিলীপকে জানানো হয়, ‘আপনার বেশ কিছু বিবৃতি এবং ক্ষোভ প্রকাশ-করা মন্তব্যে রাজ্য নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ হয়েছেন। একই সঙ্গে বিড়ম্বনায় পড়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও।’ পাশাপাশিই বলা হয়, ‘আগে অনেক বার আপনাকে সতর্ক করা হয়েছে। কোনও লাভ হয়নি। আপনার মন্তব্যে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। আপাতত সংবাদমাধ্যমে আপনি মুখ খুলতে পারবেন না।’

আগে যে তাঁকে অনেকবার সতর্ক করা হয়েছে, তা দিলীপও স্বীকার করেন। কোনও কোনও মন্তব্যের জন্য স্বয়ং নড্ডা তাঁকে ধমক দিয়েছেন বলেও ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছেন। কিন্তু তার পরেও দিলীপ থামেননি। চিঠি পাওয়ার পরেও মুখে কুলুপ আঁটেননি। তবে ‘দলবিরোধী’ বলা হতে পারে, এমন সমালোচনা তাঁর মুখে চিঠি পাওয়ার পর শোনা যায়নি।

দিলীপকে চিঠি দেওয়ার ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় নড্ডার পশ্চিমবঙ্গ সফর নিয়ে তাই কৌতূহল ছিল গেরুয়া শিবিরেও। অনেকে মনে করেছিলেন, ঘোষিত কর্মসূচির ফাঁকেই কোনও সময় দিলীপের সঙ্গে কথা বলবেন নড্ডা। দিলীপ-ঘনিষ্ঠরাও ভেবেছিলেন কথা হতে পারে। আর সেখানে দলের চিঠি তাঁর কাছে আসার আগেই সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া নিয়ে নালিশ জানাতে পারেন দিলীপ। দলের ‘অপছন্দ’ হয়েছে, এমন বিভিন্ন মন্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিতে পারেন। কিন্তু সেই সুযোগই তৈরি হয়নি।

বাংলার বাইরে তাঁকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সে কাজে গত রবিবার সিকিমে গিয়েছিলেন দিলীপ। নড্ডার সফরের আগে তাঁর ভিন্‌রাজ্যে চলে যাওয়া নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়। অনেকে এমনটাও ভেবেছিলেন যে, চিঠি পাওয়া নিয়ে ‘অভিমানী’ দিলীপ সর্বভারতীয় সভাপতির কর্মসূচি থেকে দূরত্ব রাখতে পারেন। তবে দিলীপের মনে যে তেমন কোনও ভাবনা ছিল না, সেটা তিনি নিজেই জানিয়ে দেন। নড্ডা কলকাতায় আসার বেশ কয়েক ঘণ্টা আগেই সিকিম থেকে ফিরে আসেন দিলীপ। নির্দিষ্ট সময়ে নড্ডাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরেও পৌঁছে যান।

বিজেপি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কলকাতায় পৌঁছেই নিউ টাউনের হোটেলে আড্ডার পরিবেশ তৈরি করেন নড্ডা। সেখানে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি দিলীপও হাজির ছিলেন। সেখানে বুধ ও বৃহস্পতিবারে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে দলের প্রস্তুতির খোঁজ নেন নড্ডা। বুধবার সকালে হুগলির চুঁচুড়া ও চন্দননগরে গিয়েছিলেন নড্ডা। সেখানেও সঙ্গী হন দিলীপ। পরে কলকাতায় জাতীয় গ্রন্থাগারে দলের কার্যকারিণী বৈঠকে মঞ্চেই ছিলেন দিলীপ। সেখানে দলের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার দায়িত্বও ছিল প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির উপরে। বৃহস্পতিবার সকালেও নড্ডার সঙ্গে বেলুড় মঠে যান। পরে বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক, মণ্ডল সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক-সহ সব কর্মসূচিতেই ছিলেন দিলীপ। তবে নড্ডার পাশে নয়। দলের রীতি মেনে সব কর্মসূচিতেই নড্ডার দু’পাশে ছিলেন সুকান্ত ও শুভেন্দু।

দু’জনকে পাশাপাশি আসনে দেখা গিয়েছে নড্ডার সফরের একেবার শেষবেলায়। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দরে দু’জনকে একান্তে কথা বলতেও দেখা যায়। তবে সেখানেও নাকি মুখবন্ধের চিঠি নিয়ে কোনও কথাই ওঠেনি। দু’জনের কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, বিমানে ওঠার আগে দিলীপকে নড্ডা বলেন, ‘‘আবার কবে দেখা হবে?’’ দিলীপ উত্তরে বলেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়িই দিল্লি যাব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dilip Ghosh JP Nadda BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy