Who is Kshama Bindu and her journey towards Sologamy dgtl
Kshama Bindu
Kshama Bindu: নিজেই নিজেকে বিয়ে করে যাচ্ছেন মধুচন্দ্রিমায়! ক্ষমা বিন্দু আসলে কে?
নিজেকে বিয়ে করে আলোড়ন ফেললেন তিনি। বয়স মাত্র ২৪। তাঁর আসল পরিচয় কী?
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২২ ১২:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
নাম ক্ষমা বিন্দু। কিন্তু এটি আসল নাম নয়। ২৪ বছরের এক তরুণী। গুজরাতের বডোদরার বাসিন্দা। তিনিই সম্ভবত ভারতের প্রথম মহিলা যিনি ‘নিজগামিতা’ বা সোলোগ্যামি–র পথে হেঁটেছেন। কারণ তিনি পৃথিবীতে সব থেকে ভালবাসেন নিজেকে। হয়তো অনেকেই বাসে! কিন্তু এই সাহস দেখানোর কলিজা পেয়েছেন এক মাত্র ক্ষমা।
০২২০
বডোদরার মহারাজা সায়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিদ্যায় স্নাতক হন ক্ষমা। পড়াশোনার পাশাপাশি মডেল হিসেবেও কাজ করতেন তিনি।
০৩২০
পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ইচ্ছে হয় চাকরি করবেন। সেই মতো এক বেসরকারি সংস্থাতে প্রবেশ। তবে মডেলিংয়ের কাজ বন্ধ করেননি তিনি। তাঁর আসল নাম সৌম্যসরিতা দুবে।
০৪২০
চাকরি আর মডেলিংয়ের পাশাপাশি আরও একটি কাজ নিশ্চুপ ভাবে করে চলেছিলেন তিনি। দেশে কোনও মহিলা এর আগে নিজেকে বিয়ে করেছেন কি না, তা নিয়ে নেটমাধ্যমে খোঁজ চালাচ্ছিলেন ক্ষমা। কিন্তু অনেক খুঁজেও এ রকম কাউকে তিনি খুঁজে পাননি।
০৫২০
ক্ষমা উভকামী। পুরুষ এবং নারী, উভয়ের প্রতিই তাঁর সমান আকর্ষণ। তবে অন্যের প্রেমে নয়, নিজেরই প্রেমে পড়ে যান ক্ষমা। যৌন এবং মানসিক আকর্ষণ অনুভব করেন নিজের প্রতিই।
০৬২০
ক্ষমা বুঝেছিলেন তিনিই হতে পারেন দেশের প্রথম মহিলা, যিনি নিজেই নিজেকে বিয়ে করছেন। অর্থাৎ, পথে প্রচুর বাধা আসতে পারে, এ-ও বুঝে গিয়েছিলেন।
০৭২০
তবে হাল ছাড়েননি ক্ষমা। রাতের পর রাত জেগে দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা বাবা এবং আমদাবাদে থাকা মা-কে রাজি করানোর চেষ্টা করে যান তিনি। প্রথমে রাজি না থাকলেও অবশেষে তাঁরা রাজি হন। অনেকটাই চাপমুক্ত হন তিনি।
০৮২০
এর পরের যাত্রাও খুব একটা সহজ ছিল না। বিয়ে করবেন বললে তো আর বিয়ে করা যায় না। বিয়ের সরঞ্জাম থেকে শুরু করে পুরোহিত, সব জোগাড় করতে কালঘাম ছোটে ক্ষমার। কারণ নিজেকে বিয়ে করবেন শুনেই নাক সিঁটকোচ্ছেন অনেকে। তবে হাল ছাড়েননি ক্ষমা। অবশেষে জোগাড় হয় পুরোহিতও।
০৯২০
বিয়ের তারিখ ঠিক হয় ১১ জুন। ঠিক করেন গুজরাতের গোত্রীর এক মন্দিরে বিয়ে করবেন নিজেকে। বিয়ে হবে বৈদিক আচার-অনুষ্ঠান মেনে। তবে তত দিনে তাঁর নিজেকে বিয়ে করতে চলার খবর রাষ্ট্র হয়েছে। কিছু বাহবা, কিছু ব্যক্তির বাঁকা নজর, রোষ— সব কিছুই পেতে শুরু করেন তিনি। এমনকি হিন্দুত্ববাদীদের কাছ থেকে হুমকিও আসে ক্ষমার কাছে।
১০২০
ক্ষমার নিজেকে বিয়ে করতে চলার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সংবাদ মাধ্যমে তাঁর উপর চড়াও হন বিজেপি নেত্রী সুনীতা শুক্ল। নেত্রী দাবি করেন, ক্ষমা যা করতে চলেছেন হিন্দু ধর্ম তার অনুমতি দেয় না।
১১২০
এই ধরনের বিয়ে হিন্দু ধর্মের বিরোধী এবং এই বিয়ে করলে হিন্দুদের জনসংখ্যা কমে যাবে বলেও তোপ দাগেন বিজেপি নেত্রী। কোনও মন্দিরে ক্ষমাকে বিয়ে করতে দেওয়া হবে না বলেও বিজেপি নেত্রী ফতোয়া জারি করেন। তবে ক্ষমা এর প্রত্যুত্তরে কিছু বলেননি।
১২২০
এর পর হঠাৎই বিয়ের দিন দু’দিন এগিয়ে ৮ জুনই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন ক্ষমা। কারণ? অতি কষ্টে জোগাড় করা পুরোহিতও জানিয়ে দেন যে, তিনি বিয়ে দিতে আসবেন না। সম্ভবত এর কারণ, হিন্দুত্ববাদীদের রোষের মুখে পড়ার ভয়।
১৩২০
তবে এতেও কিচ্ছু যায়-আসেনি। বাছাই করা কিছু বন্ধুর উপস্থিতিতে বুধবার সন্ধ্যায় নিজের সিঁথিতে সিঁদুরদান করেন ক্ষমা। ক্ষমা ইনস্টাগ্রামে গায়ে হলুদ এবং মেহেন্দি অনুষ্ঠান-সহ বিভিন্ন আচারের ছবি শেয়ার করেছেন।
১৪২০
ক্ষমার পরিবার এবং বন্ধুদেরকেও তাল মিলিয়ে আনন্দ করতে দেখা গিয়েছে এই সব ছবিতে। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, যজ্ঞের আগুনের চারপাশে ঘুরে নিজের সঙ্গেই সাত পাকে বাঁধা পড়ছেন ক্ষমা।
১৫২০
বিয়ে শেষে ক্ষমা জানান, কোনও বিতর্ক এড়াতেই তিনি বিয়ে এগিয়ে আনেন। বলেন, এই বিয়েতে বর এবং পুরোহিত ছাড়া বাকি সব কিছুই ছিল। নিয়ম অনুযায়ী, তিনি গণেশ এবং লক্ষ্মীর পূজা করে নিজের গলায় মালা পরান। এমনকি নিজের জন্য লেখা সাতটি ব্রতও পাঠ করেন। তাঁর দীর্ঘ দিনের স্বপ্নপূরণ হল বলেও জানিয়েছেন ক্ষমা।
১৬২০
বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমাতেও যাবেন ক্ষমা। নিজের সঙ্গেই। তিনি জানিয়েছেন, মধুচন্দ্রিমা যাপন করতে খুব শীঘ্রই দু’সপ্তাহের জন্য গোয়া যাচ্ছেন তিনি।
১৭২০
সমস্ত আচারবিধি মেনে নিজেকে বিয়ে করলেও তাঁর বিয়ে কোনও আইনি বৈধতা পাবে না। তাই আইনি জটিলতাও নেই। ভারতে এ রকম বিয়ে প্রথম হলেও বিদেশে কিন্তু এই বিয়ের চল গত কয়েক বছর ধরে দিব্যি হচ্ছে। ব্রাজিলের সুপারমডেল আদ্রিয়ানা লিমা ২০১৭ সালে নিজেকে বিয়ে করেন।
১৮২০
নিজেকে বিয়ে করতে চেয়ে এবং করে আলোড়ন ফেললেন তিনি। বয়স মাত্র ২৪।
১৯২০
এই আলোড়নে তৈরি হয়েছে স্ফুলিঙ্গও। জারি হয়েছে ফতোয়া। কিন্তু কোনও কিছু তোয়াক্কা না করে বুধবার নিজের সিঁথিতে সিঁদুর দিলেন তিনি।
২০২০
ভাঙলেন সমাজের সমস্ত প্রচলিত ধ্যানধারণাকে। যেন এক বিপ্লব আনলেন, তা-ও এত কম বয়সে। কিন্তু বিপ্লবের কোনও বয়স হয় কি!